বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
খুলনা ব্যুরো : বুধবার রাতে অস্ত্রধারীদের গুলিতে নিহত হয়েছে আওয়ামীলীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাৎ হোসেন মোল্যা (৬৫)। গুলিবিদ্ধ হয়েছে ৫ জন। গুলিবিদ্ধ আহতরা হচ্ছে লিয়াকত আলী খান (৬৭) ও তার ছেলে মোস্তফা খান (৩৮) এবং আজম তালুদকার (২৬), রুবেল (৩৫) ও বুলবুল (৩০)। এরা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। পুলিশ গুলিবিদ্ধ আজম তালুকদারকে গ্রেফতার করেছে। এ নিয়ে গত কয়েকদিনের ব্যবধানে খুলনায় ৭টি লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হল।
গুলিবিদ্ধ অপর প্রত্যক্ষদর্শী রুবেল মোল্লা জানান, হঠাৎ করেই পেছন দিক থেকে ৪/৫ জন এসে গুলি শুরু করে। গুলির শব্দে শাহাদাৎ মোল্লা তার শটগান বের করতে গেলে তার হাতে গুলি করে। এরপর আশেপাশের সবাইকে গুলি করে।
নিহত মোল্লা শাহাদাৎ হোসেন ঘের ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন। ধনাঢ্য ও প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ গ্রুপের সাথে তার দ্বন্দ্ব চলছিল। মোল্লা শাহাদাৎ হোসেনের চার ছেলের মধ্যে তিনজন বিদেশে থাকেন। অপরজন ঢাকায় ব্যবসা করেন। নগরীর মোল্লাবাড়ির মোড় ও রায়ের মহলে তার দু’টি বাড়ি আছে। তার লাইসেন্স-কৃত পিস্তল ও শটগান ছিল। দিনের অধিকাংশ সময় ও সন্ধ্যার পর তিনি রায়ের মহল এলাকায় থাকতেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নিহত শাহাদাত খুলনা বাইপাস সড়কের মোস্ত’র মোড়ের সন্নিকটে বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে হামিদনগর হাজি মো: মহসিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে সহকর্মীদের নিয়ে চা খাচ্ছিলেন। এসময় ৮-১০জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা তাকে লক্ষ্য করে পিছন দিক থেকে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এসময় তার কোমরে লাইসেন্স-কৃত পিস্তল ছিল। গাড়ীতে ছিল শটগান। তবুও তার প্রাণ রক্ষা সম্ভব হয়নি। এ সময় সন্ত্রাসীদের এলোপাথাড়ি গুলিতে আহত হন লিয়াকত আলী খান (৬৭) ও তার ছেলে মোস্তফা খান (৩৮) এবং আজম তালুদকার (২৬), রুবেল (৩৫) ও বুলবুল (৩০) নামে অপর পাঁচজন সহকর্মী। এর আগেও তাকে সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা প্রচেষ্টা চালিয়েছিল। এ ঘটনায় গোটা এলাকায় এখনও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। নিহত শাহাদাত মোল্লা ওই এলাকার মৃত গয়ের মোল্লার পুত্র। ৩ ভাইয়ের মধ্যে সে বড়। আহতরা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এর মধ্যে মোস্তফা খানের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতরা রায়ের মহল স্লুইসগেট এলাকার বাসিন্দা। আর নিহত শাহাদাৎ মোল্লা বর্তমানে ১৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য এবং প্রস্তাবিত সোনাডাঙ্গা থানা কমিটির মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক। তিনি এলাকার প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান ও ধনাঢ্য ব্যক্তি। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তাকে গুলি করা হয়েছে বলে এলাকাবাসী জানায় ।
নিহতের স্বজনরা জানান, প্রায় একবছর পূর্বে এলাকায় কয়েকজন সন্ত্রাসীকে অস্ত্রসহ ধরিয়ে দিয়েছিলেন মোল্লা শাহাদাৎ হোসেন। তারপর থেকে ওই গ্রুপের সাথে তার দ্বন্দ্ব হয়। এরপর থেকে তিনি সব সময় তার কাছে শটগান রাখতেন। এছাড়া এলাকায় মাদক বিক্রিতে তিনি বাধা দিতেন। এর ফলে সন্ত্রাসীরা তার ওপর এই হামলা করে।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার সুমন রঞ্জন সরকার জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হয়। তবে কি কারণে এবং কারা এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত পুলিশ তা প্রাথমিকভাবে বলতে পারেনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।