Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আস্তিক, নাস্তিক, বামপন্থী-চরমপন্থীতে নৌকা এখন ডুবু ডুবু

সংসদে কাজী ফিরোজ রশিদ এমপি

| প্রকাশের সময় : ৭ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : জাতীয় পাটি প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ এমপি বলেছেন, আস্তিক, নাস্তিক, বামপন্থী-চরমপন্থী সবাইকে নৌকায় তুলেছেন। এত পরিমাণ উঠেছে যে, নৌকা এখন ডুবু ডুবু। এই আস্তিক-নাস্তিক নিয়া সাগর পাড়ি দিবেন ক্যামনে...? গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে সম্পূরক বাজেটের ওপর বক্তৃতায় প্রেসিডিয়াম সদস্য এসব কথা বলেন। কাজী ফিরোজ রশিদ এমপি বলেন, ৭০ সালের নৌকা আর এখনকার নৌকা এক না। ৭০ সালের নৌকা ছিল ছোট। ছোট নৌকা নিয়েই কিন্তু বঙ্গবন্ধু সাড়ে ৭ কোটি লোক নিয়া দেশ স্বাধীন করেছিলেন। এখন বাজেট অনেক বড়, নৌকাও অনেক বড়। নৌকায় কারে উঠায়ছেন এখন? আস্তিক, নাস্তিক, বামপন্থী-চরমপন্থী সব নৌকায় উঠাইছেন। এত পরিমাণ উঠছে যে, নৌকা এখন ডুবো ডুবো। এই আস্তিক নাস্তিক নিয়া সাগর পাড়ি দিবেন ক্যামনে? যেখানে আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতারা উঠতে পারে নাই। ভোট দেন দেখবেন, এই আস্তিক-নাস্তিক আর হাইব্রিড আওয়ামী লীগারদের সাথে ত্যাগী আওয়ামী লীগারদের দূরত্ব বেড়ে গেছে। জাতীয় পাটি প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, খরচ তো হয়েই গেছে টাকা। এখন আইনে সংসদে, কেন? এই টাকা হচ্ছে জনগণের টাকা। জনগণের ট্যাক্সের টাকা। খরচ কইর‌্যা আইসেন আমাদের  বৈধতা দেন। আমাদের বৈধতা তো দিতেই হবে। কারণ সরকারি দল হ্যাঁ-না ভোটে জিতে যাবে।  বৈধতা হয়েই গেল। এটা অনৈতিক অসাংবিধানিক। বাজেট বিষয়ে এমপি বলেন, ছোটবেলায় পুতুলকে মানুষ ভেবে খেলি। আরো একটু বড় হলে মানুষকে পুতুল ভেবে খেলি। মাননীয় অর্থমন্ত্রী। দেশের সমস্ত জনগণকে মনে করেছেন পুতুল। পুতুলের যেমন বাকশক্তি নাই। এই দেশের ১৬ কোটি মানুষও বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেছে, তাদের কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। তাদের বোধ শক্তি নেই। তাহলে কি এখানে এ বাজেট আসে? ৪৯টি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ২৭টি মন্ত্রণালয় বেশি খরচ করে ফেলেছে। একজন বলেছে ১৮ হাজার  কোটি টাকা মাত্র। এক লাখ কোটি টাকা যেহেতু পাচার হয়ে গেছে দেশ থেকে। তাহলে ওই ১৮ হাজার কোটি টাকা কিছুই না। সেই জন্য এটা বলে।
কালকে একজন হুইপ বললেন দ্রব্যমূল্য যা বেড়েছে তাতেও মানুষ খুশি। এ কথা শুনলে মানুষ হাসে। আপনি তো আলো বাতাস সবকিছু ফ্রি পান। আপনারা বুঝতে পারবেন না। মানুষের ইনকাম বাড়ে নাই। রাজপথে ইফতারি খেয়ে রোজা ভাঙতে হয়। সেজন্য তাদের ব্যথার কথা বুঝবেন না। জনগণের টাকা ভাঙলেন, সংসদের কাছে আইছেন বৈধতা নিতে। ফিরোজ রশিদ বলেন, অর্থমন্ত্রী এই টাকা খরচ করার পিছনে যুক্তি দেখান। মন্ত্রীরা বিরাট বিরাট বহর নিয়ে বিদেশে যান। এমন এমন মন্ত্রী আছেন বছরে ৯ মাস বিদেশ থাকেন। কারণ কোথাও কোনো জবাবদিহীতা নাই। ফিরোজ রশিদ বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সময় তিনি (আবুল মাল আবদুল মুহিত) ২টি বাজেট দিয়েছেন। খুব ভাল বাজেট দিয়েছেন। ৫ হাজার ৮০০ কোটির বাজেট। এ বাজেট দিয়েই আমরা ৪৬০টি উপজেলা করেছিলাম, জেলা পরিষদ করেছিলাম। অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ব্যাংকে আমানত রাখবেন আবাগারি শুল্ক বসিয়েছেন। আগে সুদ থেকে টাকা কাটা হতো এখন কাটবেন আসল থেকে। ভোটের আগে বাজেট... ভোট যে কি পরিমাণ নষ্ট হয়েছে রাস্তায় না গেলে বুঝবেন না। তিনি বলেন, সরকারে গেলে দুই ধরনের লোকের অভাব হয় না। একটি হলো তেল দেওয়া আরেকটি হলো বাঁশ দেওয়া। ব্যাংক লুট যারা করেছে তাদের বিচার না করে জনগণকে...। জনগণকে পুতুল ভাববেন না। জাপার আরেক সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, একজন সিনিয়র মন্ত্রী বলেছেন সমুদ্র কি নৌকা দিয়ে পাহারা দেয়া যায়? যায় না। সমুদ্র পাহারা দিতে হলে জাহাজ কিনতে হবে। আমিও তাই বলবো। নৌকা দিয়ে কিছুই করা যাবে না। নৌকায় আপনারা সবাই উঠে পরেছেন। নৌকা এখন ডুবু ডুবু। তাই আমি আরো বলবো, নৌকা দিয়ে সমুদ্র পাহারা দেয়া যাবে না। নৌকা দিয়ে দেশের অর্থনীতি এগিয়ে নেয়া যাবে না। দেশের অর্থনীতি এগিয়ে নিতে হলে আরো কিছু লাগবে। কি লাগবে? লাঙল লাগবে। জাতীয় পার্টি দলীয় এই এমপি বলেন, গত ৩ বার লাঙল দিয়ে আমরা আপনাদের সাহায্য করেছি। তবে প্রবলেম কোথায় জানেন? আপনাদের সাহায্য করার পর ভুলে যান। এবারও ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাদের কি ভূমিকা ছিল। সেটা ভুলে গেছেন। ৩ জনকে দিয়ে সহায়তা করছি। আরও চাইলে সামনে বসে আছেন, দেয়া যাবে। সম্পূরক বাজেটের উপর মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আব্দুল ওয়াহাব এমপি (মাগুড়া-১), আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন এমপি (পটুয়াখালী-৩) বক্তব্য রাখেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ