Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে মনু-ধলাই নদীর ১১ স্থানে ভাঙন

| প্রকাশের সময় : ৬ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী
এস এম উমেদ আলী : প্রবল বর্ষন ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে মৌলভীবাজার জেলার বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক অবনতি ঘটেছে। মনুনদীর ৬ স্থানের ভাঙ্গন দিয়ে ও ধলাই নদীর নতুন এবং পুরাতন ৫ টি ভাঙ্গন দিয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করে বিস্তির্ণ এলাকা প্লাবিত করেছে। তলিয়ে গেছে বাড়ি ঘর, ফসলি জমি সহ সবজিক্ষেত। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ।
কয়েক দিনের ভারী বর্ষনে কুলাউড়া, রাজনগর ও কমলগঞ্জ উপজেলার ১০টি স্থানে মনু ও ধলাইনদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে শতাধিক গ্রাম পানির নীচে তলিয়ে গেছে। পানি বন্দী হয়ে পড়েছে বন্যায় আক্রান্ত এলাকার লক্ষাধিক মানুষ। কুলাউড়া উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর, টিলাগাও ইউনিয়নের মিয়ারপাড়া ও রাজনগর উপজেলার টেংরা ইউনিয়নের উজিরপুর ও কামারচাক ইউনিয়নের ভোলানগর চাটি কোনাগাঁও এবং কোনাগাঁও এলাকায় মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে গিয়ে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। ভাঙ্গনের ফলে ঐ এলাকার ৬০টি গ্রাম বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ খোলা আকাশের নিচে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। অপরদিকে কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের ঘোড়ামারা ও নাজাতকোনা নতুন করে ভাঙন দিয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করছে। এ ছাড়া কমলগঞ্জ পৌর এলাকার পুরাতন ভাঙ্গন দিয়ে উত্তর আলেপুর, বাদে করিমপুর ও করিমপুর  এলাকায় ধলাই নদীর ভাঙ্গন দিয়ে বন্যার পারি প্রবেশ করে অন্ততপক্ষে ৪০ গ্রাম বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। তিন উপজেলায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। তলিয়ে গেছে বাড়ি ঘর, রাস্তাঘাট, ফসলি জমি সহ সবজিক্ষেত।
স্থানীয়দের অভিযোগ ভাঙন দেখে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানালে কোন উদ্যোগ নেয়নি। এলাকার সাধারণ মানুষের উদ্যেগে বাঁধ রক্ষার চেষ্ঠা করেন তারা। শরীফপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জুনাব আলী জানান, শরীফপুর ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের এই ভাঙনের পানি মৌলভীবাজার শহরে গিয়ে পৌছবে। ক্ষতির পরিমাণ এখন নিরূপন সম্ভব হয়নি। তবে চাতলাঘাট এলাকায় দু থেকে আড়াইশ ফুট প্রতিরক্ষা বাঁধ নদীগর্ভে বিলীন গয়ে গেছে। সৃষ্ট ভাঙনের ফলে লোকালয়ে পানি প্রবেশ না করলেও মনু নদীর উপর নির্মিত ব্রীজটি মনে হয় আর রক্ষা করা সম্ভব হবে না। কুলাউড়া উপজেলার টিলাগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল মালিক জানান, ইউনিয়নের মিয়ারপাড়া ও খন্দকারের গ্রাম এলাকায় মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। শত শত মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করে ভাঙন রোধে চেষ্টা চালাচ্ছে।
কামারচাক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজমুল হক সেলিম জানান, সেহরির পর কোন এক সময়ে ভোলানগর এলাকায় মুন নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ এলাকায় প্রায় ১০০ ফুট এলাকা জুড়ে ভাঙন দেখা দেয়। এতে ভোলানগর, মিটিপুর, শ্যামর কোনা ও করাইয়ার হাওর এলাকায় কমপক্ষে ১৫ গ্রাম বন্যা কবলিত হয়। ভোলানগর গ্রামের যে স্থান দিয়ে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে, সেই ভাঙনের মুখে ফারুক মিয়ার বাড়িটি নদীর স্রোতে ভেসে গেছে। চেয়ারম্যান আরও ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বারবার বলার পরও তারা কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় এখন এই ভয়াবহ বিপদ হলো। পানি উন্নয়ন বোর্ড এর সহকারী প্রকৌশলী মকলিছুর রহমান জানায় মনু নদী মৌলভীবাজার শহরের চাঁদনীঘাট এলাকায় দূপুর ২ টায় বিপদ সীমার ৭৩ সেঃ মিঃ উপর দিয়ে ও মনু রেলওয়ে সেতুর কাছে ৭৩ সেঃ মিঃ বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপর দিকে কমলগঞ্জে ধলাই নদীর পানি বিপদ সীমার ২১ সেঃ মিঃ উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া চাতলাপুর, টগরপুর, কামারচাক, রনচাপ, ভাঙ্গারহাট সহ আরো কয়েকটি স্থানে মনু প্ররিক্ষা বাঁধে ফাটল দেখা দেয়ায় ঝুকিপূর্ণ রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারী বর্ষণ

৫ জুলাই, ২০২১
২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ