Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০৯ জুলাই ২০২৪, ২৫ আষাঢ় ১৪৩১, ০২ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

চাষিদের বঞ্চিত করে গুদামে গম জমা দিচ্ছে ব্যবসায়ীরা

| প্রকাশের সময় : ১০ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ভুরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা : ভুরুঙ্গামারীতে গম চাষীদের বঞ্চিত করে সরকারি গুদামে গম জমা দিচ্ছে ব্যবসায়ীরা। ইউপি চেয়ারম্যানদের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে গম ক্রয় বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার। জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ভুরুঙ্গামারী উপজেলায় ৫৯৬ মে. টন গম বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বিধি অনুযায়ী উপজেলা কৃষি বিভাগ গম চাষীদের নামের তালিকা দেবার পর লটারীরর মাধ্যমে ৫৯৬ জন কৃষকদের তালিকা তৈরি করা হয়। কিন্তু দেখা যায় তালিকায় থাকা অধিকাংশ কৃষক গম চাষী নয়। আবার অনেকে ভ‚মিহীন ও ব্যবসায়ী। তালিকায় প্রকৃত গম চাষীদের নাম না থাকায় একটি সঙ্গবদ্ধ চক্র ওই সকল সিøপ নাম মাত্র মূল্যে ক্রয় করে খাদ্য বিভাগের যোগসাজসে জয়মনিরহাট খাদ্য গুদামে গম জমা দিচ্ছে। জয়মনিরহাট খাদ্য গুদামে জাল স্বাক্ষরের মাধ্যমে বিল এনে অসাধু ব্যাংক কর্মকর্তার যোগসাজসে এখানেও জাল স্বাক্ষরের মাধ্যমে বিল উত্তোলন করে নিচ্ছে। এ ব্যাপারে গত বৃস্পতিবার উপজেলার ৫ জন ইউপি চেয়ারম্যান জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে। শিলখুড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেন ইউসুফ জানান, ওই ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ শাহজাহান, অন্য ইউনিয়নের বাসিন্দা সেমিমা খাতুন, নুর ইসলাম, লিয়াকত আলী এরকম অনেকে গম চাষ না করলেও গম চাষীর তালিকায় এদের নাম রয়েছে। বঙ্গসোনাহাট ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী জানান, গোলজার হোসেন, আব্দুল মালেক, আল আমিন, আব্বাস আলী, আব্দুর রহিম এরা সকলেই ভ‚মিহীন এবং অনেকে ঢাকায় কাজ করে। অথচ তালিকায় এসব ব্যক্তির নাম দেয়া হয়েছে। তিনি জানান, উপজেলার সবচেয়ে ছোট ইউনিয়ন চরভুরুঙ্গামারীতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৯০ মে. টন। ভুরুঙ্গামারী সদরের খাদ্য ব্যবসায়ী আশরাফুল আলম জানান, সরকারি ভাবে ১১২০ টাকা প্রতি মণ গম ক্রয় করা হলেও গমের বর্তমান বাজার দর প্রায় ৭২০ টাকা। বাজার দরের এই তারতম্যের কারণে কৃষি বিভাগের যোগসাজসে একটি চক্র গম চাষী নয় এমন তালিকা ব্যবহার করে তাদের নামে সরকারি ভাবে গম জমা দিচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার জয়মনিরহাট সরকারি খাদ্য গুদামে উপস্থিত হয়ে গম জমা দিচ্ছে এমন কৃষকের নাম জানতে চাওয়া হলে ওসিএলএসডি বেলাল হোসেন, ইউসুফ আলী, মোহাম্মদ আলী ও লিয়াকত আলীর নাম জানালেও ওখানে এদের কাউকে খুজে পাওয়া যায়নি। অনুসন্ধানে  জানা যায়, শিলখুড়ির গম ব্যবসায়ী আবু হানিফ এবং ভুরুঙ্গামারীর রিয়াজুল এসব গম জমা দিচ্ছে। উপজেলা খাদ্য সংগ্রহ কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা অমূল্য কুমার সরকার জানান, গত ১৯ মে গম ক্রয়ের উদ্বোধন করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৯৮ মে. টন গম ক্রয় করা হয়েছে। তিনি জানান, উপজেলা কৃষি বিভাগের তালিকানুযায়ী গম ক্রয় হয়েছে। গম চাষী না হলে এর দায় তারা নিবে। তিনি বলেন, গম ক্রয় বন্ধ রাখা হয়নি তবে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে সেøা কেনা হচ্ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান জানান, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুন্নবী চৌধুরী জানান, বিষয়টি আমি অবগত নই। এ রকম হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজাহারুল ইসলাম জানান, চেয়ারম্যানদের অভিযোগ পাবার পর ক্রয় বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ