Inqilab Logo

সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪, ১০ আষাঢ় ১৪৩১, ১৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

হত্যার ১৮ দিন পর কলেজছাত্রের গলিত লাশ উদ্ধার

| প্রকাশের সময় : ১৫ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে: হত্যাকান্ডের দীর্ঘ ১৮ দিন ও হত্যাকারীর দেয়া স্বীকারোক্তির ৮দিন পর নরসিংদী সরকারী কলেজের ছাত্র মাহফুজ সরকারের খন্ডিত লাশ গত মঙ্গলবার রাতে উদ্ধার করা হয়েছে। নরসিংদী থানা পুলিশ রাত সাড়ে ৯ টায় বাদুয়ারচরের হাড়িধোয়া নদীতে ভাসমান অবস্থা থেকে ট্রাভেল বেগ ভর্তি খন্ডিত লাশ উদ্ধার করেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মাহফুজকে হত্যা করে তার দেহটিকে ৮টি খন্ড করা হয়েছে। মাথাদেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। ২টি পা ৪টি খন্ড করা হয়েছে, ২টি হাত দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। দেহের খন্ডগুলো পচে বিনষ্ট হয়ে গেছে। বুকের পাজর বেরিয়ে গেছে, অন্যান্য খন্ডগুলোর মাংস হাড় থেকে গলে খসে গেছে। তবে মাহফুজের মাথাটি খোজে পাওয়া যায়নি। হত্যাকারী রাবেয়া তার দেহটি বিচ্ছিন্ন করে অন্য জায়গায় ফেলে দিয়েছে।
জানা গেছে, গত ২৬ মে নরসিংদী জেলা শহরের বানিয়াছল মহল্লার (বৌয়াকুড় মোড়) আব্দুল মান্নান সরকারের পুত্র নরসিংদী সরকারী কলেজের বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মাহফুজ বাড়ী থেকে বেরিয়ে যায়। এরপর আর সে বাড়ী ফিরেনি। সেদিন বিকেলেই রাঙ্গামাটিয়া মহল্লার বিদেশ প্রবাসী আল মামুনের স্ত্রী রাবেয়া ইসলাম রাবু তাকে বাড়ীতে ডেকে নিয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে। পরে তাকে বাথরুমে নিয়ে রক্ত ধুয়ে তার দেহটিকে ৮টি খন্ড করে পলিথিন ব্যাগে মুড়িয়ে ডীপ ফ্রিজে রেখে দেয়। সে জানায় যে মাহফুজকে হত্যা করে তার লাশ বাঞ্ছারামপুরের মরিচাকান্দীতে যাবার পথে মেঘনার পানিতে ফেলে দিয়েছে। এরপর মাহফুজের পিতা ভাই ও আত্মীয় স্বজনরা মেঘনার পানিতে লাশ খোজাখুজি করে কোথাও পায়নি। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লোকমুখে জানা যায় যে, নরসিংদী শহর সংলগ্ন হাজীপুর ইউনিয়নের বাদুয়ারচর গ্রামের ঈদগাহ সংলগ্ন হাড়িধোয়া নদীতে লাশ ভর্তি একটি ট্রাভেল ব্যাগ ভাসছে। এ খবর পেয়ে মাহফুজের বড় ভাই এড. রাসেল পুলিশকে জানালে নরসিংদী থানা পুলিশ রাত সাড়ে ৯ টায় স্থানীয় ব্যবসায়ী সুমনের সহযোগিতায় হাড়িধোয়া নদী থেকে মাহফুজের লাশ উদ্ধার করে। পরে পুলিশ লাশের সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করে। হত্যাকারী রাবেয়া ইসলাম রাবু স্বীকারোক্তিতে মাহফুজের লাশ মেঘনা নদীতে ফেলার কথা বললেও বাদুয়ারচর এলাকার লোকজন জানিয়েছে গত ১ রমজান থেকেই লাশ ভর্তি ব্যাগটি ঘটনাস্থলে ভাসছিল। পুলিশ জানিয়েছে হত্যাকারী রাবেয়া লাশের মাথাটি অন্য কোন জায়গায় ফেলে দিয়েছে। ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিতে লাশ ফেলার সঠিক স্থান্ এবং মাথা কোথায় ফেলেছে তা সঠিক বলেনি। গতকাল বুধবার ময়নাতদন্ত শেষে পুলিশ মাহফুজের খন্ডিত দেহগুলো তার পরিবারের নিকট হস্তান্তর করে। বিকেলে বাদ আছর ব্রাহ্মন্দী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নিহত মাহফুজের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত। জানাজা শেষে তার লাশ গাবতলী গোরস্থানে দাফন করা হয়।
এব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নুরে আলম হোসাইন জানান, গত মঙ্গলবার রাতে নিহত মাহফুজের লাশ উদ্ধার করে তা পোস্টমর্টেম করে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। লাশের কিছু অংশ ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ