পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শুধু সনদ পাওয়ার জন্য নয়, দেশের শিক্ষার্থীদের জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক আলহাজ এ এম এম বাহাউদ্দীন। তিনি বলেছেন, শিক্ষা শুধু সনদ পাওয়ার জন্য নয়, শিক্ষার্থীদের ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে হবে। সারা দেশ থেকে আগত জমিয়তের নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সাপ্তাহে অন্তত একদিন ক্লাসে শিক্ষার্থীদের ইসলামি দিক নির্দেশনা দিন। এতে তারা আরও জ্ঞানার্জন করে মেধাবী হবে। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর মহাখালীর গাউসুল আজম কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের নির্বাহী কমিটির সভায় তিনি এ আহবান জানান।
এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেন, তথ্য প্রযুক্তির যত উন্নতি হচ্ছে ততই সারা বিশ্বে ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের (আলেম-ওলামা) গুরুত্ব বাড়ছে। আলেমরা কোথাও পিঠিয়ে নেই। এদেশের মানুষের কাছে বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন এখন সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য সংগঠন। জমিয়াতুল মোদার্রেছীন ওলি আউলিয়া ও ওলামা কেরামগণের সংগঠন। আগামীতে এ সংগঠন আরও মজবুত হবে। এখন সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে সবাই সব কিছুই খুবই সহজে জানতে পারে। ইয়াজুজ মাজুজ কারা কোথায়? যেখানে যুদ্ধ হচ্ছে সেই ককেসাস অঞ্চলে তাদের অবস্থান। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধস্থলে এবং আশপাশে বসবাসকারীদের মধ্যে মুসলমানদের আধিক্যই বেশি। বিশ্বের বিজ্ঞানের ব্যপক উন্নতি হয়েছে। প্রযুক্তির বদৌলতে তথ্যের এখন অবাধ প্রবাহ। সবার হাতে হাতে এখন মোবাইল ফোন। শিক্ষার্থীরা মোবাইলে গুগলে গেলেই এসব তথ্য জানতে পারবে, মুসলমানদের ইতিহাস ঐতিহ্য জানতে পারবে। শিক্ষার্থীদের এসব জানতে এবং জানার প্রতি আগ্রহী করে তুলতে মাদরাসার শিক্ষক-আলেম-ওলামাদের ভূমিকা রাখতে হবে।
জমিয়াতুল মোদার্রেছীন সভাপতি বলেন, ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের সরকারি চাকরি অস্থায়ী পদ। চাকরির সুবাধে ক্ষমতা পেয়ে ধরাকে স্বরাজ্ঞান করে অশ্লীলতায় ভেসে বেড়াচ্ছেন। কেউ কোন অশ্লীল কাজ করে ছাড় পাবেন না। তাদের কথা ভাবলে হবে না। আলেম-ওলামাদের মর্যাদা, তাদের জন্য জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের পদ ও মর্যাদা হলো স্থায়ী। সব সময় সবার কাছে জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের নেতারা সন্মানিত ব্যাক্তি। সমাজের সব স্তরের মানুষ আলেমদের শ্রদ্ধা করেন। বিপদে পড়লে আলেমদের কাছে ছুটে আসেন। আমাদের নেতাদের এই মর্যাদা ও সন্মানের কোন পরিবর্তন হয় না। তিনি বলেন, আমরা সকলে দাবি-দাওয়া নিয়ে কথা বলছি; কিন্তু করোনা মহামারিতে দেশের মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গেছে। এখন পুরো সমাজ দূষিত হয়ে গেছে। আমাদের নিজেদের অস্তিত্বের বিষয়ে চিন্তা করতে হবে। উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেম মরহুম মাওলানা এম এ মান্নানের দেখানো পথ অনুসরণ করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
ইউক্রেট-রাশিয়া যুদ্ধের প্রসঙ্গ তুলে এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সাথে ওই অঞ্চলের মুসলমানরা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সউদী আরব ও সংযুক্ত আবর আমিরাতের প্রেসিডেন্টকে ফোন করেছিলেন। কিন্তু কেউই বাইডেনের ফোন ধরেননি। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দেশ রাশিয়া একদিন মুসলমানদের নেতৃত্বে আসবে। এদিকে চীনেও ধীরে ধীরে মুসলমানদের সংখ্যা বাড়ছে। মুসলমানরাই একদিন পৃথিবী শাসন করবে। অথচ আমাদের দেশের ইসলামী শিক্ষার বিস্তার ব্যাহত করার চেষ্টা করছে একটা গোষ্ঠী। মাদরাসা শিক্ষার বিরুদ্ধে অমর্যাদাকর কথাবার্তা প্রচার করছে। আমাদের সকলকে এ বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। আমার বিশ্বাস ওরা হাজারো অপচেস্টা করেছে আলেম এবং মাদরাসা শিক্ষার ক্ষতি করতে পারবে না।
জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব প্রিন্সিপাল মাওলানা শাব্বীর আহমদ মোমতাজী বলেন, জমিয়াতুল মোদার্রেছীন সারা দেশের আলেম ওলামাগণের সমন্বয়ে পরিচালিত হয়। সংগঠনের মাধ্যমে আমরা দেশের শিক্ষক-শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কল্যাণে কাজ করি। আমাদের সকলের সমন্বিত প্রচেষ্ঠার মাধ্যমেই ইসলামি শিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারি। তাই আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সিনিয়র সহসভাপতি মাওলানা কবি রূহুল আমীন খান বলেন, আল্লাহর ওলি ও পীর মাশায়েখদের সংগঠন হলো বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন। আলেম ওলামাদের সম্পর্ক আছে এই সংগঠনের সাথে। এই সংগঠনের ক্ষতি কেউ করতে পারবে না। বরং অতীতে যারা ক্ষতি করার চেষ্টা করেছে তাদেরই ক্ষতি হয়। তিনি বলেন, আমাদের সন্তানেদের মাঝে ইসলামি চেতনা জাগিয়ে তুলতে হবে। সম্মানবোধ, আত্মশক্তি জাগ্রত করতে হবে।
নির্বাহী কমিটির সভায় আলোচ্যসূচি পাঠ করেন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব প্রিন্সিপাল মাওলানা শাব্বীর আহমদ মোমতাজী। সভার শুরুতেই সারা দেশ থেকে আসা জমিয়তের নেতৃবৃন্দ নিজ নিজ পরিচয় প্রদানের মাধ্যমে পরিচয় পর্ব সম্পন্ন করেন। এছাড়া বক্তব্য রাখেন জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সহসভাপতি ড. মাওলানা কফিল উদ্দিন সরকার সালেহী, সহসভাপতি প্রিন্সিপাল ড. মাওলানা সৈয়দ মুহা. শরাফত আলী, সহসভাপতি ভাইস প্রিন্সিপাল (অব.) মাওলানা নূরুল ইসলাম, সহসভাপতি পীরজাদা শাহ নেছার উদ্দীন, যুগ্ম মহাসচিব প্রিন্সিপাল ড. এ কে এম মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব প্রিন্সিপাল মাওলানা আ.খ.ম আবু বকর সিদ্দিক, যুগ্ম মহাসচিব প্রিন্সিপাল মাওলানা হাদিউজ্জামান, যুগ্ম মহাসচিব প্রিন্সিপাল মাওলানা মোকাদ্দাসুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিন্সিপাল মাওলানা হাছান মাসুদ, সহকারি মহাসচিব প্রিন্সিপাল ড. মাওলানা নজরুল ইসলাম আল মারুফ, সহকারি মহাসচিব ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা মোবাশ্বিরুল হক নাঈম, শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক প্রিন্সিপাল হোসাইন আহমদ ভুইয়া, পাঠ্যক্রম পাঠ্যসূচি বিষয়ক সম্পাদক প্রিন্সিপাল মাওলানা গাজী মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, প্রকাশনা সম্পাদক প্রিন্সিপাল মাওলানা মো. ইসমাইল, সহকারী প্রচার সম্পাদক সুপার মাওলানা মো. জসিম উদ্দিন নূরী প্রমুখ। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।