Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৯০ ভাগ লোক সরকারের বিরুদ্ধে চালের মজুদও নেই, কিছু নেই, সব সরকারের ফাঁকা বুলি

বাজেটের ওপর আলোচনায় এমপি শওকত চৌধুরী

| প্রকাশের সময় : ১২ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকাসহ সারাদেশের ৯০ ভাগ মানুষ সরকারের বিরুদ্ধে চলে গেছে। এটা কেউ এনালিসিস করে না। ব্যাংকের টাকা কাটা থেকে শুরু করে বিভিন্ন কারণে ৯০ ভাগ লোক সরকারের বিপক্ষে। কিন্তু মুখ দিয়ে কেউ বলে না। ঢাকায় ১৮টা আসন একটি সিট পাবেন কি-না আমার সন্দেহ আছে। এটা বোঝার চেষ্টা করেন।
গতকাল রোববার জাতীয় সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে নীলফামারী-৪ আসনের জাতীয় পার্টির শওকত চৌধুরী এমপি এসব কথা বলেন। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা এমপিরা কি অবস্থায় পড়ি? জনগণ মনে করে আমাদেরকে মন্ত্রী টাকা দিছে আমরা মেরে খাইছি। কিন্তু আমরা সেই টাকা পাই না। কাজ করতে পারি না। উনারা বলে, দেয় না। এটা কোন কথা? আমাদেরকে বিইজ্জত করার কোনো অধিকার কি তাদের আছে? আমরা বিইজ্জত হয়ে যাই জনগণের কাছে। এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় সেজন্য অনুরোধ জানান।
প্রস্তাবিত বাজেটের টাকা সুষম বণ্টন হয়নি বলেও অভিযোগ করে শওকত চৌধুরী বলেন, বাজেটের টাকা সারাদেশে সুষম বণ্টন হওয়ার কথা। কিন্তু কোথায় সুষম বণ্টন? রংপুর বিভাগে বাজেট নেই। কোন মেগা প্রজেক্ট নেই। কী কারণে? রংপুর বিভাগে এত চাল হয় এত কিছু হয়, আমরা কিন্তু এখন মফিজ নেই। রংপুর বিভাগ দিনদিন উন্নয়নের দিকে যাচ্ছে।
শওকত চৌধুরী বলেন, একটু আগে এখানে ত্রাণমন্ত্রী মহোদয় ছিলেন। আমি বহুদিন যাবত চেঁচাচ্ছি, এ জাতীয় সংসদে। সৈয়দপুরে স্মৃতিসৌধের অর্ধেক কাজ করেছি। বধ্যভূমির ৯০ ভাগ কাজ করেছি। উনি কথা দিয়েছিলেন এই পবিত্র সংসদে। উনাকে পাওয়াও যায় না, প্রজেক্টে বরাদ্দও পাই না। এইসব কি? যেটা বলব সেটা করব কিন্তু এই তামাশা কেন। জাতীর সঙ্গে, মানুষের সঙ্গে, দেশের সঙ্গে তামাশা কিসের? জাতীয় সংসদ কী তামাশার জায়গা? এখানে বললাম আর সচিবালয়ে গিয়ে ভুলে গেলাম?’
ভরা মৌসুমেও চালের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় চালের মজুদ নিয়েও প্রশ্নœ তুলে কৃষিমন্ত্রীর উদ্দেশে জাপার এমপি বলেন, এই ভরা মৌসুমে চালের দাম ডবল হল কেন? এটা একটু দেখা দরকার খতিয়ে। আপনারা বলছেন মজুদ আছে, কি রকম মজুদ আছে? মজুদই যদি থাকে তাহলে চালের দাম ডবল হবে কেন? আমার মনে হয়, চালের মজুদও নেই, কিছু নেই, সব সরকারের ফাঁকা বুলি। এসময় চালের দামসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর দামের বিষয়ে সরকারকে লক্ষ্য রাখার আহŸান জানিয়ে তিনি বলেন, মানুষকে শান্তিতে থাকতে দিতে হবে। চাল এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানোর চেষ্টা করুন, ফাঁকা বুলি মারিয়েন না। বহুত ফাঁকা বুলি মারছেন। ক্ষমতা বড়ই পিচ্ছিল জিনিস। এটা পিছলাতে সময় লাগে না। এজন্য এটাতে একটু ভালভাবে চিন্তা-ভাবনা করা দরকার।
বাজেট বরাদ্দ সুষম বণ্টন হয় না অভিযোগ করে তিনি বলেন, এতো টাকার বাজেটে ভালো কাজ হচ্ছে না। কিছু মেগা প্রজেক্ট হচ্ছে। কিন্তু সারাদেশে সুষমভাবে বাজেটের অর্থ ব্যয় হয় না। আমরা যদি মনে করি, সারাজীবন ক্ষমতায় থাকবো, সেটা সম্ভব না। ভালো কাজই বেঁচে থাকবে। রংপুর বিভাগে মেগা প্রজেক্ট নেই। সুষম বণ্টন চাই। চার লাখ টাকার বাজেট। আমার ভাগে তো ১০০ কোটি বা অন্তত ৫০ কোটি টাকা তো পড়ে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে নিজ দলের সম্পর্কের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, যতো বৈষম্য করুক, আমরা ঝগড়া করবো না। ক্ষমতা বড় পিচ্ছিল জিনিস। পিচলাইতে সময় লাগে না। আমরা দেখাইয়া দেব, এই আপনাদের সমস্যা। মানুষকে শান্তিতে থাকতে দিতে হবে। আমাদের সঙ্গে রাখবেন। জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সঙ্গে বেঈমানি করেনি। নিজের এলাকায় বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের কথা তুলে ধরে এ বিরোধী দলের এমপি বলেন, জনগণ মনে করে সরকার আমাদের টাকা দিয়েছে, আমরা সেই টাকা মেরে খাই। মন্ত্রীরা বলেন টাকা দেবেন, কিন্তু দেন না। আমাদের বেইজ্জত করার অধিকার কি তাদের আছে? আমরা জুতা খাবো আর উনারা ফুলের মালা পরবেন। চুরি বন্ধ করতে হবে। সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাজেটে


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ