Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছেই, সবার মধ্যে আতঙ্ক

| প্রকাশের সময় : ৮ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মশক নিধনই রক্ষা পাওয়ার একমাত্র মাধ্যম ডা. মোজাহেরুল হক
স্টাফ রিপোর্টার : প্রতিদিনই বাড়ছে ভাইরাসজনিত চিকুনগুনিয়া রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। মানুষের মুখে মুখে এখন এক ধরনের আতঙ্ক কাজ করছে। অনেকেই বলছেন চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। ফেসবুক, টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই রোগে আক্রান্তের বিষয়টিও উঠে এসেছে। বিশেষ করে জয়েন্টে জয়েন্টে ব্যথা এবং ১০৩/১০৪ জ্বরের কথা সবার এখন সবার মুখে মুখে। সকলের মধ্যেই চিকুনগুনিয়া নিয়ে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। যদিও চিকুনগুনিয়া নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে তথ্যে খুবই নগণ্য বলা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেঙ্গুবাহী এডিস মশাই চিকুনগুনিয়ারও বাহক। এ মশার উৎপত্তিস্থলগুলোতে কার্যকর মশক নিধন কার্যক্রম চালালে এ রোগের প্রকোপ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
‘গত কয়েকদিন ধরে চিকুনগুনিয়া জ্বরে ভুগছি, জ্বর সেই সঙ্গে শরীরের জয়েন্টে জয়েন্টে কি যে ব্যথা, প্রথমে স্ত্রী, তারপর ছেলেমেয়ে ও এখন আমি। সবাই দোয়া করবেন প্লিজ।’ ইদানিং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক খুললেই এ ধরনের পোস্ট চোখে পড়ছে। কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, চলচ্চিত্র ও টিভি অভিনেতা-অভিনেত্রী সকল পেশার লোকজনই চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অসহ্য যন্ত্রণার কথা লিখছেন।
কেউ কেউ আবার ডেঙ্গু জ্বরেও আক্রান্ত হওয়ার তথ্য দিচ্ছেন। তবে চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গু নিয়ে ফেসবুকে মাতামাতি থাকলেও স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসেবে আক্রান্তের সংখ্যা খুবই কম।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, সা¤প্রতিক সময়ে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে মাত্র ৩৩ জন সম্ভাব্য চিকুনগুনিয়ার রোগী ভর্তি হন। বিভিন্ন হাসপাতালের মধ্যে সেন্ট্রাল হাসপাতালে ১২, সালাউদ্দিনে ৮, মিটফোর্ডে ৫ জন, ইবনেসিনায় ৩, পপুলারে ২, মুগদা ১, স্কয়ারে ১ ও শহীদ সোহরওয়ার্দীতে ১ জন ভর্তি হন।
এছাড়া চলতি বছর ডেঙ্গু জ্বরে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩২২ জন। এর মধ্যে চলতি মাসে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মাত্র ২ জন। বর্তমানে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন মাত্র ৯ জন রোগী।
ন্যাশনাল ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেন্টার ও স্বাস্থ্য অধিদফতরেরর রোগ নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ইনচার্জ ডা. আয়েশা আক্তার গতকাল বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে স¤প্রতি বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করে ডেঙ্গুর সঙ্গে চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্তদেরও হিসাব পাঠাতে নির্দেশনা দেয়া হয়।
কিন্তু পরীক্ষা না করে নিশ্চিত না হয়ে চিকুনগুনিয়া বলতে না পারায় সংখ্যায় কম আসছে। যে ৩৩ জনের চিকুনগুনিয়ার রোগীর তথ্য পাঠানো হয়েছে তারা ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত না হওয়ায় চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত বলে ধারণা করেছেন চিকিৎসকরা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের ডিন প্রফেসর ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ জানান, গত কয়েকমাসে প্রাইভেট চেম্বারে তিনি চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত কয়েকশ রোগী পেয়েছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাউথ ইস্ট এশিয়া রিজিওন এর সাবেক রিজিওনাল অ্যাডভাইজার প্রফেসর এম মোজাহেরুল হক বলেন, চিকুনগুনিয়া নিয়ে জনমনে এক ধরনের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ডেঙ্গুবাহী এডিস মশাই চিকুনগুনিয়ারও বাহক। এ মশার উৎপত্তিস্থলগুলোতে কার্যকর মশক নিধন কার্যক্রম চালালে এ রোগের প্রকোপ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ