বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বরিশাল ব্যুরো : দেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে আছড়ে পরা ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র রেশ না কাটতেই গতকাল বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের আবহাওয়া আবারো যথেষ্ট দুর্যোগপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বর্ষা মাথায় করে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে অবস্থান করছে। আজ সকালের পরবর্তী ৪৮ঘন্টায় তা দেশের মধ্যাঞ্চল পর্যন্ত অগ্রসর হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। ফলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকারও সম্ভাবনা রয়েছে।
দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে গতকাল বরিশাল বিমান বন্দর থেকে দুটি উড়ান বাতিল করা হয়। বেসরকারি ইউএস বাংলার একটি ফ্লাইট নির্ধারিত সময়ের প্রায় দেড় ঘণ্টা পরে ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে টেক-অফ করে বরিশাল বিমান বন্দরে অবতরণ করতে চরম ঝুঁকির কবলে পরে। বজ্র-বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ার কারণে উড়োজাহাজটি বরিশাল বিমান বন্দরের আকাশে প্রায় ৪০মিনিট ধরে চক্কর দিয়ে বার বার চেষ্টা করেও অবতরণ করতে ব্যর্থ হয়ে বিকের ৫টার পরে আবার ঢাকায় ফিরে যায়। বিমান-এর বিজি-৪৬৯ ফ্লাইটটি বিকেল ৪টায় ঢাকা থেকে রওয়ানা হবার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা বাতিল করতে হয়। বাতিলকৃত ফ্লাইটের যাত্রীদের নিয়ে আজ সকাল ৮টায় ঢাকা থেকে ও সকাল ৯টায় বরিশাল থেকে বিমান একটি বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করবে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
দক্ষিণাঞ্চলের সবগুলো নদী বন্দরে ২নম্বর সতর্ক সংকেত জারী করায় অনধিক ৬৫ফুট দৈর্ঘ্যের যাত্রীবাহী নৌযানগুলোর চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। বরিশাল থেকে ঢাকামুখি ক্যাটামেরন সার্ভিসের নৌযান ‘গ্রীন লাইন-৩’ নির্ধারিত সময়ের প্রায় ৩০মিনিট পরে গতকাল দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকার উদ্দেশ্যে বরিশাল নদী বন্দর ত্যাগ করে। যাত্রী বোঝাই নৌযানটি বিকেল সাড় ৫টার দিকে বরিশাল ও চাঁদপুরের মধ্যবর্তী মেঘনা অতিক্রমকালে বিপরীতমুখী স্রোত সহ উত্তাল ঢেউ-এর কবলে পরলেও কাপ্তেনের দক্ষতায় সন্ধ্যার পরে নিরাপদে চাঁদপুর সংলগ্ন মেঘনা অতিক্রম করে ঢাকার দিকে চলে যায়।
প্রবল বজ্র বৃষ্টির সাথে ঝড়ো হাওয়ার কারণে বরিশাল বিমান বন্দরের অপারেশন কার্যক্রমও গতকাল বার বারই বিপর্যস্ত হয়ে পরে। এর সাথে দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় বিমান বন্দরে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের যথেষ্ট দুর্ভোগে পড়তে হয়। নিজস্ব জেনারেটর দিয়ে কোনমতে বিমান বন্দরটির কন্ট্রোল টাওয়ার সহ অপারেশনাল কার্যক্রম সচল রাখতে যথেষ্ট হিমশিম খান বিমান বন্দর কর্মীরা।
গতকাল দুপুর থেকে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে দক্ষিণাঞ্চলে নৌযোগাযোগের পাশাপাশি বিদ্যুৎ সরবরাহ ও বিতরণ ব্যবস্থাও বারবারই ব্যাহত হয়। দুপুরের আগেই বরিশাল মহানগরীর রূপাতলী-পলাশপুর ৩৩ কেভি সঞ্চালন লাইনে গোলযোগ দেখা দেয়ায় বিকল্প ব্যবস্থায় কাশীপুর থেকে সঞ্চালন ব্যবস্থা চালু রাখতে গিয়ে নগরীর একটি বড় অংশে লোডশেডিং করতে হয়। পরে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় গোটা মহানগরী সহ দক্ষিণাঞ্চলের বেশীরভাগ এলাকায়ই বিদ্যুৎ সরবরাহে বিপর্যয় সৃষ্টি হয় বার বার।
মঙ্গলবার সকাল থেকে উপকূলের দক্ষিণ-পূবে মোরা’র ছোবলে ভর করে আনা বৃষ্টিপাতের প্রভাবে বরিশাল অঞ্চলেও বিগত দিন পনেরর লাগাতর তাপ প্রবাহের পরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পারদ ৩০ডিগ্রী সেলসিয়াসে হ্রাস পায়। কিন্তু বুধবার তা পুনরায় প্রায় ৩৪ডিগ্রী সেলসিয়াসের কাছে উন্নীত হয়। গতকাল বরিশালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪ডিগ্রী সেলসিয়াস। দুপুরের আগে থেকেই বরিশাল মহানগরী সহ সন্নিহিত এলাকা কালো মেঘে ঢেকে যাবার পরে দুপুর ৩টা থেকে মাঝারী বর্ষণে সিক্ত হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত বরিশালে প্রায় ২২মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা করা হয়। এর সাথে মাঝারী মাত্রার বজ্রপাতে জনজীবনে যথেষ্ট ভীতিও ছড়ায়। সন্ধ্যার পরে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা আরো বাড়তে থাকে।
আবহাওয়া বিভাগের মতে লঘুচাপের বর্ধিতাংশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের ওপর অবস্থান করছে। যার বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। সারা দেশের দিনের তাপমাত্রা হ্রাস ও রাতের তা অপরিবর্তিত থাকার কথা জানিয়ে বরিশাল সহ দক্ষিণ উপকূলে অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়া সহ ভারী বর্ষণের কথাও জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। ২৯মে’র পরে দক্ষিণ উপকূলে এ বর্ষণ স্বাভাবিকে হলেও গতমাসে বরিশাল অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম। অথচ গত মার্চে স্বাভাবিকের চেয়ে ১৫২% ও এপ্রিলে ১৬০%-এর মত বেশী বৃষ্টিপাত হয় দক্ষিণাঞ্চলে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।