Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফুলপুরে মসজিদের অযুখানা বন্ধ করে মার্কেট নির্মাণের প্রতিবাদে মুসল্লীদের ভাঙচুর

| প্রকাশের সময় : ৩০ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ফুলপুর (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা : ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদের অযুখানার হাউজ বন্ধ করে দিয়ে মসজিদে উঠানামার প্রবেশপথ সংকোচিত করে মার্কেট নির্মাণ করায়
মুসল্ল­ীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ নিয়ে গত ক’দিন ধরে ফুলপুরে আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে। প্রতিবাদে গতকাল আসরের নামাজের পর মুসল্লীরা উত্তেজিত হয়ে অযুখানার স্থানে নির্মাণাধীন মার্কেট ভাঙচুর করে। এর আগে গত রোববার বাদ আসর মুসল্লী ও মসজিদ কমিটির সদস্যদের মাঝে তর্কবিতর্ক ও এক পর্যায়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উপজেলার বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদে সবচেয়ে বেশি মুসল্লীর সমাগম হয়ে থাকে। তিনতলা মসজিদে প্রায় ১৫০০ মুসল্ল­ী নামাজ আদায় করে থাকেন। মসজিদের পশ্চিম পাশে ঢাকা-হালুয়াঘাট মহাসড়ক। উত্তর পাশে প্রশ্রাবখানা। দক্ষিণ-পূর্ব পাশে থানা রোড। নিচতলায় ছোট বড় ১৯টি দোকান ভাড়া দেওয়া আছে। দু’তলা থেকেও অনুরূপ ভাড়া আসছে বলে জানা যায়। প্রশ্রাবখানা থেকে প্রতিদিন দেড়শ টাকা নেওয়া হয়। রোড কালেকশন হয় প্রতিমাসে প্রায় ২৫-৩০ হাজার টাকা। এছাড়া বাসস্ট্যান্ড ব্যবসায়ীদের প্রতি দোকান থেকে নির্ধারিত কালেক্টর দিয়ে প্রতিদিন চাঁদা জমা নেওয়া হয়। ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেমদের বেতন ব্যাতিত বিশেষ কোন খরচ নেই বললেই চলে। থাকলেও সেটা জনগণ তথা মুসল্লীরাই দিয়ে থাকেন। কিন্তু মুসল্লীদের ফ্যাসিলিটির বিষয়টি মাথায় না রেখে কমিটি প্রতি কক্ষ বাবদ ১২/১৫ লাখ করে টাকা অগ্রিম নিয়ে দোকান বরাদ্দ দিচ্ছেন। অযু করার হাউজ বন্ধ ও মসজিদে যাতায়াতের বড় পথ না রেখে মার্কেট নির্মাণ করায় মুসল্লীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। নিয়মিত মুসল্লী কমে যাচ্ছে। তাদের অভিযোগ, মসজিদের সার্বিক সহযোগিতা করে গেলেও মুসল্লীদের সুবিধা কমিয়ে কষ্ট বাড়িয়ে দিয়ে একটি বিশেষ মহল ফায়দা লুটছে। হাউজে বসে আরামে ওযু করা যেত কিন্তু সেটি বন্ধ করে দিয়েছে। রাস্তা সরু হওয়ায় মসজিদে উঠানামায় লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। মসজিদের আয় উন্নতি মূলত: মুসল্লীদের সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে হলেও এখানে তা হচ্ছে না। এ নিয়ে রবিবার বিকালে মুসল্লী বাবুল ও শাহ জালাল বিপুলের সাথে কমিটির সদস্য শামছুল ইসলামের তর্কবিতর্ক ও এক পর্যায়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। গতকাল আসরের পর ক্ষুব্ধ মুসল্লীরা নির্মাণাধীন মার্কেট ভাংচুর করেন। তখন অনেক মুসল্লী কমিটির সমালোচনা করেন। সার্বজনীন এ প্রতিষ্ঠানটি মনগড়া চালিয়ে যাচ্ছেন বলে কোন কোন মুসল্লী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। একজন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, আমি ৫৫ বছর যাবৎ এই মসজিদে নামাজ আদায় করে আসছি। হাউজ বন্ধ করে, মসজিদে উঠানামার পথ না রেখে দোকান বরাদ্দ দিয়ে তারা এখানে ফায়দা লুটছেন। মসজিদের দোকান ভাড়া দিয়ে ব্যবসা কার জন্য? মুসল্লীদের জন্যেই তো? মসজিদ কি ক্রাইসিসে পড়েছে যে মুসল­ীদের সুযোগ সুবিধা বন্ধ করে দিয়ে ব্যবসা করতে হবে? মসজিদ মার্কেটের একজন দোকানদার বলেন, মসজিদের কোন মিনারা না থাকায় ও চতুর্দিকে দোকান ভাড়া দিয়ে মসজিদ ঢেকে ফেলানোয় অপরিচিত মুসল­ীরা মসজিদে প্রবেশ পথ খোঁজে পান না। এ বিষয়ে মসজিদের মুতাওয়ালি­ হাসু মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি ব্যবস্থা নিবেন বলে আশ্বস্থ করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ