বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মমিনুল ইসলাম মুন, তানোর থেকে : রাজশাহী মহানগরীর উপ-শহর, সিটি বাইপাশ, তানোর উপজেলার মুন্ডুমালাহাট, চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার নুনগোলা ও ভোলাহাটসহ বৃহত্তর বরেন্দ্র অঞ্চলে পল্লী চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণের নামে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র এলাকার বেকার যুবক-যুবতীদের সঙ্গে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, রাজশাহী মহানগরীর উপ-শহর এলাকার ‘সোসাইটি ডায়াবেটিক সেন্টার’ ও ‘ভিলেজ ডেভলপমেন্ট এ্যান্ড হেলথ কেয়ার সোসাইটি’ (এল,এম,এ,এফ) নামের কথিত প্রতিষ্ঠান পল্লী চিকিৎসকদের এালোপ্যাথিক, ভেটেনারী ও প্রাণী সম্পদ প্রশিক্ষণের নামে এসব টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে সাধারণের মধ্যে ব্যাপক প্রচার আছে। স্থানীয়রা জানান, মাত্র সাড়ে ৬ হাজার টাকায় তাদের অধীনে মাত্র ২২ দিন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দেয়া হচ্ছে ডাক্তারি সনদ। গ্রামের সাধারণ ও স্বল্প শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীদের রঙীন স্বপ্ন ও প্রলোভন দিয়ে এই সনদ বাণিজ্য করে চক্রটি লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অন্যদিকে চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার নুনগোলা ‘মাইনুল মাস্টারের বাসা’ ও রহনপুরে চলতি বছরের ১০ জুন ভর্তির শেষ দিন উল্লেখ করে পোস্টার সাটানো রয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, তানোর উপজেলা সদর ও বিভিন্ন এলাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রীতিমত পোস্টারিং ও মাইকিংয়ের মাধ্যমে মাসব্যাপী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গ্রাম্য ডাক্তারের সনদ দেয়া হবে বলে কথিত প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে প্রচার চলছে। তানোরে ‘সোসাইটি ডায়বেটিক সেন্টার’ ও ‘ভিলেজ ডেভলপমেন্ট এ্যান্ড হেলথ কেয়ার সোসাইটি’ ইতমধ্যে তাদের ৮ম ব্যাচে প্রায় সহস্রাধিক বেকার যুবক-যুবতীদের কথিত প্রশিক্ষণ ও সনদ দিয়ে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তানোর উপজেলা হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, এটা সম্পূর্ণ রুপে প্রতারণা ছাড়া কিছুই না, কেননা ওষুধের নাম ও কার্যকারিতা সম্পর্কে জানতে হলেও একটি মানুষের ২২ দিনের বেশি সময় লাগবে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জনৈক রমজান আলী ও জনৈক আকতার হোসেনের তত্ত¡াবধানে ‘সোসাইটি ডায়বেটিক সেন্টার’ এবং ভিলেজ ডেভলপমেন্ট এ্যান্ড হেলথ কেয়ার সোসাইটি এই প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছেন। তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা পৌর সদরের অবঃ আশরাফ বিডিআর-এর বাড়িতে এই প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে প্রতি সপ্তাহের শুক্রবার মোট ২২ দিন প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। এর বিনিময়ে প্রতিটি প্রশিক্ষণার্থীর কাছে থেকে নেয়া হবে ৬ হাজার পাঁচশ’ টাকা করে। পরিচয় গোপন রেখে এই প্রতিবেদক প্রশিক্ষণের সঙ্গে সম্পৃক্ত আকতার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে তাদের ৮ম ব্যাচের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে ও ৯ম ব্যাচের ভর্তি চলছে, ৯ম ব্যাচেও ৭০ থেকে ৮০ জন প্রশিক্ষণার্থী ভর্তি হয়েছে আমরা তাদের কাছে থেকে ৬ হাজার পাচশ’ টাকা করে নিচ্ছি। আর হাতে-কলমে তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। প্রশিক্ষণ শেষে তারা যাতে প্রাণী ও মানুষের চিকিৎসা করতে পারে তার জন্য পৃথক দুটি সনদপত্র দেয়া হবে। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সোসাইটি ডায়বেটিক সেন্টারের পরিচালক রমজান আলী বলেন, তারা বৈধভাবে পল্লী চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন, যাতে তারা ভালো চিকিৎসা করতে পারেন। তিনি বলেন, তারা চিকিৎসকের সনদ নয় প্রশিক্ষণের সনদ দিচ্ছেন। এ ব্যাপারে ভিলেজ ভেডলপমেন্ট এ্যান্ড হেলথ কেয়ার সোসাইটি তানোরের দায়িত্বরত আকতার হোসেন বলেন, তারা ইতিমধ্যে ৮ম ব্যাচের প্রশিক্ষণ ও সনদ বিতরণ সম্পন্ন করেছেন, তবে প্রশিক্ষণার্থী সঙ্কটের কারণে ৯ম ব্যাচের প্রশিক্ষণ এখানো শুরু করতে পারেননি। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ‘টিএইচও’ বলেন, এই বিষয়ে তিনি অবগত নন এমনকি কেউ তার কাছে অভিযোগ করেনি। তবে তিনি বলেন, এসব বিষয়ে বিস্তারিত খোজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।