বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর কাছে প্রস্তাবিত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে সুইচ-সকেট পার্টস আমদানির ক্ষেত্রে মেটাল পার্টসের জন্য আলাদা করে বাস্তবসম্মত ও যৌক্তিক ট্যারিফ ভ্যালু নির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন দেশীয় উদ্যোক্তারা। দেশীয় শিল্প মালিকরা বলছেন, সুইচ-সকেট তৈরিতে ব্যবহৃত অন্যতম পার্টস হচ্ছে মেটাল ও প্লাস্টিক। বিদ্যমান শুল্ক ও কর নীতিতে এসব পার্টসের জন্য স্ব স্ব এইচএস কোডের বদলে ‘সুইচ-সকেট পার্টস’ নামক সাধারন এইচএস কোড রয়েছে। ফলে মেটাল পার্টস ‘যন্ত্রাংশ’ হিসেবে প্রকৃত মূল্যের চেয়ে অনেক কম অর্থাৎ প্রতিকেজি ২ দশমিক ৫ মার্কিন ডলার ট্যারিফ ভ্যালু দেখিয়ে আমদানি করা হচ্ছে। অথচ, দেশেই ব্রাস ও ব্রোঞ্জ শিট প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে তৈরি প্রতিকেজি মেটাল পার্টসের খরচ হয় প্রায় ৮ থেকে ১২ ডলার। ফলে, দেশীয় উদ্যোক্তারা ক্ষতির মুখে পড়ছেন। কারন উৎপাদনের চেয়ে আমদানিই বেশি লাভজনক।
এ অবস্থায় এইচএস কোড আলাদা করে প্রকৃত মূল্যে মেটাল পার্টস আমদানি নিশ্চিত করা গেলে দেশীয় উদ্যোক্তারা প্রতিযোগী সক্ষম হবে। অন্যদিকে সরকারের রাজস্ব আয় অনেক বেড়ে যাবে। এ বিষয়ে এনবিআরকে একটি লিখিত প্রস্তাবনা দিয়েছে ইলেকট্রিক্যাল পণ্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন প্রস্তাবিত বাংলাদেশ ইলেকট্রিক্যাল ইলেকট্রনিক্স এন্ড হোম এ্যাপ্লায়েন্স ম্যানুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন (বিইইএমইএ)।
এ্যাসোসিয়েশন জানায়, ব্রাস শিট (কপার ও জিংকের সংমিশ্রণ), ব্রাস রড এবং ব্রোঞ্জ শিট (কপার ও টিনের সংমিশ্রণ) দিয়ে সুইচ-সকেটের মেটাল পার্টস তৈরি হয়। মেটাল/ধাতব পদার্থের আন্তর্জাতিক বাজার ‘লন্ডন মেটাল এক্সচেঞ্জ (এলএমই)’ এর চলতি মাসের ৫ তারিখের ‘ক্যাশ সেটেলমেন্ট প্রাইস’ অনুসারে প্রতি কেজি কপার এর দাম ছিল ৫ দশমিক ৫৯ মার্কিন ডলার, জিংক এর ২ দশমিক ৪৭ ডলার ও টিনের এবং টিনের ২০ দশমিক ২৫ মার্কিন ডলার। এছাড়া, প্রতি কেজিতে প্রিমিয়াম ও ফেব্রিকেশন কস্ট বাবদ আরো খরচ হয় এক থেকে দেড় ডলার।
এসব উপাদানের সংমিশ্রণ থেকে তৈরি প্রতি কেজি ব্রাস ও ব্রোঞ্জ শিটের এফ.ও.বি মূল্য দাঁড়ায় যথাক্রমে প্রায় ৫ দশমিক ৪২ ও ৯ দশমিক শূণ্য ১ মার্কিন ডলার। দেশীয় উদ্যোক্তারা এই মূল্যে এসব উপাদান ক্রয় করে নিজস্ব কারখানায় প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে তৈরি করছে বিভিন্ন ধরণের মেটাল পার্টস। যা পরবর্তীতে সুইচ-সকেট তৈরিতে ব্যবহার করছে। এ ক্ষেত্রে মেটাল পার্টসের মৌলিক উপাদানগুলো প্রক্রিয়াজাতকরনে ব্যবহৃত মেশিনারিজ ও এর অবচয়, কাঁচামালের উপচয়, শ্রম মজুরি, ইউটিলিটি চার্জসহ বিভিন্ন ধরণের খরচ যুক্ত হয়। এতে করে, নিজস্ব কারখানায় ব্রাস ও ব্রোঞ্জ শিট থেকে তৈরি প্রতিকেজি মেটাল পার্টস এর সর্বনি¤œ গড় উৎপাদন মূল্য দাঁড়ায় যথাক্রমে ৮ ও ১২ মার্কিন ডলার।
কিন্তু, বর্তমান শুল্ক ও কর কাঠামোতে এইচএস কোড-৮৫৩৮.৯০.৯০ তে ‘সুইচ-সকেট পার্টস’ উল্লেখ করে প্রতি কেজির ট্যারিফ ভ্যালু নির্ধারণ করা রয়েছে ২ দশমিক ৫ মার্কিন ডলার । আর এই সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা প্রকৃত মূল্যের চেয়ে কম মূল্য দেখিয়ে সুইস-সকেটের আমদানিকৃত সম্পূর্ণ তৈরি মেটাল পার্টসের শুল্ক ও কর পরিশোধ করছে ২ দশমিক ৫ ডলার ট্যারিফ ভ্যালুতে।
বিইইএমইএ’র মহাসচিব মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, বাংলাদেশে সুইচ-সকেটের সম্পূর্ণ চাহিদা মেটানোর সক্ষমতা রয়েছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর। কিন্তু, এ খাতের দ্রæত ও অর্থবহ বিকাশে বড় বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে সুইচ-সকেট পার্টস এর বিদ্যমান শুল্ক ও কর নীতি। এতে আন্ডার ইনভয়েসিং এর মাধ্যমে রাজস্ব ফাঁকির সুযোগ পাচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। সরকার উল্লেখযোগ্য পরিমান রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
মহাসচিব আরো বলেন, কর ফাঁকির মাধ্যমে আমদানিকৃত বিভিন্ন মেটাল পার্টস দিয়ে তৈরি সুইচ-সকেটের কাছে মূল্য প্রতিযোগি সক্ষমতায় পিছিয়ে পড়ছে দেশীয় কারখানায় তৈরি পণ্য। হুমকীর মুখে পড়ছে এ খাতে দেশীয় উদ্যোক্তাদের বিশাল বিনিয়োগ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।