পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশের রাজনীতি ও সমাজ ব্যবস্থায় ইসলামী মূল্যবোধের ভিত্তিতে জাতীয় ঐক্য অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেছেন দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক আলহাজ্ব এ এম এম বাহাউদ্দীন। তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের সামনে থেকে যে মূর্তি অপসারণ করা হয়েছে সেটি কেবল একটি মূর্তি অপসারণই নয়। এর মাধ্যমে গোটা দেশে একটি জাতীয় ঐক্য তৈরি হয়েছে। ইসলামী মূল্যবোধের ভিত্তিতে এই ঐক্য তৈরিতে ইনকিলাব কাজ করে যাচ্ছে। গতকাল (রোববার) দৈনিক ইনকিলাবের ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ইনকিলাব কার্যালয়ে আয়োজিত দোয়া ও ইফতার মাহফিলে তিনি একথা বলেন। দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক বলেন, ইনকিলাব তার জন্মলগ্ন থেকে কখনই বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য সাধন, ব্যবসা প্রসার কিংবা অন্য কোন স্বার্থ হাসিলের জন্য কাজ করেনি। রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে রাজনৈতিক বিরোধ হয়েছে কিন্তু ইসলামী মূল্যবোধের ভিত্তিতে সমাজ গঠনে যে দর্শন সেটাতে সবসময় ইনকিলাব দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে। তিনি বলেন, ইসলামী ভাব ধারা, ইসলামী শিক্ষার বিষয়ে আগে মানুষের মধ্যে যে মনোভাব ছিল এখন সেটা অনেক পরিবর্তন হয়েছে। মানুষের মধ্যে সচেতনতা বেড়ে গেছে। এক সময় দেশের আলেম-ওলামারা তুচ্ছতাচ্ছিল্যের বিষয় ছিল। কিন্তু সেই আলেম-ওলামাদেরকে নিয়ে এখন টেলিভিশনগুলো টানাটানি করে, রাজনৈতিক দলগুলোও কাছে পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। সামনের দিকে তাদের গুরুত্ব আরও অনেক বেশি বেড়ে যাবে। এটা সম্ভব হয়েছে ইনকিলাবের কারণে।ইনকিলাব। তিনি বলেন, আলেম-ওলামা, ইসলামী মূল্যবোধ এবং এই সমাজ যাতে একটা ইসলামী মূল্যবোধ সম্পন্ন সমাজ গড়ে ওঠে সে জন্য ইনকিলাব কাজ করছে। সেই চিন্তা-চেতনার আলোকে লেখনি চালিয়ে যাচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ইনকিলাবের একটি সাফল্যে চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, মূর্তির বিষয় নিয়ে দেশের বেশিরভাগ গণমাধ্যম ও বুদ্ধিজীবিরা কান্নাকাটি শুরু করেছে। নিজের মা-বাবা মরলেও তারা এভাবে কান্নাকাটি করতো কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে। কিন্তু এটা শুধু মূর্তি অপসারিত হয়নি, এর মাধ্যমে বাংলাদেশে একটি জাতীয় ঐক্য তৈরি হয়েছে। এধরনের মূর্তি প্রদর্শন এদেশের সমাজ ও রাজনীতির জন্য ভালো না, শোভাও পায় না। এটা ইনকিলাবের সর্বশেষ ছোট একটি সাফল্য।
এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেন, এদেশের ইসলামী শিক্ষা, মাদরাসা, আলিয়া, কওমী সবক্ষেত্রে এখন যে অবস্থান সেটি ইনকিলাব প্রত্যাশিত। এই অবস্থান তৈরিতে ইনকিলাব কাজ করেছে। ইনকিলাবের দর্শনে সুদৃঢ় অবস্থানের বিষয়ে তিনি বলেন, পানি, সীমান্ত হত্যাসহ অন্যান্য বিষয়ে ভারতীয় আগ্রাসনের ব্যাপারে, চীনের সাথে বন্ধুত্ব সবকিছুতেই ইনকিলাব তার দর্শনে সুদৃঢ় অবস্থানে রয়েছে।
ইনকিলাব বৈরি পরিবেশেও আপোষ করেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইনকিলাবের ৩২ বছরে পর্দাপনে যেমন গৌরবের বিষয় রয়েছে পাশাপাশি এই সময়টা আমাদের একটা কঠিন দুর্যোগের মধ্য দিয়ে পার করছি। বৈরি প্রচারণা, পরিবেশের মধ্যেও ইনকিলাব তার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। তার আদর্শ থেকে এতটুকুও বিচ্যুত হয়নি। কোন ক্ষেত্রে আপোষ করেনি। এজন্য তিনি ইনকিলাবের সাংবাদিক, প্রশাসন, বিজ্ঞাপন, সার্কুলেশনসহ ইনকিলাব পরিবারের সকলকে ধন্যবাদ জানান।
ইনকিলাবকে আগামী দিনে আর পিছনের দিকে তাকাতে হবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অবস্থা যাই থাকুক; ইনকিলাব এখনকার চেয়ে আরো মজবুত অবস্থানে যাবে। ষড়যন্ত্রকারীরা অতীতেও ষড়যন্ত্র করেছে। এখনো অনেকেই এই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তিনি ষড়যন্ত্রকারীদের হেদায়তের জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া কামনা করেন। তিনি বলেন, যারা খারাপ কথা বলে, খারাপ চিন্তা করে আল্লাহ তাদের হেদায়ত করুন এবং চিন্তা চেতনাকে বিশুদ্ধ করুন। গালি দিয়ে, খারাপ কথা বলে ভাল কিছু হয় না।
এই সঙ্কটকালীন সময়ে ইনকিলাব যে টিমওয়ার্ক দেখিয়েছে তা অসাধারণ উল্লেখ করে সম্পাদক বলেন, যে টিম ওয়ার্ক ইনকিলাবের সাংবাদিক, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা দেখিয়েছে তা অভাবনীয়, অকল্পনীয়। যারা এখন ইনকিলাবে কর্মরত আছে তাদের জন্য সুবার্তা দিয়ে তিনি বলেন, এই টিম নিয়ে আগামী দিনে বাংলাদেশের রাজনীতিকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাবো এবং নেতৃত্ব পর্যায়ে থাকবে ইনকিলাব। সকলেই আমাদের কাছে আসবে এবং আমাদের সম্মান ও মর্যাদা অনেক বৃদ্ধি পাবে।
ইনকিলাবের সহকারী সম্পাদক উবায়দুর রহমান খান নদভী বলেন, ইনকিলাবের প্রতিষ্ঠাতা হযরত মাওলানা এম এ মান্নান (রহ:) শুধু ইনকিলাব প্রতিষ্ঠা করেননি। তার প্রতিষ্ঠিত দৃষ্টি নন্দিত স্থাপনা রাজধানীর মহাখালিস্থ গাউসুল আযম মসজিদ এবং দেশের মাদরাসা শিক্ষকদের একক এবং একমাত্র অরাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন। মাওলানা এম এ মান্নান ইসলামী বিপ্লবের চিন্তা থেকেই এই ইনকিলাব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি যে বীজগুলো বপন করেছেন তার সুফল এখন এদেশের মানুষ পেতে শুরু করেছে। এখন যারা ইসলামের ঐতিহ্য ও নিদর্শন রক্ষা এবং দেশ রক্ষার জন্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে তারা সকলেই মাওলানা এম এ মান্নান (রহ:) এবং ইনকিলাবের দর্শন ও আদর্শে শিক্ষিত।
ইনকিলাব দেশের সকল মানুষের পত্রিকা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইনকিলাব একটি অসাম্প্রদায়িক পত্রিকা। এসময় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা শাব্বির আহমদ মোমতাজী। কোরআন তেলাওয়াত এবং দোয়া পরিচালনা করেন ইনকিলাবের সিনিয়র সহকারী সম্পাদক মাওলানা একেএম ফজলুর রহমান মুন্সি। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমান, মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কল্যাণ সম্পাদক আজাদ হোসেন সুমন, কার্যনির্বাহী সদস্য সাঈদ খানসহ ইনকিলাবের পরিচালক, সাংবাদিক, কর্মকর্তা, কর্মচারীবৃন্দ। এদিকে ইনকিলাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দুপুর থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, পাবলিক রিলেশন্স এজেন্সির প্রতিনিধিরা ইনকিলাব ভবনে এসে সম্পাদকের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।