Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জ্বালানি খাতে দুর্নীতির কারণে সরকার গ্যাসের দাম বাড়াচ্ছে : মির্জা ফখরুল

| প্রকাশের সময় : ১ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম


স্টাফ রিপোর্টার : জ্বালানি খাতে দুর্নীতির কারণেই সরকার গ্যাসের দাম বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চলতি বছরে দ্বিতীয় ধাপে গৃহস্থালি ও গাড়ির জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্তে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের  চেম্বার আদালতে আটকে যাওয়ায় পর গতকাল বুধবার দুপুরে এক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব এ অভিযোগ করেন। গতকাল দুপুরে উত্তরার আমিন কমপ্লেক্স সংলগ্ন সড়কে স্থানীয় বিএনপির উদ্যোগে শহীদ জিয়ার শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে দুঃস্থদের মধ্যে বস্ত্র ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ কর্মসূচি উদ্বোধনের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল। পরে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ওই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই সরকার পর্যায়ক্রমে জ্বালানির দাম বাড়িয়েছে, বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে, গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে, তেলের দাম বাড়িয়েছে। বিশ্ববাজারে যখন জ্বালানি তেলের দাম কমেছে, তখনও এরা জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে।
তিনি বলেন, এর মূল উদ্দেশ্যটা হল, তারা যে দুর্নীতি করছে জ্বালানি খাতে আপনারা জানেন যে, কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে শুরু করে অন্যান্য বিষয়গুলোতে দুর্নীতির ফলে যে প্রচুর পরিমাণ ব্যয় হচ্ছে, সেটাকে কাভার করার জন্য তারা জনগণের পকেট কেটে, জনগণের কাছ থেকে  বেশি দাম নিয়ে সেটা পূরণ করতে চাইছে। আমরা তখনও এর নিন্দা করেছি, কথা বলেছি, এখনও করছি।
ফখরুল বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের মধ্য দিয়ে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি আবার চালু হয়েছে। এই রায়ের ব্যাপারে আমাদের কিছু বলার নেই। তবে জনগণ যে ভোগান্তি পোহাচ্ছে, জনগণের আয়ের উপরে  যে চাপ পড়ছে, জনগণের প্রকৃত আয়টা দিনে দিনে কমে যাচ্ছে, আজকে এটা প্রমাণিত হয়েছে।
সরকারের দাবি করা অর্থনৈতিক অগ্রগতির সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের যে অর্থনৈতিক অগ্রগতির শ্লোগান, এটা যে সম্পূর্ণভাবে একটি মিথ্যা ও বানোয়াট শ্লোগান সেটাই প্রমাণিত হচ্ছে। জনগণকে একেবারে জিম্মি করে তাদের পকেট কেটে বড় বড় বাজেট, বড় বড় অঙ্কের বাজেট তারা দিচ্ছে। জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। এবার ৭ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হতে যাওয়ার সরকারি দাবিকে গ্রহণযোগ্য নয় মন্তব্য করেন তিনি। একই সঙ্গে অর্থবছর শেষ হতে চললেও অর্ধাংশের বেশি বাজেট বাস্তবায়নও হয়নি বলে দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, কাল যে বাজেট দেয়া হবে, সেই বাজেটের পরিমাণ এত বড় যে, বরাবরই তারা বড় করছে। এইটার একটা উদ্দেশ্যৃ তারা ফাঁপা একটা আওয়াজ তৈরি করে। বাজেটের ৫৫ পার্সেন্ট এখন পর্যন্ত তারা বাস্তবায়ন করতে পারে নাই গত বাজেটের। এখন আবার বড় বাজেট দেয়ার অর্থই হচ্ছে যে তারা বাস্তবায়ন করতে পারবে না। তারা মানুষকে বোকা বানিয়ে বলবে যে, আমরা অর্থনৈতিক অগ্রগতি অনেক বেশি করছি। এটাই মূল উদ্দেশ্য।
এ সময় মির্জা ফখরুল বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার দাবিকে ‘মামা বাড়ির আবদার’ বলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের মন্তব্য নাকচ করে বিষয়টিকে তাদের ‘জেন্যুইন দাবি’ বলেও দাবি করেন তিনি।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণে সব দলের সমান সুযোগ সুবিধা নিশ্চিতে বিএনপির মামলা প্রত্যাহারের দাবি প্রসঙ্গে মঙ্গলবার ওবায়দুল কাদের বলেন, ক্রিমিনাল অফেন্সের সঙ্গে নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের কোনো সম্পর্ক নেই। তাই নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারে বিএনপির দাবিটি ‘মামা বাড়ির আবদার’।
ওবায়দুল কাদেরের এ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা তো বলবেনই। কারণ মামলাগুলো থাকলে উনাদের তো সবচেয়ে সুবিধা হয়, আমাদের জেলে পুরিয়ে রাখলে আমরা আদালতের বারান্দায় ঘুরতে থাকি, উনারা ফাঁকা মাঠে গোল দিতে সুবিধা পাবেন। তিনি বলেন, এটা মামার বাড়ির আবদার নয়, এটা আমাদের জেন্যুইন দাবি। সমস্ত মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের বিরোধীদলকে কাজ করতে দিচ্ছে না। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে বিরোধী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ে করা মামলা তুলে নেয়া ‘অত্যন্ত প্রয়োজনীয়’ বলেও দাবি করেন মির্জা ফখরুল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মির্জা ফখরুল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ