বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
এম. হাসানুল হক উজ্জ্বল, বিয়ানীবাজার (সিলেট) থেকে : বিয়ানীবাজার সদর ইউনিয়নকে বিলুপ্ত ঘোষনা করে ২০০১ সালে ১৮ দশমিক ১৭ বর্গকিলোমিটার আয়তন নিয়ে বিয়ানীবাজার পৌরসভা গঠন করা হয়। তখন বিয়ানীবাজার গোলাপগঞ্জ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ পৌরসভার অনুমোদন একই সাথে নিয়ে আসেন। দু‘টি পৌরসভা গঠনের পর গোলাপগঞ্জ পৌরসভা ৩ বার নির্বাচিত মেয়র পেলেও বিয়ানীবাজার পৌরবাসী আইনি জটিলতায় পড়ে একটানা ১৬ বছর ছিলেন ভোটাধিকার বঞ্চিত। নির্বাচন আদায় করতে তারা বিভিন্ন সময় আন্দোলন সংগ্রামও করেছেন। অবশেষে গত ২৫ এপ্রিল বিয়ানীবাজার পৌরসভায় কাঙ্খিত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু কসবা আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দু’জন কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও জাল ভোট দেয়ার অভিযোগে নির্বাচন কমিশন ওই কেন্দ্রের ফলাফল বাতিল করে দেন। পরবর্তীতে গত ৮ মে ওই কেন্দ্রের ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন। জনগনের স্বতস্ফূর্ত ভোটে বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী আবদুস শুকুর।
মেয়র আব্দুস শুকুর ছাত্ররাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। অত্যন্ত স্বজ্জন এই ব্যক্তিকে নিয়ে নির্বাচনের পূর্ব থেকেই আশায় বুক বাঁধেন ভোটারগণ। যার ফলে বিপুল সংখ্যক ভোটের ব্যবধানে তিনি মেয়র নির্বাচিত হন। মেয়র হিসেবে সরকারি গেজেট প্রকাশের পর ২২ মে তিনি শপথ গ্রহণ করেন এবং পরদিন তিনি মেয়রের চেয়ারে বসেন।
দায়িত্ব গ্রহণের পর বয়সে তরুণ সদাহাস্যজ্জ্বল মেয়র আব্দুস শুকুরের সাথে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তিনি পৌরসভার উন্নয়ন নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন।
বিয়ানীবাজার পৌরসভা গঠিত হয়েছে ১৬ বছর পূর্বে। আর আপনি এই পৌরসভার প্রথম মেয়র। এ নিয়ে আপনার অনভূতি কি? এ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, বিয়ানীবাজার পৌরসভার ভোটারগণ পরিবর্তন আর উন্নয়নের পক্ষে ছিলেন। তারা চেয়েছিলেন নতুন নেতৃত্ব। তারা চেয়েছিলেন উন্নয়ন। তারা চেয়েছিলেন পরিবর্তন। তাই জনগণ শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিয়ে ভোট বিলপ্লবের মাধ্যমে আমাকে মেয়র নির্বাচিত করেছেন। আমি বলবো পৌরসভার সকল ভোটারই আমাকে ভোট দিয়েছেন। তাই আমি নির্বাচিত হয়ে এই চেয়ারে বসতে পেরেছি। মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণের পর পৌরসভার সার্বিক অবস্থা কেমন দেখছেন এ বিষয়ে মেয়র বলেন, বিয়ানীবাজার পৌরসভা ছিল একটি তলা বিহীন ঝুড়ি। ছিল না কোন পরিকল্পিত উন্নয়ন। আমি দায়িত্ব নিয়ে পাহাড়সময় চ্যালেঞ্জের মুখে কাজ করছি। বর্ষা মৌসুম, একটু বৃষ্টি দিলেই পৌর শহরে দেখা দেয় পানিবদ্ধতা। চলাচলে অসুবিধার সম্মূখিন হতে হয়। চেয়ারে বসেই আমরা কাউন্সিলরগণ মিটিং করে এ সমস্যাকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ শুরু করি। মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে দিন রাত কাজ করছেন পৌরসভার কর্মীরা। আমিও রাতে না ঘুমিয়ে তাদের উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছি।
এই পর্যন্ত চোঁখে পড়ার মতো কি কি কাজ করেছেন এ বিষয়ে মেয়র তার পরিকল্পণা ও বাস্তবায়ন নিয়ে বলেন, বিয়ানীবাজার পৌরশহরে মধ্যবাজার দিয়ে যানবাহন ও মানুষজন চলাচল করতে অসুবিধার সম্মুখিন হতে হতো। কলেজ রোড এলাকায়ও একই অবস্থা বিরাজ করছিল। সিএন্ডবি ও এলজিইডির রাস্তাগুলো ভেঙ্গে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছিল। প্রতিদিন ঘটতো দুর্ঘটনা। মানুষজন চলাচল করতে পারতেন না। আমি দায়িত্ব নেয়ার প্রথম রাতেই এসব রাস্তা সংস্কারের কাজ হাতে নেই। দুই দিনের মধ্যেই মানুষের যাতায়াতের পাশাপাশি রাস্তাগুলো যান চলাচলের উপযোগি করে দেই।
দায়িত্ব গ্রহণের এক সাপ্তাহের মধ্যে এতো কাজ কিভাবে সম্ভব হচ্ছে তার উত্তরে মেয়র বলেন, দেখুন যে কোন ভালো কাজ করতে হলে ভালো মন লাগে। জনগণ আপনাকে তার আমানত দিয়ে নির্বাচিত করেছে উন্নয়নের জন্য। এই বিষয়টিকে মাথায় নিয়ে কাজ করলেই সব অসম্ভবকে সম্ভব করা কোন বিষয় না।
বিয়ানীবাজারই প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত। প্রবাসীদের আকৃষ্ট করতে আপনার বিশেষ কিছু করার পরিকল্পনা আছে কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রবাসীরা তাদের নাড়ীর টানে অল্প সময়ের জন্য পরিবার পরিজন নিয়ে নিজ এলাকায় আসেন। এলাকার প্রতি নাড়ীর টান বাড়াতে আমাকে নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। যা আমার মাথায় রয়েছে। বিয়ানীবাজার পৌরবাসীর উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, আমাকে পৌরসভার ২৫ হাজার ভোটার তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করেছেন। আমি তাদের আশা আকাঙ্খা পুরণে কাজ করে যাবো। বিয়ানীবাজার পৌরসভাকে আমার দায়িত্বকালীন সময়ে একটি মডেল ও ডিজিটাল পৌরসভা হিসেবে রূপ দিতে কাজ করে যাবো। আর এসব করতে হলে অবশ্যই প্রয়োজন জনগণের অংশগ্রহন ও সহযোগিতা। তাই আমি আমার কর্মকালীন সময়ে সকল জনগণের সহযোগিতা ও দোয়া কামনা করছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।