Inqilab Logo

বুধবার, ২৯ মে ২০২৪, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ভারত ও চায়নার ঈদ সামগ্রীতে বাজার সয়লাব জমে উঠছে গাউছিয়ার পাইকারিহাট

| প্রকাশের সময় : ৯ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মোঃ খলিল সিকদার, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে : পবিত্র ঈদ উল আযহাকে সামনে রেখে দেশের বৃহত্তম পাইকারী কাপড়ের হাট গাউছিয়া মার্কেটে ক্রেতা সমাগম বেড়েছে। সেই সাথে বেড়েছে ভারতীয় কাপড় ও চায়না জুতা সামগ্রির পসরা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, প্রতি ঈদের ন্যায় এবার পবিত্র ঈদ উল ফিতরকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার গাউছিয়া পাইকারী কাপড়ের মার্কেট জমে ওঠেছে। নিয়মিত প্রতি মঙ্গলবার এ হাট বসলেও রোজা শুরু হওয়ার পর থেকেই প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ক্রেতা বিক্রেতা সমাগম বাড়ায় বেড়েছে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক ব্যস্ততা। বাহারী তৈরী পোশাকের পসরাগুলোতে ঘুরে ঘুরে স্থানীয় ক্রেতারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও দেশীয় কাপড়কে পাশ কাটিয়ে কিনছে বিদেশী কাপড়। বিশেষ করে ভারতীয় বিভিন্ন ব্রান্ডের কাপড় কিনে নিচ্ছেন আপন জনের জন্য। অপরদিকে জুতার দোকানে দেখা গেছে চায়না ও ভারতীয় জুতা সামগ্রিতে সয়লাব। সাধারন ক্রেতা চাহিদা থাকায় এমন বিদেশী পন্যের দিকে ঝুঁকছে বিক্রেতারা। বাজারে আসা দেশী কাপড়ের প্রতি অনীহা দেখা গেছে ক্রেতা সাধারণদের।
সূত্র জানায়, ভুলতা গাউছিয়া মার্কেট থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকাররা যে কোন উৎসব ও প্রয়োজনে কাপড় কিনে নিয়ে যায়। এ মার্কেটের ২টি ইউনিটে প্রায় ৩ হাজার দোকান রয়েছে। এসব দোকানের বেশির ভাগই পাইকারী দোকান। এছাড়াও ভাই ভাই মাকের্ট, তাঁত বাজার মার্কেট, আওয়াল মাকের্ট ও হক সুপার মার্কেটসহ ১০টি আলাদা মার্কেটের রয়েছে আরো বিভিন্ন পন্যের প্রায় আরো ২ হাজার দোকান পাট। এসব দোকান পাটের ৭৫ ভাগই কাপড়ের দোকান। আর এসব কাপরের দোকানে সাজানো দেখা গেছে বিদেশী কাপড়। কারন হিসেবে দোকান মালিক ও কাপর ব্যবসায়ীরা জানান , ক্রেতা সাধারন বিদেশী পন্যের প্রতি আকৃষ্ট হওয়ায় এ সমস্যা তৈরী হয়েছে। দোকান ঘরে প্রবেশ করেই ভারতীয় কিনা জানতে চায়। মূলত ভারতীয় হলেই ক্রেতারা কিনতে চায়। আবার জুতার দোকানে প্রবেশ করেই চায়না সু খুজে। অপরদিকে শিশুদের তৈরী কাপড়ের বেশির ভাগই চিন দেশের আমদানীকৃত। দেশী কাপড়গুলোর দাম কম থাকায় কেবল নিন্ম মধ্যবিত্তরাই ব্যবহার করছে দেশী কাপর এমন মন্তব্যও করেন তারা।
গাউছিয়া মার্কেটের তামিম ফ্যাশনের মালিক সাইফুল ইসলাম জানান, দেশী ও বিদেশী উভয় প্রকার কাপড় রয়েছে তার ফ্যাশন হাউজে। পাইকারীভাবে এসব কাপর যায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। তাই এ হাটেও দুঃখজনকভাবে বিদেশী কাপড়ের চাহিদা বেশি। তিনি আরো জানান, পাঞ্জাবীর কথা শুনলেই ভারতীয় সিল্ক,কাথান,সামুরাই,বলাকা,কৃষ্ণা ইত্যাদি মড়ক খুঁজেন। আবার মেয়েদের বিভিন্ন কাপরের জন্য ওয়েস্টার্ন ড্রেসের কদরও রয়েছে। তাই তার দোকানেও রাখা হয়েছে এ ধরনের সামগ্রি। অন্যদিকে দেশীয় জামদানী ও তাঁতের শাড়ীর বেশ কদর থাকায় এ মার্কেটের বেশির ভাগ দোকানেই পাওয়া যাচ্ছে এ ধরনের কাপড়। দেশীয় তাঁতের লুঙ্গি, গামছা, মশারী ও বিছানার চাদরসহ বাহারী পোশাক সামগ্রি। তার দাবি অন্য ঈদের তুলনায় এ বছর আগে থেকেই ক্রেতা সমাগত বেড়েছে। ঈদের নিকটবর্তী সময়ে ভীর এড়াতে সাধারন খুচরা ক্রেতারা ভির করছে। অপরদিকে প্রতি মঙ্গলবার পাইকাররা আসায় এ সময় ব্যস্ততা আরো বেড়ে যায়। সূত্র জানায়, এ মার্কেটের কাপরগুলোতে পাইকারীভাবে দাম কম হলেও খুচরা বাজারে দাম হাঁকা হচ্ছে ৩ গুনেরও বেশি। ফলে ক্রেতা সন্তুষ্টি পরিণত হয়েছে বিরম্বনায়।
বাটা সু ফ্যাশনের মালিক জাকারিয়া জানান, ঈদের কেনা কাটায় অন্যতম প্রয়োজনীয় পন্য জুতা। এ জুতার বাজার ও রয়েছে চায়নার দখলে। এছাড়াও থাইল্যান্ড,নিউইয়র্কসহ ভারতীয় জুতা সামগ্রিও পাওয়া যাচ্ছে। তবে দেশীয় লেডিস ফ্যাশনগুলো বিদেশী জুতা সামগ্রির তুলনায় এগিয়ে রয়েছে। তিনি আরো জানান, সাধারন ক্রেতাদের কাছে চায়না জুতা সামগ্রির বেশ কদর রয়েছে। তাই অন্য পন্যের পাশাপাশি চায়না জুতা সামগ্রি রাখা হয়েছে। এসব পন্য ৫শত টাকা শুরু করে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে এখানে। এছাড়া দেশী জুতা সামগ্রি বিক্রি হচ্ছে ৩ শত টাকা থেকে শুরু করে ১ হাজার টাকায়।
এ বিষয়ে গাউছিয়া কর্র্পোরেশনের মালিক মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভুঁইয়া বলেন, এই পাইকারী কাপড়ের হাটে দেশী কাপড়ই বেশি রাখা হয়েছে। পাইকাররা এখান থেকে দেশী কাপড়ও কিনে নেন। তবে খুচরা ক্রেতাদের জন্য বিদেশী তৈরী পোশাকের চাহিদা থাকায় দোকানীরা এ ধরনের কাপড় বিক্রি করছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ