বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : আদালতে ঘাতিকা রাবেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়ার ৩ দিনেও নরসিংদী সরকারী কলেজের ছাত্র মাহফুজ সরকারের খন্ডিত লাশ উদ্ধার করতে পারছে না পুলিশ। পিতা আ: মান্নান সরকার, বড় ভাই এড. রাসেলসহ আত্মীয়-স্বজনরা হন্যে হয়ে মাহফুজের লাশ খুজে বেড়ালেও পুলিশের লাশ উদ্ধারে কোন তৎপরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নুরে আলম হোসাইন সাংবাদিকদেরকে বলেছেন, ঘাতিকা রাবেয়ার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ঘটনাস্থলে গিয়ে তারা তল্লাশী চালিয়েছে কিন্তু লাশের কোন হদিস করতে পারেনি। তবে তিনি জানান, লাশের সন্ধানে পুলিশ কোন ডুবুরির সাহায্য নেননি। তবে অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে। পক্ষান্তরে নিহত মাহফুজের বড় ভাই এড. রাসেল সাংবাদিকদেরকে জানিয়েছেন, মাহফুজের লাশ উদ্ধারে পুলিশ বেশী আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
নিহতের বড় ভাই এড. রাসেল জানিয়েছেন, গত ১ জুন থেকে ঘাতিকা রাবেয়া পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। এরই মধ্যে রাবেয়া বাদী হয়ে গত ৫ জুন নরসিংদী সদর মডেল থানায় নিহত মাফুজ সরকার, শাহিন নামে দুই জনের বিরুদ্ধে বলাৎকারের কাউন্টার মামলা করেছে। পুলিশ হেফাজতে থেকে রাবেয়া থানায় কাউন্টার মামলা করার সুযোগ পায় কিভাবে। তিনি আশংকা প্রকাশ করেন যে, ঘাতিকা রাবেয়ার পিছনে বড় ধরনের কোন শক্তি কাজ করছে। এ শক্তির প্রভাবে মাহফুজ হত্যাকান্ড ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার ষড়যন্ত্র চলছে। ঘাতিকা রাবেয়া আদালতে দেয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দীতে বলেছে ২৭ মে সন্ধ্যার দিকে প্রথম তারাবির দিন মাহফুজের খন্ডিত লাশ দুটি ট্রাভেল ব্যাগে ভর্তি করে নরসিংদী থানার ঘাট থেকে মরিচাকান্দির উদ্দেশ্যে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে রওয়ানা হয়। তখন অপর হত্যাকারী শাহাদাৎ তার সাথে ছিল। পরে মাঝ পথে লাশ ভর্তি ব্যাগ দুটি নদীর পানিতে ফেলে দেয়। এরপর মরিচাকান্দি গিয়ে পুলিশের কাছে ধরা পরে’। ঘাতিকা রাবেয়ার বক্তব্য যদি সঠিক ধরে নেয়া হয় তবে সে ২৭ মে সন্ধ্যার পর থেকেই পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। সেখান থেকে সে মুক্তি পেলো কিভাবে এবং তার সহযোগী হত্যাকারী শাহাদাৎ কোথায় ছিল। পরবর্তীতে ১ জুন ঘাতিকা রাবেয়াকে আমরা তথ্য দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেই। ১ জুনের পর থেকে ৬ জুন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়ার পূর্ব পর্যন্ত রাবেয়া পুলিশের হেফাজতে ছিল। পুলিশ হেফাজতে থেকে ভিকটিমের বিরুদ্ধে কিভাবে কাউন্টার মামলা দায়েরের সুযোগ পায়, এনিয়ে নরসিংদীর আইনজীবী ও সচেতন মহলে নানা প্রশ্নের উদ্রেক করেছে।
এব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নুরে আলম হোসাইনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদেরকে জানান, ঘাতিকা রাবেয়া পুলিশের সাথে ১৬১ ধারায় স্বীকারোক্তি দানকালে যে বক্তব্য দিয়েছে, তার চেয়ে স্পষ্টভাবে বক্তব্য দিয়েছে ১৬৪ ধারা জবানবন্দীতে। তবে সে পুলিশের কাছে যা বলেছে তার অনেক কিছুই আদালতে বলেনি। আদালতে সে অনেক কিছুই লুকিয়ে গেছে। মরিচাকান্দি পুলিশের হাতে সে ধরা পড়ার কথা সে সঠিক বলেনি। আমরা তাকে গ্রেফতার করেছি ৫ জুন রাতে। ১ জুন থেকে ঘাতিকা রাবেয়াকে পুলিশ হেফাজতে আটক প্রসঙ্গে নিহতের বড় ভাই এড. রাসেলের বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি কোন সন্তোষজনক বক্তব্য দিতে পারেনি।
রাবেয়া বলেছে সে নিজেই মাহফুজকে ছুরি দিয়ে গরুর মত গলা কেটে হত্যা করেছে। পরে তাকে বাথরুমের ভিতরে নিয়ে সে এবং শাহাদৎ হোসেন রাজু মিলে প্রথমে দেহ থেকে মাথা আলাদা করে, পরে তার হাত পা দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে একাধিক টুকরা করে। পরে সিনথেটিক জাতীয় ব্যাগে ভরে লাশটি ডীপ ফ্রিজে রেখে দেয়। পরদিন শনিবার রাতে ট্রাভেল ব্যাগে ভর্তি করে লাশটি নিয়ে মেঘনার পানিতে ফেলে দেয়। স্বীকারোক্তিতে ঘাতিকা রাবেয়া পুত্রকে বলাৎকারের কথা বললেও এলাকার লোকজন বলেছে প্রকৃত পক্ষে রাবেয়ার সাথেই মাহফুজের অনৈতিক সম্পর্ক ছিল। মাহফুজ নিজে নেশা জাতীয় দ্রব্য পান করতো এবং ব্যবসা করতো। পাশাপাশি রাবেয়াও নেশা পানকরতো। রাবেয়ার স্বামী বিদেশে থাকার সুযোগ নিয়ে রাবেয়া মাহফুজের সাথে অনৈক সম্পর্ক গড়ে তুলে। পরে মাহফুজের সাথে যে কোন ঘটনা নিয়ে ঝগড়া হয়। মাহফুজ রাবেয়ার সাথে অনৈতিক সম্পর্কের কথা ফাঁস করে দেয়ার আশংকায় রাবেয়া তাকে হত্যা করে থাকতে পারে। পুলিশ সুষ্ঠু তদন্ত করলে এসব তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।