Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দাম কমবে

| প্রকাশের সময় : ২ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম


অর্থনৈতিক রিপোর্টার : নতুন মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন বাস্তবায়ন হচ্ছে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এ ঘোষণা দেন। নতুন আইনে আমদানি ও স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত প্রায় তিন হাজারের অধিক পণ্য ও সেবা ভ্যাটের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে। ফলে ওইসব পণ্যের দাম কমবে।
ভ্যাট অব্যাহতি পাওয়া পণ্যগুলো হলো- জীবন্ত ঘোড়া, গাধা, খচ্চর ও ঘোটক। জীবন্ত গবাদি পশু, ভেড়া ও ছাগল; জীবন্ত পাখিসমূহ। আড়াই কেজি পর্যন্ত গবাদি পশুর মাংস, শূকরের মাংস, ভেড়া বা ছাগলের মাংস, ঘোড়া, গাধা, খচ্চরের মাংস, হাঁস-মুরগির মাংস (টিনজাত ব্যতীত); জীবন্ত মাছ, টিনজাত অথবা হিমায়িত মাছ; আড়াই কেজি পর্যন্ত মোড়ক বা টিনজাত ব্যতীত কাঁটা ছাড়ানো মাছ ও মাছের মাংস, শুকনা, লবণাক্ত মাছ; খোলসযুক্ত বা খোলস ছাড়ানো শামুকজাতীয় প্রাণী।
প্যাকেটকৃত তরল দুধ, পনির, মাঠা; পাখির ডিম, মধু, আলু, টমেটো, পেঁয়াজ, রসুন, লিকস এবং অন্যান্য এ জাতীয় শাকসবজি; বাঁধাকপি, ফুলকপি, মাথাযুক্ত ব্রকলি, কোহিলাভি, কেইল; লেটুস, চিকোরি, গাজর, শালগম, সালাদ বিটমূল, স্যালসিফাই, সেলেরিয়াক, মুলা, শিম্বারকার শাকসবজি, সব ধরনের শাকসবজি, নারিকেল, কাজু বাদাম, সুপারিসহ ৫৪৯টি পণ্য।
সব প্রকার কলা, খেজুর, ডুমুর, আনারস, পেয়ারা, আম, গাব, লেবুজাতীয় ফল, আঙ্গুর, তরমুজ, আপেল, নাশপাতিসহ যেকোনো ফল; গোলমরিচ, ভ্যানিলা, দারুচিনি, লবঙ্গ, জায়ফল, জৈত্রী, এলাচ, মৌরী, ফেনেল, ধনিয়া, জিরা, আদা, জাফনার, হলুদ, তেজপাতা, কারি, মসলা, গম, মেসলিন; রাই, বার্লি, জই, ভুট্টা, ধান, সব প্রকার চাল, মুড়ি, সোরঘাম শস্য, বাজরা, ক্যানারাই বীজ।
ময়দা, আটা, চাল, গম, ভুট্টার তৈরি সুজি, সয়াবিন। চীনা বাদাম, তিসি, স্বর্ষপ, সূর্যমুখী ফুলের বীজ, অন্যান্য তেল, লেকোস্ট সীম, সামুদ্রিক আগাছা এবং অন্যান্য সমুদ্র শৈবাল, আখ, চালের কুড়ার তেল, চিনি ও আঁখের গুড়, চোলাইন, সব ধরনের লবন ইত্যাদি। এর ফলে সাধারণ মানুষের জীবনকে নতুন মূসক কোনোভাবেই প্রভাবিত করবে না।
দেশের অভ্যন্তরে সকল অস্থায়ী হোটেল, রেস্তোরাঁয় খাদ্যদ্রব্য সরবরাহে মূসক অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। সাধারণ মানুষ যেসব হোটেল, রেস্তোরাঁয় খাওয়া দাওয়া করে তাতেও মূসক দিতে হবে না। ফলে এসব হোটেলে খেলে খরচ বাড়বে না।
প্রোভিটামিনস ও ভিটামিন, সকল প্রকার জন্মনিরোধক, ভ্যাকসিন ফর হিউম্যান মেডিসিন, লিভার সিরোসিস, হেপাটাইটিস সিনিরাময়কারী, হোমিওপ্যাথিক, আয়ুবের্দিক, ইউনানী ও ভেষজ ওষুধসামগ্রী, কিডনি ডায়ালাইসিস, ক্যান্সার নিরোধক ওষুধ, ম্যালেরিয়ানিরোধক ও কুষ্ঠরোধ নিরোধক ওষুধ, থেলাসেমিয়া, প্রাথমিক চিকিৎসার জিনিস। ২০-৩০ ধরনের মেডিকেল ইক্যুপমেন্ট, হাসপাতালশয্যা।
দেশের মধ্যে (সরবরাহ) অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যানবাহনের মাধ্যমে পরিবহন সেবা, ভাড়াকৃত পরিবহন ছাড়া ট্যাক্সি, বাস, মিনিবাস, লঞ্চ, স্টিমার, ফেরির মাধ্যমে পরিবহন সেবা। এয়ারলাইন্স (চার্টার্ড বিমান ও হেলিকপ্টার ভাড়া প্রদানকারী সংস্থা ব্যতীত), খাদ্যশস্য পরিবহনকারী পরিবহন সেবা।
সমাজকল্যাণমূলক কার্যক্রম মূসকের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। যেমন জনস্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বা স্বাস্থ্যসেবা, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ব্যতীত সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সকল প্রশিক্ষণ (আগের আইনে শুধু সরকারি প্রশিক্ষণ মূসক অব্যাহতি ছিল), শিশু পালন কার্যক্রম, বয়স্ক, অক্ষম, দরিদ্র বা অক্ষম লোকদের আবাসিক সেবা (আগের আইনে অব্যাহতি ছিল না)। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যক্রমের জন্যপাঠ্যপুস্তক সরবরাহ কার্যক্রমে (আগের আইনে ৫% ভ্যাট ছিল)।
কৃষি কাজে ব্যবহৃত সকল উপকরণ যেমন বীজ, সকল প্রকার সেচ সেবা, বীজ সংরক্ষণ সেবা, মৎস্য, জলজপ্রাণী ও জলজ সম্পদ আহরণ ওসংরক্ষণ সংক্রান্ত সেবা, সকল প্রকার সার, কীটনাশক, যন্ত্রপাতি ইত্যাদিতে মূসক অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। ডেইরি, ফাউন্ড্রি, পাটশিল্পেরকাজে ব্যবহৃত সকল যন্ত্রপাতিতে মূসক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
খালি জমি বিক্রয়, হাইটেক পার্ক ও অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানে পণ্য উৎপাদন পর্যায়ে মূসক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সরকারের ফাস্ট ট্রেক তালিকাভুক্ত সকল প্রকল্পে সরবরাহ, নির্মাণ, ইন্টারনেট ইত্যাদি সেবাকে মূসক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
পিপিপি এর আওতাভুক্ত সকল প্রকল্প, বিদ্যুৎ উৎপাদনে কিছু প্রকল্পে মূসক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সকল প্রকার ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিককর্মকান্ড, রেডিও ও টেলিভিশনে স¤প্রচার, শিল্পকর্ম, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড, অপেশাদারি খেলাধুলা, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, লাইব্রেরি, সকল প্রকার জাদুঘর, আর্টগ্যালারি, চিড়িয়াখানা, বোটানিক্যাল গার্ডেনে প্রবেশ মূল্য, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনকারী প্রতিষ্ঠান, শ্যুটিং ক্লাব, সকল প্রকার সামাজিক সাংস্কৃতিক ও খেলাধুলা, কৃষিপণ্য, উদ্যান বা পশু-পাখির মেলায় প্রবেশ মূল্য, ব্যাংকিং ও বীমা খাতের কমিশন ব্যতীত সকল বিষয় (ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আমানত, সঞ্চয়), জীবন বীমা ও অগ্নি বীমা, স্টক মার্কেট ও তার সকল কাজ, কম্পিউটারও কম্পিউটার যন্ত্রাংশে মূসক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
দেশে উৎপাদিত এলপিজি সিলিন্ডার, ফ্রিজ, টিভি, এসি ও মোটরসাইকেলে ২০১৯ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত অব্যাহতি দেয়া আছে, তা বলবৎ থাকবে। দেশীয় সফটওয়্যার উৎপাদন ও সরবরাহে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
দেশি কম্পিউটার ল্যাপটপ ফোনের দাম কমবে
নতুন বাজেটে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে স্থানীয় সংযোজন ও উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে যন্ত্রাংশ ও কাঁচামালের উপর কর ও শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়েছে। এর ফলে দেশে সংযোজিত ও উৎপাদিত কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ট্যাব ও ফোনের দাম কমবে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) জাতীয় সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত কর ও শুল্ক ছাড়ের এই প্রস্তাব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা আমাদের সরকারের অন্যতম উন্নয়ন কৌশল। এ লক্ষ্যে ১৯৯৬ সন হতে আমরা তথ্য প্রযুক্তি খাতের অধিকাংশ পণ্যের আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক ও কর রেয়াতি সুবিধা দিয়ে আসছি। ফলে এ প্রযুক্তি দেশে ব্যাপক প্রসার লাভ করেছে। প্রচুর সম্ভাবনাময় আইসিটি খাত রূপকল্প ২০২১ এবং ২০৪১ বাস্তবায়নে বিশেষ অবদান রাখবে।
এখাতে প্রয়োজনীয় শুল্ক-কর প্রণোদনা এবং নীতি সহায়তা প্রদানের জন্য মোবাইল, ল্যাপটপ ও ট্যাবের স্থানীয় সংযোজন ও উৎপাদনকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে এ খাতের প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ ও অন্যান্য উপকরণ আমদানিতে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে শুল্ক রেয়াতি সুবিধা প্রদানের প্রস্তাব করছি। প্রস্তাবিত বাজেটে কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও ট্যাব উৎপাদনে ব্যবহার হয় এমন প্রায় ৫০টি পণ্যে আমদানি শুল্ক কমিয়ে অভিন্ন ১ শতাংশ করা হয়েছে। এর মধ্যে আগে আমদানি শুল্ক ছিল ২১টি পণ্যে ২৫ শতাংশ, একটি পণ্যে ১৫ শতাংশ, ১০টি পণ্যে ১০ শতাংশ ও ১৮টি পণ্যে আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ ছিল। সেলুলার ফোন উৎপাদনে ব্যবহৃত হয় এমন ৪৪টি পণ্যে আমদানি শুল্ক কমানো হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি পণ্যে আমদানি শুল্ক ২৫ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে, বাকিগুলো কমিয়ে ১ শতাংশে নামানো হয়েছে। এর মধ্যে ১২টি পণ্যে আমদানি শুল্ক ছিল ২৫ শতাংশ, ১টি পণ্যে ১৫ শতাংশ, ১৫টি ১০ শতাংশ ও ১৩টি পণ্যে আমদানি শুল্ক ছিল ৫ শতাংশ। তবে বিদেশ থেকে আমদানি করা মোবাইল ফোনের দাম বাড়বে। এটার আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ করা হয়েছে।###



 

Show all comments
  • Habib ২ জুন, ২০১৭, ২:২৬ এএম says : 0
    khub valo kotha
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাজেট

১৩ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ