Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রস্তাবিত বাজেটে মেগা প্রকল্পে মেগা দুর্নীতি হবে -মির্জা ফখরুল

| প্রকাশের সময় : ৩ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মানুষের ওপর মাত্রাহীন করের  বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। এতে মানুষের দুঃখ-কষ্টের কোন সীমা থাকবে না। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের পকেট কেটে নিজেদের পকেট ভর্তি করতে সরকার জনগণের ওপর বাজেট চাপিয়ে দিয়েছে। সরকারি দলের নেতাদের পকেট ভারী করতেই প্রস্তাবিত বাজেটে বড় প্রকল্পের নামে বেশি বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বাজেটে ৩০টি মেগা প্রজেক্ট নেয়া হয়েছে। এই মেগা প্রজেক্টগুলোতে মেগা কস্টিং হবে। সেই মেগা কস্টিংয়ে মেগা দুর্নীতি হবে। মেগা পকেট ভারী হবে। পুরো বাজেটটিই হচ্ছে তাদের পকেট ভর্তি করার জন্য।
গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৩৬তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে ৭টি বিভাগীয় মহানগরের মাসব্যাপী পুস্তক প্রদর্শনী-২০১৭‘র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, নতুন একটি বাজেট এই অনৈতিক সরকার সাধারণ মানুষের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। আজকের পত্রিকাগুলো দেখবেন সেখানে বিভিন্ন কার্টুন ছাপিয়ে বাজেটে যে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ তা প্রকাশ করা হয়েছে। এই বিশাল বাজেট জনগণের কোনো কল্যাণ তো আনবে না বরং এটি বিশাল একটি বোঝা! যেভাবে মানুষের ওপর মাত্রাহীন করের বোঝা চাপিয়ে  দেয়া হয়েছে তাতে মানুষের দুঃখ-কষ্টের কোন সীমা থাকবে না।
বাজেট পকেট মার তৈরির দারুণ সুযোগ দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, শিক্ষার জন্য বাজেট বাড়িয়েছে, কিন্তু শিক্ষার যে গুণগত মান বৃদ্ধি বাজেটে তার কোন সুযোগ নেই। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আজকে যে সীমাহীন দুর্ভোগ তা কাটিয়ে ওঠার জন্য কোন বাজেট নেই। অথচ বড় বড় মেগা প্রজেক্টের জন্য বড় বাজেট দিয়েছে। এটা মেগা দুর্নীতির সুযোগ সৃষ্টি যেন উচ্চ দরের পকেট মার  তৈরির দারুণ সুযোগ।
ফখরুল বলেন, এই বাজেট সাধারণ মানুষের কোনো কল্যাণ তো করবেই না, উপরন্তু সাধারণ মানুষের জন্য একটা বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। একটা বার্ডেন হয়ে দাঁড়াবে। সরকার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত নয় দাবি করে তিনি বলেন, এজন্যই সাধারণ মানুষের ওপর করের বোঝা চাপানো হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, এটা উচ্চ দরের পকেট কাটার বাজেট। বাজেটে জনগণের ওপর করের বোঝা চাপিয়ে  দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সরকারের বাজেট দেয়ার অধিকার নেই। তাদের জনগণের কাছে কোনো জবাবদিহিতা নেই। সংসদে কোনো বিরোধী দল নেই। সংসদেও তাদের জবাবদিহিতা  নেই।
শিক্ষাখাতে দুরাবস্থার কথা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, স্বাস্থ্যখাতে নর্দমার মতো অবস্থা। তিনি বলেন, ভিশন ২০৩০ দেয়ার পর থেকে বিএনপির রাজনীতির চেহারা পাল্টে গেছে। বিএনপির দূরদর্শীতার জন্য মানুষ বিএনপিকে সিরিয়াস পার্টি বলছে।
বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৩৬তম শাহাদাতবাষির্কী উপলক্ষে এই পুস্তক প্রদর্শনীর আয়োজন করে জিয়া স্মৃতি পাঠাগার এবং জাতীয়তাবাদী প্রকাশনা সংস্থা। জিয়া স্মৃতি পাঠাগার সভাপতি ও বিএনপি চেয়াপারসন উপদেষ্টা আব্দুস সালামের সভাপতিতেত্ব অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
এদিকে, গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর পুস্পধাম হোটেলে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম দল খেলাফত মজলিস আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে মির্জা ফখরুল বলেন, বাজেটে দুর্নীতিবাজদের দুর্নীতি করার বেশি সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। করের মাধ্যমে জনগণকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রাখা হয়েছে।
জনগণের ইস্পাত কঠিন ঐক্য দরকার মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আধিপত্যবাদীদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হলে ঐক্য প্রয়োজন। জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই। প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। প্রতিরোধ গড়ে তুলেই অপশক্তিকে বিদায় করতে হবে।
খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর মাওলানা মজিবুর রহমান পেশোয়ারীর সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিলে সংগঠনের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম বীর প্রতিক, এনডিপির চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্তুজা, এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ, ন্যাপ মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আমিনুর রহমান প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
রাজনৈতিক কর্মসূচির মতো ধর্মীয় অনুষ্ঠানও পালনে বাধা দিচ্ছে আ‘লীগের সন্ত্রাসীরা
এদিকে, ঢাকার কেরানীগঞ্জ হযরতপুর বায়তুল আমান জামে মসজিদে স্থানীয় বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে পুলিশের উপস্থিতিতে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হামলা করে ইফতার মাহফিল পন্ড করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
গতকাল গণমাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, কেবল রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনেই বাধা নয়, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে তাদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা এখন বিএনপি আয়োজিত ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনেও ন্যাক্কারজনকভাবে বাধা দিয়ে দেশে নজীরবিহীন কলঙ্কিত পরিবেশ তৈরী করছে। বর্তমান শাসকগোষ্ঠী বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর রাজনৈতিক কর্মসূচি ছাড়াও যেকোন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি পালনকেও বরদাশত করতে পারছে না। যার বহি:প্রকাশ ঘটলো-আজ (শুক্রবার) কেরানীগঞ্জের হযরতপুর বায়তুল আমান মসজিদে স্থানীয় বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে। পুলিশের সহায়তায় আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা করে ইফতার মাহফিলের মতো একটি অনুষ্ঠান পন্ড করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, পুলিশের উপস্থিতিতে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের এই ঘৃনিত হামলার নিন্দা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। আমি অবিলম্বে কেরানীগঞ্জ হযরতপুর বায়তুল আমান জামে মসজিদে স্থানীয় বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মির্জা ফখরুল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ