Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হামলা-গ্রেফতারে দমানো যাবে না আন্দোলন

সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০১ এএম

হামলা-গ্রেফতার করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনকে দমানো যাবে না বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার পল্লবীতে পুলিশের অনুমতি নিয়ে সমাবেশের জন্য যখন মঞ্চ তৈরি করছিলেন এবং মাইক লাগাচ্ছিলেন ঠিক তখনই আওয়ামী সন্ত্রাসীরা লাঠি-শোঠা নিয়ে মারাত্মক অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে আক্রমণ করে। এই আক্রমণের ফলে আমাদের প্রায় ৭৫ জন আহত হয়েছে, গ্রেফতার হয়েছে ৮ জন। আমরা খুব পরিস্কার করে বলতে চাই, এভাবে সন্ত্রাসী হামলা করে, আহত করে, জখম করে, হত্যা করে, গ্রেফতার করে, মিথ্যা মামলা দিয়ে কখনোই আন্দোলনকে দমিয়ে রাখা যাবে না, বিএনপিকে রাজপথ থেকে সরানো যাবে না।

গতকাল শুক্রবার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
জ্বালানি তেল ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি ও ভোলায় নুরে আলম, আব্দুর রহিম, নারায়নগঞ্জে শাওন প্রধান হত্যার প্রতিবাদে গত বৃহস্পতিবার পল্লবী জোনে আয়োজিত সমাবেশ শুরুর আগে আওয়ামী লীগের হামলার ঘটনা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, পল্লবী জোনে সমাবেশ হওয়ার কথা ছিলো ডি ব্লকের ঈদগাহ মাঠে। পুলিশ আপত্তি করার পরে আমাদের নেতৃবৃন্দ এটাকে পরিবর্তনে আরো দুইটি জায়গার কথা বলেছিলেন-পল্লবী পুরাতন থানা সামনে অথবা পল্লবী কাঁচা বাজারের সামনে মুকুল ফৌজ মাঠে। শেষ পর্য়ন্ত পুলিশ কর্তৃপক্ষ মুকুল ফৌজ মাঠে দুপুর ১টায় এই সমাবেশ করার অনুমতি প্রদান করে। যখন আমাদের কর্মীরা ভাইয়েরা মঞ্চ তৈরি করছিলেন ঠিক তখনই এই হামলা চালানো হয়। সবচাইতে দুঃখজনক, ভয়াবহ কাণ্ড হচ্ছে আক্রমণকারীদেরকে প্রতিহত করার জন্য যখন আমাদের নেতাকর্মীরা দাঁড়িয়ে থাকে তখন আমাদের নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেয়ার জন্য পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস এবং শেষে বন্দুক দিয়ে গুলিবর্ষণ করে।

তিনি বলেন, আমরা বার বার বলে আসছি যে, পুলিশের ভূমিকা হওয়া উচিত রক্ষা করা, নিরপেক্ষ থাকা। কিন্তু পুলিশ পুরোপুরিভাবে এই হামলাকারীদের তথা আওয়ামী লীগের ও সন্ত্রাসীদের পক্ষ থেকে গণতন্ত্রকামী যে আন্দোলন সেই আন্দোলনকে তারা নস্যাৎ করার জন্য কাজ করছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, পুরোপুরিভাবে উস্কানি দিয়ে সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি করা, দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিনষ্ট করা, বিরোধী দলকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া এবং নির্বাচনী মাঠ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার জন্য তারা এই কাজগুলো করছে।

বিএনপি নয়, আওয়ামী লীগই সন্ত্রাস করছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রতিদিন আওয়ামী লীগের নেতারা বলতে চান যে, বিএনপি সন্ত্রাসী হামলা করছে। কিন্তু পুরো সন্ত্রাসটা করছে তারা, তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য, দেশে যেন গণতন্ত্র না থাকে। একটা নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ, পরিস্থিতিকে তারা পুরোপুরি নস্যাৎ করে দিতে চায়। আওয়ামী লীগ একটি গণতন্ত্র বিরোধী শক্তি, সন্ত্রাসী শক্তি, তারা দেশের মানুষের অধিকারকে হরণকারী শক্তি। আওয়ামী লীগ অতীতেও একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিলো এখনো তারা একই উদ্দেশ্যে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করতে চায়।

তিনি বলেন, সারা দেশে আওয়ামী লীগ একই কায়দায় হামলা করেছে, মামলা হয়েছে , গুলি হয়েছে, আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর, সভা পণ্ড করা হয়েছে। তারা চাচ্ছে যেন এখানে নির্বাচনের কোনো পরিবেশ তৈরি না হয়, জনগনের যে দাবি একটি নিরপেক্ষ সরকারের দাবি, যে দাবিতে জনগণ আন্দোলন করছে সেই নিরপেক্ষ সরকার এখানে যাতে কিছুতে করা না যায় এবং তাদের যে একদলীয় শাসন সেই ব্যবস্থাকে পাকাপোক্ত করার জন্য তারা আবারো একটা নির্বাচন করতে চায়, যে নির্বাচনে কোনো বিরোধী দল থাকবে না।

মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেন, যুব লীগের তাজুল ইসলাম চৌধুরী বাপ্পী, রুপনগর থানা আওয়ামী লীগের রজ্জব আলী, কাশেম মোল্লা, তুহিন, শেখ মান্নান,মো. লিটু, সালাহউদ্দিন রবিন, ইসহাক মিয়া, মোবাশ্বের চৌধুরী, তোফাজ্জল হোসেন টেংগু, জাকির হোসেন, মো. খোকন, মো. ইব্রাহিম, খলিলুর রহমানের নেতৃত্বে এই সশ্বস্ত্র হামলা হয়েছে।

কর্মসূচি : ঢাকাসহ সারাদেশে বিএনপির সমাবেশে হামলার ঘটনার প্রতিবাদে ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগরসহ সকল মহানগর, জেলা-উপজেলায় প্রতিবাদ বিক্ষোভের অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান বিএনপি মহাসচিব। রাজধানীতে সেদিন মহানগর বিএনপি উত্তর-দক্ষিনের যৌথ উদ্যোগে বিকাল তিনটায় নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির আব্দুস সালাম, কামরুজ্জামান রতন, নাজিম উদ্দিন আলম, মহানগর উত্তরের আমিনুল হক, দক্ষিনের রফিকুল আলম মজনু, য্বুদলের শফিকুল ইসলাম মিল্টন উপস্থিত ছিলেন।



 

Show all comments
  • Mohmmed Dolilur ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১:২৩ এএম says : 0
    সংগ্রাম খালি হাতে করা যাবে না ছাত্র লীগ দাও চেনি এবং লাঠি নিয়ে আসতে পারে আপনারা কি করেন,এবং পুলিশ গুলি করেন আপনারা কি করেন...
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মির্জা ফখরুল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ