Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চাঁদপুরে বোরো উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি

প্রবল বৃষ্টিতে ফসল নষ্ট

| প্রকাশের সময় : ৯ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

চাঁদপুর জেলা সংবাদদাতা : প্রবল বৃষ্টিপাতে চাঁদপুর জেলার ক’টি উপজেলায় ইরি-বোরোর পাকা ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪ হাজার মে. টন ধান কম উৎপাদন হয়েছে। যদিও অন্যান্য বছর কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের নির্ধারণ করা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদন হতো। ফলে কোনো কোনো বছর বলা হতো বাম্পার ফলন।
২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে ৮ উপজেলায় ইরি-বোরো চাষাবাদ হয়েছে ৬১ হাজার ৬ শ’ ৭২ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন হয়েছে ২ লাখ ৪০ হাজার মে. টন। চাঁদপুরে কৃষক হাইব্রিড, স্থানীয় ও উন্নত ফলনশীল এ তিন জাতের ইরি-বোরোর চাষাবাদ করে থাকে। কম-বেশি সব উপজেলাই ইরি-বোরোর চাষাবাদ হয়। কোনো কোনো উপজেলার প্রবল বৃষ্টিতে এ বছর ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪ হাজার মে.টন কম উৎপাদন হয়েছে বলে চাঁদপুর খামার বাড়ি কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে।
চাঁদপুর সেচ ও মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্প, মতলব দক্ষিণ ও হাজীগঞ্জে ব্যাপক ইরি-বোরোর চাষাবাদ হয়। জেলার তফসীলি ব্যাংকগুলো কৃষি উৎপাদনের জন্যে চলতি অর্থবছর ১শ’ ৮ কোটি ৯১ লাখ ৪২ হাজার টাকা কৃষি ঋণ ও দারিদ্রবিমোচন খাতে বিতরণ করেছে।
চাঁদপুর খামার বাড়ি কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের দেয়া সূত্রে মতে, চলতি বছর চাঁদপুর জেলায় ৬২ হাজার ৫শ’ ৯৬ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ৪৪ হাজার ৪শ’ ৮১ মে.টন। অথচ চলতি বছরে চাঁদপুরে ৬১ হাজার ৬শ’ ৭২ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয় এবং উৎপাদন ২ লাখ ৪০ হাজার মে.টন।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, চাঁদপুর সদরে ৫ হাজার ৬ শ’ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ এবং উৎপাদন হয়েছে ২০ হাজার ৯শ’২৫ মে.টন। মতলব উত্তরে ৯ হাজার ১শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ এবং উৎপাদন হয়েছে ৩৬ হাজার ৪শ’ ৫২ মে.টন।
মতলব দক্ষিণে ৪ হাজার ৭ শ’ ৭০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ এবং উৎপাদন হয়েছে ১৯ হাজার ৫শ’ ২৬ মে.টন। হাজীগঞ্জে ৯ হাজার ৪ শ’ ৪৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ এবং উৎপাদন হয়েছে ৩৮ হাজার ৬ শ’ ৫৫ মে.টন।
শাহারাস্তিতে ৯ হাজার ৬ শ’ ২ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ এবং উৎপাদন হয়েছে ৩৭ হাজার ৮শ’ ৯২ মে.টন। কচুয়ায় ১২ হাজার ১শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ এবং উৎপাদন হয়েছে ৪৪ হাজার ৯শ’ ৯৮ মে.টন।
ফরিদগঞ্জে ১০ হাজার ৯৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ এবং উৎপাদন হয়েছে ৩৮ হাজার ৯ শ’ ৮৫ মে.টন এবং হাইমচরে ৬ শ’ ৬০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ এবং উৎপাদন হয়েছে ২ হাজার ৫শ’ ৭১ মে.টন।
কৃষক বর্তমানে লাঙ্গলের পরিবর্তে ট্রাক্টর, হোচার পরিবর্তে বিদ্যুৎ চালিত স্যালো বা ডিপ নলকূপ দিয়ে পানি সেচ, গোবরের সারের পরিবর্তে বিভিন্ন প্রকার উন্নত রাসায়নিক সার ব্যবহার, বোনার পরিবর্তে সারিবদ্ধ ভাবে ধান রোপণ, উন্নত বীজ, পরিমিত কীটনাশকের ব্যবহার, নতুন নতুন জাতের উদ্ভাবন ও প্রযুক্তির ব্যবহার ইত্যাদি কারণে ইরি-বোরোর ফলন ভালো হয় । এ ছাড়াও চাঁদপুর নদীবিধৌত কৃষি ভিক্তিক অঞ্চল হওয়ায় কৃষক সময়মত চাষাবাদ,বীজ রোপণ বা বীজবপন করে সঠিক পরিচর্যায় পারদর্শী।
কৃষিবিদ আবদুল মান্নান জানান, ‘বৃষ্টিপাতের ফলে উৎপাদন কিছুটা কম হয়েছে। তবে ফলন ভালো হয়েছে। সরকার ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে চাঁদপুরের চাষীদের সার ও উন্নতমানের বীজ দিয়ে কৃষকদের সহায়তা দিয়েছে। বিদ্যুতের ক্ষেত্রে ২০ভাগ ভর্তূকি দিয়েছে।’ তবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর কৃষক আগের প্রণোদনা ছাড়া অন্য কোনো সহায়তা পাননি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ