Inqilab Logo

শনিবার ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ২৯ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

চাঁপাইনবাবগঞ্জে জনস্বাস্থ্যের সোয়া কোটি টাকার কাজ ভাগবাটোয়ারার অভিযোগ

| প্রকাশের সময় : ৩ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা : চাঁপাইনবাবগঞ্জে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ১ কোটি ২৩ লাখ টাকার কাজ গোপন সমঝোতার মাধ্যমে ভাগবাটোয়ারার অভিযোগ উঠেছে। সমঝোতার কারণে প্রায় ১০ শতাংশ উচ্চদরে দরপত্র দাখিল করেছেন ঠিকাদাররা। এই কাজের অনুমোদন দেয়া হলে সরকারের ৪৯ লাখ টাকার ক্ষতি হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ঠিকাদাররা স্বীকার করেছেন সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই সব কিছু করা হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরসহ জেলার ৫ উপজেলায় ১৯২ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নলকুপে সাব মার্সেবুল পাম্প স্থাপনের জন্য সম্প্র্রতি দু’টি গ্রæপে দরপত্র আহবান করে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ১ কোটি ২২ লাখ ৬৪ হাজার ৫৪০ টাকা। প্রথম গ্রæপে ১১৫ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাব মার্সেবুল পাম্প স্থাপনের জন্য ৭১ লাখ ২৬ হাজার ৪১৮ টাকা ও দ্বিতীয় গ্রæপে ৭৭ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাব মার্সেবুল পাম্প স্থাপনের জন্য ৫১ লাখ ৩৮ হাজার ১১২ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
কিন্তু দরপত্র আহবানের শুরু থেকেই ছলচাতুরির আশ্রয় নেয় স্থানীয় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। সরকারী ক্রয় নীতিমালা না মেনে  কোন জাতীয় বা স্থানীয় পত্রিকায় এই দরপত্রের বিজ্ঞাপন দেয়া হয়নি। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ছাড়ায় দরপত্রের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করা হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন জনস্বাস্থ্যর কর্মকর্তারা। অনুসন্ধানে জানা গেছে, জেলা ঠিকাদার সমিতির সাবেক এক সভাপতির নেতৃত্বে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট কাজগুলো ভাগবাটোয়ারা করে নিতে নানামুখি তৎপরতা শুরু করে। জেলা শহরের ক্লাব সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলায় এক ঠিকাদারের কার্যালয়ে গোপন বৈঠকের মাধ্যমে ঠিকাদারদের মধ্যে কাজ ভাগভাটোয়ার বিষয়ে সমঝোতা হয়।
 আর সমঝোতার অংশ হিসেবে দরপত্র জমা দেয়ার শেষ দিনে প্রায় ১০ শতাংশ উচ্চদরে দরপত্র জমা দিয়ে দুটি গ্রæপের কাজ বাগিয়ে নিয়েছে মেসার্স শাহ আলমগীর ও মঈন খান নামের দুটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। সমঝোতার কারণে প্রতি গ্রæপে ৮টি করে সিডিউল বিক্রি হলেও সিডিউল জমা পড়েছে ৩টি করে। এজন্য সিডিউল কেনা প্রতিটি ঠিকাদারকে দেয়া হয়েছে ২ লাখ টাকা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গতবছর একই ধরনের কাজে ৩০ শতাংশ লেসে (নি¤œদর) কাজ নিয়েছিলেন ঠিকাদারা।
এবার ১০ শতাংশ উচ্চদরে কাজ দেয়া হলে সরকারের ক্ষতি হবে প্রায় ৪৯ লাখ টাকা। গোপন সমঝোতার মাধ্যমে কাজ পাওয়ার কথা স্বীকার করে ঠিকাদার সৈয়দ জিয়াউর রহমান জীবন জানান, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই সবকিছু হয়েছে।   
এব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী বাহার উদ্দীন মৃধার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ঠিকাদারদের মধ্যে সমঝোতা হলে বাইরে হয়েছে। এটা আমার জানার বিষয় না। এই প্রক্রিয়ার সাথে অফিসের কেউ জড়িত নয় বলে দাবি করেন তিনি। দরপত্রের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন না দেয়ার কথা স্বীকার করে প্রথমে তিনি বলেন, ভুলবসত বিজ্ঞাপন দেয়া হয়নি।
একই প্রসঙ্গে তিনি ঢাকা অফিসের পরামর্শেই বিজ্ঞাপন দেয়া হয়নি। তবে ১০ শতাংশ উচ্চদরে ঠিকাদারদের কাজ দেয়া হলে, সরকারের ৪৯ লাখ টাকার ক্ষতি হবে বলে স্বীকার করেন তিনি। তিনি বলেন দরপত্র মূল্যায়ন শেষে তা জনস্বাস্থ্যর ঢাকা অফিসে পাঠিয়ে দেয়া হবে। সেখান থেকেই কাজের অনুমোদন দেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ