Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার

| প্রকাশের সময় : ৭ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বীর নিবাস আর কমপ্লেক্স নির্মাণ কাজের বাস্তবায়নে কুমিল্লা এলজিইডি
সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : বর্তমান সরকারের রূপকল্প বাস্তবায়নে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর-এলজিইডি একটি অন্যতম সংস্থা। উন্নত দেশের উপযোগী উন্নত গ্রাম ও নগর গড়ার লক্ষ্য নিয়ে এলজিইডি কাজ করছে। কুমিল্লার ১৬ উপজেলায় এলজিইডির হাত ধরে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ডের মধ্যে আলোচনায় উঠে এসেছে কুমিল্লার ভূমিহীন মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য লাল-সবুজের আবাসন ব্যবস্থা আর জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে পারস্পারিক বন্ধন সুদৃঢ় করতে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণের বিষয়টি। কুমিল্লা এলজিইডির তত্ত¡াবধানে লাল-সবুজের ‘বীর নিবাস’ এবং ‘মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স’ নির্মানের বিষয়টি অগ্রযাত্রার আট বছরের একটি অন্যতম সাফল্য বলে মনে করছেন কুমিল্লার বিশিষ্টজনরা।
কুমিল্লার তিতাস উপজেলার বাতাকান্দি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রেমানন্দ রায় লাল-সবুজের পতাকা আর মানচিত্রের জন্য জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন সেই ৪৬ বছর আগে। ভূমিহীন ও অস্বচ্ছল এই মুক্তিযোদ্ধার জীবন কেটেছে অনেক কষ্টে। মাথা গোঁজার একটু ঠাঁই ছিলো না। ৪৬ বছর পর জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারস্বরূপ লাল-সবুজের বীর নিবাসে প্রেমানন্দের মতো কুমিল্লার ১৬ উপজেলায় ১৩২জন ভ‚মিহীন ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধার ঠিকানায় আলো জ্বলতে শুরু করেছে। কুমিল্লা এলজিইডির তত্ত¡াবধানে ৯৪টি বীর নিবাসের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে সংশ্লিষ্ট মুক্তিযোদ্ধার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাঁরা পরিবার পরিজন নিয়ে নির্মিত এসব বাড়িতে সাচ্ছন্দে বসবাস করছেন। প্রধানমন্ত্রীর উপহারস্বরূপ লাল-সবুজের বীর নিবাস পেয়ে ভ‚মিহীন ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারা এখন আনন্দে উচ্ছ¡সিত। কুমিল্লা এলজিইডি বাকিগুলোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
এলজিইডি-কুমিল্লা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালে সরকার ভ‚মিহীন ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের বাসস্থান নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করে। এ প্রকল্পের আওতায় ২০১৭ সালের এপ্রিল পর্যন্ত কুমিল্লা জেলার ১৬টি উপজেলায় ১৩২জন ভূমিহীন ও অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের তালিকা করা হয়। তারমধ্যে দেবিদ্বারে ১৯টি চৌদ্দগ্রামে ১৭টি, মুরাদনগরে ১৬টি, ব্রাহ্মণপাড়ায় ১৪টি, আদর্শ সদরে ৮টি, সদর দক্ষিণে ৮টি, বুড়িচংয়ে ৮টি, বরুড়ায় ৭টি, নাঙ্গলকোটে ৭টি, চান্দিনায় ৬টি, দাউদকান্দিতে ৬টি, হোমনায় ৫টি, তিতাসে ৪টি, মেঘনায় ৩টি, মনোহরগঞ্জে ২টি ও লাকসামে ২টি পরিবার রয়েছে। এসব পরিবারের জন্য প্রতিটি ৯ লাখ ১৫ হাজার টাকা প্রাক্কলিত মূল্যের বাসস্থানে ২টি শয়ন কক্ষ, ১টি বসার কক্ষ, ১টি রান্নাঘর, ১টি বারান্দা, ১টি টয়লেট ও ১টি টিউবওয়েলসহ ৫শ’ বর্গফুটের আবাসন এবং গৃহের বাইরে ১টি পাকা উঠান, ১টি গোয়ালঘর ও ১টি পোলট্রি শেড থাকছে। বাসস্থানের দেয়ালে সবুজ আর জানালায় দেয়া হয়েছে লাল রঙ। লাল-সবুজের রঙে অপরূপ বীর নিবাস যে কারো দৃষ্ঠি কাড়বে।
এদিকে কুমিল্লার হাজারো মুক্তিযোদ্ধা উচ্ছ¡সিত হয়ে উঠেছেন পর্যায়ক্রমে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মান হওয়ার আনন্দে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুন:প্রতিষ্ঠা ও তা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে দেশের প্রত্যন্ত এলাকা পর্যন্ত ছড়িয়ে দিতে উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মানের যে নির্দেশনা দিয়েছেন এলজিইডি তা বাস্তবায়ন করছে। কুমিল্লায় ৮টি উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মানের কাজ চলছে। তারমধ্যে লাকসাম ও দাউদকান্দি উপজেলায় নির্মান কাজ শেষে ভবন হস্তান্তর করা হয়েছে। আর ব্রাহ্মণপাড়া, চৌদ্দগ্রাম, চান্দিনা, দেবিদ্বার, মেঘনা ও বুড়িচং উপজেলায় কাজ চলছে। তিনতলা বিশিষ্ট ভবনের প্রথম ও দ্বিতীয়তলা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এবং তৃতীয় তলায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের অফিস, মিউজিয়াম, লাইব্রেরী ও সম্মেলন কক্ষ থাকবে।
এলজিইডি কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী স্বপন কান্তি পাল জানান, ‘কুমিল্লার ১৬টি উপজেলায় ভ‚মিহীন ও অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ১৩২টি বাসস্থান নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে ৩৫টি প্যাকেজের আওতায় ১২১টি আবাসন নির্মাণের অনুমোদন পাওয়া গেছে এবং গুণগতমান বজায় রেখে ৯৪টি বাসস্থানের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রতিটি বাসস্থানের নামকরণ করা হয়েছে ‘বীর নিবাস’। বাকিগুলোর নির্মাণ কাজ দ্রæতগতিতে চলছে। এছাড়াও ৮টি উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মানের অনুমোদন পাবার পর কুমিল্লা এলজিইডিতা বাস্তবায়নে কাজ শুরু করে। দুইটি ভবন নির্মান শেষ হয়েছে। অন্যগুলোর কাজ চলছে। আর কুমিল্লার বাকি ৮টি উপজেলাতেও মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মান হবে। বীর নিবাস ও মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মান প্রকল্পটি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বর্তমান সরকারের এক অনন্য উপহার। এলজিইডি সারা দেশে বর্তমান সরকারের স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আর এসব কাজে সংশ্লিষ্ট রাখতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছি।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ