বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
স্টাফ রিপোর্টার : অতিবৃষ্টিতে পাহাড় ধ্বসে চার সেনা সদস্যসহ মোট ৩৯ জন নিহত হয়েছে। চট্রগ্রামের পাহাড় ধসে উদ্ধার কার্যক্রম,খাদ্য সহায়তা ও আশ্রয় দেয়ার সকল চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে পাহাড় ধ্বসের পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ তথ্য জানান। এখনো আরও দুইজন সেনা সদস্য নিখোঁজ রয়েছে বলেও জানান তিনি। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়িতে প্রবল বৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীর চার সদস্য শাহাদাত বরণ করেছেন। দুই জন সেনাসদস্য নিখোঁজ রয়েছেন।এই পর্যন্ত জেলা প্রশাসন ও আমাদের মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যতটুকু খবর পেয়েছি সে অনুযায়ী ৩৯ জন মারা গেছেন। আরও অনেকে হয়তো পাহাড়ের মাটিচাপায় রয়েছেন। মায়া বলেন, পাহাড়ে উদ্ধার কার্যক্রম চালাতে গিয়ে সেনাবাহিনীর যে চার সদস্য শহীদ হয়েছেন তারা হলেন- মেজর মাহফুজ, ক্যাপ্টেন তানভীর, কর্পোরাল আজিজ ও সৈনিক শাহীন। বাংলাদেশে এটা প্রথম নজির যে উদ্ধার কাজ করতে গিয়ে ৪ জন বীর সৈনিক শহীদ হয়েছেন।
মন্ত্রী বলেন, উদ্ধার কাজ অব্যাহত রয়েছে। জাতীয় বীর সৈনিক বন্ধুরা উদ্ধার কাজে এখন পর্যন্ত তৎপর রয়েছেন। এছাড়া ফায়ার ব্রিগেড, স্বেচ্ছাসেবক, দলীয় কর্মীরা উদ্ধার কাজে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন। সেনাবাহিনীর ৬ জন ছাড়া সেখানে বসবাসকারী আরও ৩৩ জন পাহাড় ধসে মারা গেছেন। সেখানে এখন গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ও মৃদু বাতাস হচ্ছে। তিনি বলেন, পাহাড়ি এলাকায় ইতোমধ্যে ১৮টি আশ্রয় কেন্দ্র খেলা হয়েছে। চার থেকে সাড়ে চার হাজার মানুষকে উদ্ধার করে আমরা আশ্রয় কেন্দ্রে রেখেছি। সেখানে খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা ঘরে ফিরে যাবে ততদিন তা অব্যাহত থাকবে। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের (পাহাড় ধ্বসে ক্ষতিগ্রস্ত) সাহায্যের জন্য ইতোমধ্যে আমরা ৫০০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ করেছি। ১২ লাখ টাকা ইতোমধ্যে তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের ব্যবস্থা করার জন্য দেওয়া হয়েছে। সংবাদ সম্মেলন মন্ত্রী বলেন, আপাতত প্রত্যেক নিহতের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে, আহতদের ১০ হাজার টাকা করে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের ৩০ কেজি করে চাল ও শুকনা খাবার দেওয়ার জন্যও বলা হয়েছে। আমাদের খাদ্যের কোন অভাব নেই। সাহায্য করতে কোন কৃপণতা নেই। যখন যেটা যেখানে প্রয়োজন হবে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আমরা সেটা করতে সক্ষম হব। নিহতের পরিবারকে সান্তনা দেওয়ার মতো আমাদের কোন ভাষা নেই। আল্লাহ যেন তাদের শোক সহ্য করার শক্তি দেন।
মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, বীর বাহাদুরসহ যে সব স্থানীয় এমপি সংসদে ছিলেন তারা এলাকায় চলে গেছেন উদ্ধার কাজে সহযোগিতা করার জন্য। সরেজমিনে দেখতে আজ বুধবার সকাল বেলা আমরা রাঙ্গামাটির উদ্দেশ্যে রওনা হব। গিয়ে দেখব কীভাবে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত ভাই- বোনকে উদ্ধার করতে পারি, সহযোগিতা করতে পারি। আমরা সেটা করব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সার্বক্ষণিক খবর নিচ্ছেন, নির্দেশনা দিচ্ছেন। সে অনুযায়ী কাজ চলছে, একটি মানুষও যাতে আর ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
বৃষ্টি শুরুর সময় থেকে কি প্রস্তুতি ছিল-কি না এমন এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, যখন ৩ নম্বর সিগনাল থাকে প্রত্যেক জেলা প্রশাসনকে বলে দেওয়া হয় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। স্বেচ্ছাসেবক ও আশ্রয় কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখার জন্য বলা হয়। এছাড়া ফায়ার-সার্ভিস ও সেনাবাহিনীকে অবহিত করে রাখার জন্যও বলা হয়।
মন্ত্রী বলেন, অনেক সময় ইচ্ছা করলেও মানুষকে সরিয়ে নেওয়া যায় না। পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বার বার সতর্ক করা হয়। অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে চায় না। অনেক সময় জোর করে পুলিশ দিয়ে আনতে হয়। সেখানে দু’দিন ধরে মাইকিং হচ্ছে। আমাদের প্রস্তুতি শতভাগ থাকে। তারপর ও অনেকে আশ্রয় কেন্দে আসতে চায় না। তবে আগে মানুষকে আহŸান জানানো হলেও দুর্যোগের সময় আশ্রয় কেন্দ্রে আসত না। সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মো. শাহ কামাল, ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন) শাকিল নেওয়াাজ,দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রিয়াজ আহমেদ, সশস্ত্রবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের প্রতিনিধিগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
খালেদা জিয়ার শোক
পাহাড় ধসে হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। গতকাল এক শোকবার্তায় বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, রাঙামাটি, বান্দরবান ও চট্টগ্রামে বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ধসে সেনা কর্মকর্তা ও সৈনিকসহ হতাহতের ঘটনায় দেশবাসীর ন্যায় আমিও ব্যথিত ও শোকাহত। বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, এসব মানুষের অকাল মৃত্যুতে সারা দেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে প্রাকৃতিক দুর্যোগে এতগুলো মানুষের মৃত্যু তাদের পরিবারে এক গভীর বেদনাঘন পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের শোকাচ্ছন্ন সব সদস্যের সঙ্গে আমিও সমব্যাথি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।