পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : সরকার দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংসের পায়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, তারা (সরকার) বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে ফেলার চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে আমি উদাহরণ দিয়ে বলতে চাই, বর্তমান ব্যাংকিং ব্যবস্থায় এক লক্ষ টাকা রাখলে আগে ছিলো ৫‘শ টাকা এখন ৮‘শ টাকা কেটে নেবে, আবগারী শুল্ক দিতে হবে।
গতকাল রোববার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ অভিযোগ করেন।
গত ৮ বছর ধরে দখলদারি শাসন ব্যবস্থা রেখে দেশপ্রেমিকদের হত্যা ও গুম করা হচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, অনেকে মনে করেছিলেন জিয়াউর রহমানকে হত্যা করলেই বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী দর্শনকে ধ্বংস করে দেওয়া যাবে এবং মানুষের স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নকে ধূলিসাত করে দেয়া যাবে। কিন্তু সেটা করা যায়নি।
কারণ মানুষ আজ সেই দর্শনই ধারন করে। তবে দুর্ভাগ্য সেই চক্রান্তকারীরা আজ দেশের শাসন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে অগণতান্ত্রিক ও সম্পূর্ণ অবৈধভাবে। আর তারাই গত ৮ বছর ধরে তাদের দখলদারি শাসন ব্যবস্থা রেখে দেশপ্রেমিকদের হত্যা ও গুম করছে এবং মামলা দিয়ে জুলুম করে জেলে আটকে রাখছে।
‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩৬ তম মৃত্যুবার্ষিকী’ উপলক্ষে এ সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচন করতে চায়, আমরাও নির্বাচন করতে চাই। কিন্তু আওয়ামী লীগ বিএনপিকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করতে চায়। আর সেই নির্বাচন তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। কারণ তারা জানে বিএনপি যদি নির্বাচনে আসে তাহলে তারা জয়ী হতে পারবে না।
আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে ফখরুল বলেন, আপনারা ফুটবল খেলবেন। আর রেফারিসহ সব কিছু আপনাদের হবে। আর আমরা মাঠের বাইয়ে দাঁড়িয়ে দেখবো, এবার সেটা হবে না। ৫ জানুয়ারির মত এবার নির্বাচন হতে দেয়া হবে না বলেও সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আপনারা নির্বাচনি বক্তব্যে দিচ্ছেন, আর হেলিকপ্টারে করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অপরদিকে আমরা আদালতে দাঁড়াচ্ছি। যদি ভাবেন, আপনারা নির্বাচন করবেন আর আমরা কারাগারে ও আদালতে ঘুরবো; তাহলে আপনারা আহম্মকের স্বর্গে বাস করছেন।
তিনি বলেন, একদিকে তারা (সরকার) ব্যাংক লুট করে শেষ করে দিয়েছে। ৬টা রাষ্ট্রায়াত্ব ব্যাংককে তারা লোকসানী প্রতিষ্ঠান করেছে। ১৫ হাজার কোটি টাকা ভুর্তকী দেবে এই জনগনের ট্যাক্সের পয়সায়, তাদের পকেট কেটে।
প্রস্তাবিত বাজেটের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার একদিকে জুলুমের রাজত্ব কায়েম করেছে, অন্যদিকে লুটপাটের রাজত্ব কা্য়মে করেছে। গত দুইদিন আগে বাজেট দিয়েছে, একটা মানুষ খুঁজে পাবেন না যে, এই বাজেটকে ভালো বলছে। এমনকি যারা অর্থনীতিবিদ, এমনকি যারা আওয়ামী লীগের প্রতি দূর্বল তারা বলছে এই পর্যন্ত যত বাজেট এসেছে, তার মধ্যে খারাপ বাজেট।
তিনি বলেন, বাজেটে জনগনের ওপরে একটা করের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। তারা করবে চুরি, তারা করবে লুটপাট, তারা বিদেশে বাড়ী তৈরি করবে, বিত্ত তৈরি করবে, আর সেটার খেসারত দেবে বাংলাদেশের মানুষ। এই অবস্থায় নিয়ে গেছে দেশকে।
বাজেটে কর্মসংস্থানের কোনো সুযোগ রাখা হয়নি অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, আজকে আমাদের লক্ষ লক্ষ শিক্ষিত যুবক বেকার হয়ে আছে। তাদের কর্মসংস্থানের কোনো ব্যবস্থাই বাজেটে নেই, কোনো ইংগিত নেই। তারা কর নেবে আর সেই কর নিয়ে মেগা প্রজেক্ট তৈরি করবে, মেগা লুট করবে- এটাই আসল উদ্দেশ্য।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ প্রকৃতিগতভাবেই লুটেরা। আমার মনে আছে ১৯৭২-৭৫ সালে পর্যন্ত যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিলো, তারা একইভাবে লুট করেছে। এজন্য মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী সেই সময়ে বলেছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নামটা বাদ দিয়ে এটাকে নিখিল বাংলাদেশে লুটপাট সমিতি রাখা হোক।
আলোচনা সভায় আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচন হবে কী হবে না সেটা দিল্লিতে নির্ধারিত হয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচন হবে কী হবে না, এদেশে দখলদার প্রধানমন্ত্রী থাকবে কী থাকবে না; এটা নির্ধারিত কোথায় হয়? নির্ধারণ দিল্লিতে হয়। এর প্রমাণ, ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের সময় ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান ডবিøউ মজিনা বার বার দিল্লিতে ছুঁটে গিয়েছেন কেনো? বাংলাদেশে নির্বাচন কিভাবে হবে, এর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত কেনো দিল্লি যেতে হয়?
মাহমুদুর রহমান বলেন, জিয়াউর রহমান বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী দান করে গিয়েছেন। আর এ জন্য স্বাধীনতা চলে গেলেও পতাকা এখনও আছে। অন্যথায় এখন বাংলাদেশে তিন বেলা ভারতের পতাকা দেখতে পেতেন।
বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে মাহমুদুর রহমান বলেন, জিয়াউর রহমানের জাতীয়তাবাদী আদর্শকে ধারণ করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে রাজপথে নামুন। এই দিল্লির দখলদার সরকারকে উৎখাত করুন। আর যদি না পারেন তাহলে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা চলে যাবে। শেখ হাসিনা যদি ৫ জানুয়ারি নির্বাচন করতে পারেন তাহলে পতাকাও চলে যাবে- বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এসময় বিএনপিকে জিয়াউর রহমানের কর্মজীবনের ওপর আগামী বছর মে ১ থেকে এক মানব্যাপী আলোচনার উদ্যোগ গ্রহণ করার পরামর্শ দিয়ে মাহমুদুর রহমান বলেন, এ ৩০ দিনের আলোচনা সভায় প্রতিটি দিন একটি বিষয়ে উপর আলোচনা হবে। আর শেষের দিন ঢাকায় একটি জনসভা করবে বিএনপি। এই সভার জন্য বিএনপি কোন অনুমতির তোয়াক্কা করবে না। সেই জনসভার আয়োজনের জন্য পুলিশের কাছে দৌঁড়াদৌড়ি করবে না।
পুলিশ কারা- প্রশ্ন রেখে মাহমুদুর রহমান বলেন, পুলিশ আপনার-আমার করের টাকায় চলে। তারা কী আমার প্রভু হয়ে গেছে? বিএনপির মত রাজনৈতিক দল জনসভা করবে আর পুলিশের কোন সিপাহীর কাছে দিনের পর দিন অনুমতির জন্য আমাদের নেতৃবৃন্দদেরকে ধর্না দিতে হবে।
তিনি জানান, আমি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক আদর্শ লালন করি। যার আদর্শের সামান্য সৈনিক বলে নিজেকে করি। আমি বাংলাদেশের রাজনৈতিক সচেতন নাগরিক। সেই নাগরিকের দাবিতে আমি মনি করি, জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের আদর্শতম ও মহৎ রাজনীতিবিদ।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েলের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও মহানগর দক্ষিনের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, মহানগর উত্তর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আহসানউল্লাহ হাসান, সাংবাদিক আবদাল আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তাফিজুর রহমান, গোলাম সরোয়ার, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, সাদরেজ জামান, এসএম জিলানি, রফিক হাওলাদার, নজরুল ইসলাম, ফখরুল ইসলাম রবিন, গাজী রেজওয়ানুল হক রিয়াজ, আওলাদ হোসেন উজ্জল, আবদুর রহমান বাবু, জাহিদ হোসেন প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।