পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পঞ্চায়েত হাবিব : প্রস্তাবিত বাজেট পাশ করা হলে দেশ সমৃদ্ধির পথে হাঁটবে বলে জানিয়েছেন সরকারি দলের এমপিরা। অন্যদিকে বিরোধী দলীয় এমপির দাবি, এবারের বাজেটে বেশিরভাগ মানুষ খুশি হতে পারেনি। দূর্নীতি সহায়ক, অবিবেচক এবং অতিরিক্ত কর আরোপের পথ থেকে অর্থমন্ত্রীকে সরে আসার আহŸান জানানো হয় তাদের পক্ষ থেকে।
গতকাল সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারন আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এসব কথা বলেন। এদিকে ব্যাংকে রাখা আমানতের ওপর থেকে আবগারি শুল্ক কমানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে বলে জানান অর্থপ্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান।
আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের বাজেট একটু আগ্রহ জাগিয়েছে সারা দেশে। সব জায়গায় এটা নিয়ে আলোচনা চলছে। এমন কোন মানুষ নেই যারা বাজেটের কথা শোনেননি। এবারের বাজেট নিয়ে কোন ভীতি নেই। তবে আলোচনা আর সমালোচনা রয়েছে। এ মন্ত্রনালয়ের কর্মী হিসেবে কথা দিচ্ছি সবার পরামর্শ ও সুপারিশ বিবেচনা করা হবে। জাতির জন্য যেটা মঙ্গল হবে তাই করা হবে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা জাতিকে একুশ শতকের একটি আধুনিক সভ্য উন্নয়নের দিকে নিয়ে যেতে চাই। আগে কেউ কেউ বাজেট দিতেন হিসাব রক্ষকের বাজেট। আমরা এটা করি না। আমরা উন্নয়ন অর্থনীতির জন্য ঝুঁকি নিয়ে বাজেট দিয়েছি। এর আগে থিংক ট্যাংক সিপিডি বলেছিলো এতবড় বাজেট বাস্তবায়ন হবে কি করে। আল্লাহর রহমতে এর আগের বাজেট আমরা বাস্তবায়ন করেছি।
তিনি বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয সব জিনিষকে ভ্যাটের বাইরে রাখা হযেছে। তাহলে কেন বলা হচ্ছে আমরা কল্যানকারী দ্রব্যের ওপর ভ্যাট বসিয়েছি। আবগারি শুল্ক ৪৭ সাল থেকে এদেশে ছিলো। ২০০৯ সালে এটা ছিলো ৫০০ টাকা। এখন বাড়িয়ে ৮শ টাকা করা হয়েছে। বিগত কয়েক দিনে এ নিয়ে অনেকে মন্তব্য করেছেন। সংসদে এমপিরা কথা বলেছেন। আমার বিশ্বাস আবগারি শুল্ক নিয়ে আমরা গ্রহনযোগ্য সমাধানে পৌঁছাতে পারবো। এটা নিয়ে কথাবার্তা চলছে। তিনি বলেন,বাজেটের প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বাস্তবায়ন। আমরা প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেই কিন্তু তার সঙ্গে তার কোন সম্পর্ক নেই। অনেক সময় পুরস্কার হিসেবে তাদেরকে প্রকল্প পরিচালক করা হয়। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন এক ব্যক্তি এক প্রকল্পের পরিচালক হবেন। ৮/১০টির হতে পারবেন না। অনেক পরিচালককে দেখা যায় ঢাকায় বসে থাকেন। সচিবালয়ে ঘোরাঘুরি করেন। কিন্তু প্রকল্পে যান না। তিনি বলেন, ভারত নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে আমরা আঞ্চলিক সহায়তা বাড়াচ্ছি। ভারত নিয়ে নিন্দুকেরা নানা কথা বলবেন। আমরা ভারতের বাজার নয় ভারত হচ্ছে আমাদের বাজার। এখানে উভয়পক্ষ লাভবান হবে। উইন উইন সিচুয়েশন।
বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ তাজুল ইসলাম বলেন, বাজেট বাস্তবয়নে জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহন থাকা প্রয়োজন। কিন্তু এখন আমরা তা দেখছি না। বাজেেেটর আয় অনেকটা মধ্যবিত্ত ও নি¤œবিত্তদের ওপর নির্ভর করছে। ব্যাংকে টাকা রাখা ও বিমানের টিকেট কাটার ওপর কর বাড়ানো হয়েছে। যারা বিদেশে টাকা পাচার করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কার্যকরী কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বেশিরভাগ মানুষ এই বাজেটে খুশি হতে পারেনি। আবগারি শুল্ক আর ১৫ ভাগ হারে ভ্যাট বাড়ানোর ইস্যুতে চাপা পড়ে গেছে বাজেটের আরও অনেক দিক। অতিরিক্ত ভ্যাটের কারণে অনেক কোম্পানি ও কল-কারখানা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। বাড়বে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম। তিনি বলেন, ১০৪৩ টি পণ্য ভ্যাটের আওতার বাইরে রাখাকে আমি শুভংকরের ফাঁকি বলে মনে করি। এবারের বাজেটের অন্যতম দিক হলো অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি পড়েছে সাধারণ মানুষের ওপর। আবগারি শুল্ক নিয়ে প্যানিক তৈরি হয়েছে। এটা যদি আগেরটা বজায় রাখেন তাহলে জনমনে স্বস্থি ফিরে আসবে। জনগণের সঞ্চয়ের ওপরও অর্থমন্ত্রীর নজর পড়েছে। এর ওপর যেনো উনার কাঁচি না পড়ে সেজন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। তিনি বলেন, সুদহার না কমানোই এক্ষেত্রে ভালো। দূর্নীতি সহায়ক, অবিবেচক এবং অতিরিক্ত কর আরোপের পথ থেকে অর্থমন্ত্রীকে সরে আসার আহŸান জানান। আমরা বিরোধী দলের নেতারা দেশের উন্নয়নে কাজ করতে চায়। কিন্তু বিরোধী দলের এমপিরা তাদের নির্বাচনী এলাকায় ঠিকমতো কাজ করতে পারছে না। তাই আমরা সরকারি দলর সহায়তা চাই। গণতন্ত্র ধ্বংসকারিদের খপ্পরে যেনো সরকারি দল না পড়ে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, জাতির ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য এই বাজেট দেয়া হয়েছে। সমালোচনা থাকবেই। বাজেট নিয়ে অতীতেও অনেক সমালোচনা হয়েছে। আমাদের দেখতে হবে বাজেটের কারণে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে কি না। তিনি বলেন, আমাদের সামনে লক্ষ্য টেকসই উন্নয়ন। ১ কোটি ৩০ লাখ শিশুকে উপবৃত্তি দেয়া হচ্ছে। এরপরও যদি কেউ বলেন, দেশের উন্নয়ন হচ্ছে না, অগ্রগতি হচ্ছে না,দেশ ডিজিটাল হচ্ছে না তাহলে কিছু বলার নেই। চোখে চশমার কারণে হয়তো অনেকেই এটা দেখতে পারেন না। এসময় তিনি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অগ্রগতি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, হৈ চৈ হচ্ছে মোটা চালের দাম বেশি কেন? খাদ্য সংকটের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু কোথায় খাদ্য সংকট। কৃষকরা এবার ধানের দাম একটু বেশি পেয়েছে। এখন তারা যেনো আতংকিত না হয় চালের দাম কমে যাবে বলে। খালেদা জিয়া এক কাপড়ে বের করে দেয়ার কথা বলছেন। আমরা তো একটি কাপড় পড়ি না। আমাদের চারপাশে তো ভারত। আপনি তো ভারতকে পছন্দ করেন না। তাহলে কোথায় যাবেন আপনি। বঙ্গোপসাগর ছাড়া তো আর কোন জায়গা নেই। কথায় আছে-কয়লা যায় না ধুলে স্বভাব যায় না মলে। খালেদার ক্ষেত্রে এটা হয়েছে।
আলোচিত কয়েকটি মামলার কথা তুলে ধরে বলেন, এসব মামলার বিচার যদি ঠিকমতো হয় তাহলে বিএনপির একজন লোকও জেলের বাইরে থাকবে না। পাবনা থেকে নির্বাচিত শামসুল হক টুকু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে চ্যালেঞ্জ অনেক। যখনই তিনি দেশের উন্নয়নে কাজ করতে গেছেন তখনই তার সামনে নানা বাধা এসে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে বিএনপি দেশের উন্নয়নে বারবার বাধা দিয়েছে। তার নিজেরা দেশের উন্নয়ন করেনি অন্যদেরও করতে দিতে চায় না। সব বাজেট যদি সফলভাবে বাস্তবায়ন করা যেতো তাহলে দেশের অনেক উন্নয়ন আরও আগেই হতে পারতো। চলতি বাজেটে কিছু সংশোধনী এনে বাজেট পাশ করা হলে দেশ সমৃদ্ধির পথে হাঁটবে বলে মনে করি।
দেশে কৃত্রিম খাদ্য সংকটের মিথ্যা গল্প ফাঁদা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দিনাজপুর-২ আসনের সরকার দলীয় সদস্য খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, দেশের কোথাও খাদ্য সংকট নেই। কোথাও খাবারের অভাবে মানুষ মারা গেছে বলেও কেউ শোনেনি। হাওড়ে এতো বড় বিপর্যয় ঘটার পরও সরকারের পদক্ষেপের কারনে কোন বিপর্যয় ঘটে নাই। সরকার সব কিছু নিয়ে হাওড়বাসীর পাশে দাঁড়িয়েছে। অথচ প্রতিদিন ইফতারের সময় মিথ্যাচার করা হচ্ছে। এইসব ইফতারের অনুষ্ঠানে একদিন যদি চালের দাম ৪০ টাকা বলা হয়, পরের দিনই তা বলা হচ্ছে ৫০ টাকা, তারপর দিনই ৬০ টাকা। এভাবে মিথ্যাচারের মাধ্যমে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে একটি পক্ষ দেশে চালের দাম বাড়িয়ে চলছে। তিনি বলেন, এ বাজেট দেশের উন্নয়নকে জোরদার করবে এবং আগামী সময় বাংলাদেশের মানুষের জন্য নির্দিষ্ট করবে।
ঝিনাইদহ-২ এর তাহজীব আলম সিদ্দিকী বলেন, বাজেট গণমুখি হয়েছে। সরকার এবার হত দরিদ্র ও দূর্বও মানুষের প্রতি অনেক সহানুভূতিশীল। প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনীতি নতুন দিগন্তে প্রবেশ করেছে। অর্থমন্ত্রীর মধ্যে আশ্চর্যজনক কিছু বিষয় আছে। তিনি সাহসী ও বড় প্রস্তাবিত বাজেট দিয়েছেন। কিন্তু কিছু সমালোচিত কাজ করে পুরো বিষয়ে আগুনে ঘি ঢেলে দেয়ার মতো করলেন। এটা তো সেনা মাসনের বাজেট নয়্ এটা একটি রাজনৈতিক দলের বাজেট। অর্থমন্ত্রীর মধ্যে জনগণের প্রতি সংবেদনশীলতার অভাব কেন আমার বোধগম্য নই। ব্যাবসায়িদের ভ্যাট কমেেনার কথা বলে পরে না কমিয়ে তাদেরকে হতাশ করা হয়েছে। এটার কোন প্রয়োজন ছিল না। এবারের বাজেটে মধ্যবিত্তদের ওপর একটু বেশি চাপ দেয়া হয়েছে। যা ভোটের রাজনীতির জন্য সুখকর নয়। গণতান্তিক সরকারে অনড় অবস্থান বলে কিছু নেই। বাজেট বাস্তবায়নের চালকের আসনে যেখানে রয়েছেন শেখ হাসিনা সেখানে ১৬ কোটি যাত্রীর কোন ভয় নেই বলে মনে করি।
ওয়ার্কার্স পার্টির মোস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেন, বাজেট বাস্তবায়নের সবচেয়ে বড় বাধা দুর্নীতি। সারা বছর কাজ না করে এক মাসে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। সাধারণ মানুুষের পকেট কাটা হয়। এসময় আরও বক্তব্য রাখেন-নারায়নগঞ্জ-২ নজরুল ইসলাম বাবু, সাতক্ষীরা-১ এর এমপি মোস্তফা লুৎফুল্লাহ বেগম সফুরা বেগম,শামসুল হক চৌধুরী প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।