Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ক্লোজড হওয়ার নেপথ্যের কাহিনী

বগুড়া স্টেডিয়াম ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই

| প্রকাশের সময় : ১১ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বগুড়া ব্যুরো : প্রতিরাতেই লোক ধরে এনে ক্রসফায়ার, মাদক ও ছিনতাই মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়, ফাঁড়ির মধ্যেই অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে অভিযুক্ত বগুড়ার স্টেডিয়াম ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই মামুনকে ক্লোজড করা হয়েছে। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে আনিত লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ সমুহ তদন্তের প্রক্রিয়াও চলছে বলে জানা যায়। ফাঁড়ি থেকে এস আই মামুনের এই অপসারণের সংবাদ জানাজানির পর সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে বলেও জানা গেছে।
পুলিশের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, এস আই মামুনের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিরাতে এলাকা থেকে ওয়ারেন্ট মূলে আসামী বা অপরাধী ধরে এনে তাদের পরিবারের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ ছিল কমন। এছাড়াও কোন রাতে অপরাধী ধরতে ব্যর্থ হলে টাকা কামানোর নেশায় আসক্ত এই এস আই সাধারণ মানুষকে ধরে এনেও তাদের অভিভাবকের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের কৌশলে টাকা নিয়ে ছেড়ে দিত। টাকা না পেলে আটক ব্যক্তিকে মাদকাসক্ত, মাদকব্যবসায়ী, ছিনতাইকারী বা সন্ত্রাসী বানিয়ে শারীরিক নির্যাতন করতো। শারীরিক নির্যাতনের কাজটি সে আটক ব্যক্তির অভিভাবকের সামনেই করতো। তার বিরুদ্ধে স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে অনেকেই লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ করলেও কোন ব্যবস্থায় নেয়া হতোনা। ফলে সে ক্রমশই বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল। অভিযোগ রয়েছে মাদকাসক্তির অভিযোগে আটক একজনকে তার বাবার সামনেই এমনভাবে পেটায় যে ফাঁিড় থেকে বাড়িতে ফিরে এসে একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সহ সভাপতি মোঃ জহুরুল ইসলাম হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। অন্যদিকে আব্দুল মজিদ নামে অপর একজনের ছেলেকে তার বাড়ি থেকে ধরে এনে ক্রস ফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা চাইলে টাকা পরিশোধে বিলম্ব হওয়ায় তাকে পুলিশ ছিনতাইকারী গুলি বিনিময়ের গল্প সাজিয়ে তার পায়ে গুলি করে। এধরণের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
তবে সম্প্রতি ওই ফাঁিড়তেই কর্মরত মোঃ মাসুম নামে একজন এ এস আই পুলিশের মহাপরিদর্শকের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য উপাত্তসহ অভিযোগ লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে এস আই মামুনের বিরুদ্ধে কমন অভিযোগের পাশাপাশি প্রায় প্রতি রাতেই খারাপ মেয়েদের ফাঁড়িতে এনে অসামাজিক কার্যকলাপ পরিচালনা করাসহ সব ধরনের অপকর্মে তাকেসহ ফাঁড়ির অন্যান্যদেরও তার নির্দেশ মতো অপকর্ম করতে বাধ্য করে থাকে। আর কথামত কাজ না করলে এস আই মামুন তাকেসহ অন্যান্য সহকর্মীকে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালির পাশাপাশি শারীরিকভাবেও নাজেহাল করে থাকে। মাসুমের এই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই সম্প্রতি গত বুধবার মামুনকে পুলিশ লাইন্সে ক্লোজড করা হয়।
এস আই মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগের অধিকতর তদন্ত হচ্ছে  এবং তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে পরবর্তিতে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ