Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লোকসান আর প্রতিবন্ধকতায় বন্ধ হয়ে গেল খুলনার নগরপরিবহনে বিআরটিসি

| প্রকাশের সময় : ১১ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আশরাফুল ইসলাম নূর, খুলনা থেকে : খুলনা মহানগরীতে ইজিবাইক, মাহেন্দ্রা ও অটোরিকশার সংখ্যা-রুট নির্ধারণের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না হওয়ায় বিআরটিসি’র দ্বিতল বাসে যাত্রী কম; রয়েছে যানজট। দো’তলা বিশাল আকৃতির বাসে অপেক্ষাকৃত ধীরগতির হওয়ায় যাত্রীর আগ্রহও কম। এছাড়া নগরীর ভাঙাচোরা রাস্তার কারণে লোকসান হচ্ছিল বিআরটিসি’র সিটি সার্ভিস। তারপর ব্যক্তি মালিকাধীন নগর পরিবহনের মালিকপক্ষের হিংসার টোপে পড়ে সার্ভিসটি। তাই লোকসান আর কৃত্রিম প্রতিবন্ধকতায় বন্ধ হয়ে গেল নগর পরিবহনে বিআরটিসি’র দ্বিতল বাস।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, খুলনা মহানগরীতে নগর পরিবহনের সঙ্কট থাকায় জণগনের দীর্ঘদিনের কষ্ট লাঘবে গত বছরের ১০ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে দ্বিতল বাসের যাত্রার উদ্বোধন করা হয়। গত বছরের ১১ মে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় মহানগরীতে পাঁচ ইজিবাইক নির্ধারিত রুটে চলাচলের সিদ্ধান্ত হয়। যে সিদ্ধান্ত ওই বছরের ২০ মে থেকে বাস্তবায়নের কথাছিল। এ অবস্থায় নগরবাসীর দূর্ভোগ লাঘবের লক্ষ্যে নগরীতে বিআরটিসি›র সিটি বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছিল। প্রথম পর্যায়ে পাঁচটি দ্বিতল বাস নগরীর রূপসা ট্রাফিক মোড় থেকে পিটিআই, রয়েল মোড়, ফেরিঘাট, পাওয়ার হাউস মোড়, জোড়াগেট, দৌলতপুর, ফুলবাড়িগেট হয়ে ফুলতলা পর্যন্ত চলাচল করছিল। যার প্রতিটি বাসে আসন সংখ্যা ৭৫। বাসগুলোতে রূপসা-ফুলতলা জনপ্রতি ভাড়া মাত্র ৩০টাকা। এছাড়া মধ্যবর্তী এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনের ন্যূনতম জনপ্রতি ভাড়া ৫টাকা। বাসগুলো ২০ থেকে ২৫ মিনিট পরপর নির্দিষ্ট গন্তব্যে ছেড়ে যাবার সিদ্ধান্ত ছিল। প্রথম থেকে পরীক্ষামূলকভাবে পাঁচটি বাস চলছিল। আর যাত্রীসংখ্যা সন্তোষজনক হলে পরবর্তীতে আরও পাঁচটি বাস চালুর কথা ছিল। যদিও গেল বছরের ১১ মে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভার সিদ্ধান্ত গত এক বছরেও বাস্তবায়িত হয়নি। এছাড়া দ্বিতল বাস চলাচল করছিল ব্যক্তিমালিকাধীন টাউন সার্ভিসগুলোতে যাত্রী কমছিল। সে কারণে নগরপরিবহনের মালিকপক্ষ বিভিন্নভাবে দ্বিতল বাস চলাচল বন্ধের চক্রান্ত করছিল।
বিআরটিসি’র বাস  সার্ভিস বন্ধ হওয়া প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন (বিআরটিসি)›র খুলনার ডিপো ম্যানেজার নিহার রঞ্জন বলেন, চালু’র মাস তিনেক লোকসানে সার্ভিসটি চালানো হয়েছিল। এরমধ্যে ইজিবাইক, মাহেন্দ্রা ও অটোরিকশার সংখ্যা-রুট নির্ধারণের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে বিশাল আকৃতির দ্বিতলা বাসে যাত্রী সংখ্যা ছিল তৎসামান্য। আর নগরীর তীব্র যানজট ও ভাঙাচোরা রাস্তায় তুলনামুলক ধীরগতির হওয়ায় যাত্রী সাধারণ আগ্রহও কম। পাঁচটি বাস চালাতে প্রতিদিনই হাজার হাজার টাকা লোকসান হচ্ছিল সরকারের। তাই উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক সার্ভিসটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য মুহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ওয়াসার রাস্তা খোঁড়াখুড়ির কারণেই খুলনাবাসী বেশি কষ্ট পাচ্ছে। রাস্তাগুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মেরামত করতে ব্যর্থ হয়েছে ওয়াসা। সে কারণেই নগরবাসীর সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আশা করছি-রাস্তা ঠিক হয়ে গেলে যানজট ও গণপরিবহন সংকট নিরসণ হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ