পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : আগামী নির্বাচন সহায়ক সরকারের অধীনেই দিতে হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমরা গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করছি। আমরা নির্বাচনে যাবো। তবে নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া তা হবেনা। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিতে হবে। সবার নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে, সবার জন্য সমান সুযোগ দিতে হবে। গতকাল (সোমবার) বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৩৬তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বিএনপি আয়োজিত এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, উন্নতির শিখরে ওঠার জন্য জাতির লড়াইয়ের সেনাপতি ছিলেন শহীদ জিয়াউর রহমান। তার মৃত্যুতে দেশের কোটি কোটি মানুষ সেদিন জানাযার নামাজে কেঁদেছিল। যখন জানাজার নামাজে ইমাম সাহেব দোয়া করেছিলেন বাংলাদেশকে রক্ষা করার জন্য। তখনই লাখো মানুষ ডুঁকরে কেঁদেছিলেন। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই দেশের মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নেন শহীদ জিয়া। বিএনপি মহাসচিব বলেন, যখন সমগ্র জাতি কিংকর্তব্যবিমূঢ় তখনই সেই অখ্যাত মেজর জিয়াউর রহমানের কণ্ঠে দেশের মানুষ স্বাধীনতার ঘোষণা শুনতে পান। তারা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। এরপরই আওয়ামী লীগ একদলীয় শাসন বাকশাল কায়েম করেছিল। আজকে তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা শুনলে হাসি পায়। তারা অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে জিয়াউর রহমানকে খাটো করতে চায়। কারণ তিনি যুদ্ধ করেছিলেন। আর আওয়ামী লীগ পালিয়ে গিয়েছিল।
মির্জা ফখরুল দেশের উন্নয়নের জিয়াউর রহমানের অবদান প্রসঙ্গে বলেন, যেখানেই যাবেন সেখানেই তার অবদান দেখতে পাবেন। কোনদিকে তাকাবেন? সব খানে তাকে পাবেন। নারী ও শিশু মন্ত্রণালয় তার সৃষ্টি। চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম গবেষণা কেন্দ্র তার দেয়া, ঈশ্বরদীতে সুগার রিসার্চ ইনসটিটিউট তার দেয়া, খামার বাড়িতে গবেষণা কেন্দ্র তার সৃষ্টি। এমনিভাবে অসংখ্য জায়গায় তার নামফলক রয়েছে।
শহীদ জিয়াকে মিতব্যয়ী আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, জিয়ার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২ হাজার টাকার বেশি কখনোই থাকতোনা। নিজের একটু জমিও নেই তার। মৃত্যুর পর তার একটা ভাঙা স্যুটকেস পাওয়া গিয়েছিল। এখানেই তিনি অনন্য ব্যক্তিত্বের অধিকারী এবং একজন জনতার নায়ক।
বিএনপি’র এই নেতা বলেন, আজকে আওয়ামী লীগ দেশে পরিকল্পিতভাবে বিভাজন সৃষ্টি করেছে। তারা প্রথম আঘাত এনেছে রাজনীতিতে। এভাবে সর্বস্তরে তারা ধ্বংস করছে। প্রবৃদ্ধি নিয়ে মিথ্যাচার করছে। সরকার সমগ্র মানুষকে প্রতারিত করছে। এখন প্রবৃদ্ধি হচ্ছে শুধু আওয়ামী লীগের নেতা নেত্রীদের। বাকী সবই মিথ্যাচার করছে সরকার।
দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, শহীদ জিয়া মাত্র ১০ বছরে বাংলাদেশের মানুষের মণিকোঠায় স্থান করে নেন তার অনন্য গুণাবলী দ্বারা। তিনি দিশেহারা মানুষের মাঝে অকুতোভয় চিত্তে দেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। এমনকি নিজেও যুদ্ধ করেন, সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন। তিনি আমাদের জাতিসত্তার পরিচয়টা দিয়ে গেছেন। সংবিধানে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম অন্তর্ভুক্ত করেন। এটা মুছে ফেলা যাবেনা। শহীদ জিয়া আধুনিক বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা। আজকে গায়ের জোরে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত আওয়ামী লীগ সরকার ফ্যাসিবাদী আচরণ করছে। কারণ তাদের জনভিত্তি নেই।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, তিনটি বিশেষগুণে শহীদ জিয়া রাষ্ট্রনায়ক। তিনি একটি দর্শন দিয়েছেন, স্বপ্ন দিয়েছেন এবং দর্শন বাস্তবায়নে বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। জমির আইলে আইলে হেটে হেটে মানুষের সাথে সম্পর্ক গড়েছেন। সরকারি কর্মকর্তারা সাথে ছিলেন।
তিনি বলেন, একাত্তর সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে দেশের জনগণকে সক্রিয় করেছিলেন। জিয়াউর রহমানের ইমেজ ছিল ক্লিন। যতই ষড়যন্ত্র আর ইতিহাস বিকৃতি করেননা কেনো তিনি মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। তিনি অমর হয়ে থাকবেন।
মওদুদ আহমদ বলেন, আওয়ামী লীগ ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে ঠিকই কিন্তু তারা নিজেরাই তা মানেনা। এখন ভোট পাওয়ার জন্য হেফাজতের সঙ্গে সম্পর্ক করছে। এসব করে লাভ নেই। অতীতে খেলাফতে মজলিসের সাথে ৫ দফা চুক্তি করেছিল ভোটের জন্য। আজকের পরিস্থিতি বিবেচনায় মনে হয় আওয়ামী লীগ সুবিধাবাদী দল। বহু বছর হয়েছে দেশের মানুষ এখন পরিবর্তন দেখতে চায়।
মির্জা আব্বাস বলেন, জিয়াউর রহমান মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। যখন গণমাধ্যমের গলা টিপে ধরা হয়েছিল। আজো গণমাধ্যমের গলা টিপে ধরা হয়েছে। তারা বলতে পারেনা, লিখতে পারেনা। আমি মনে করি এই সরকারই শেষ সরকার নয়। আসুন আমরা শহীদ জিয়ার আদর্শ বাস্তবায়নে ঐক্যবদ্ধ হই।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, দেশকে সমৃদ্ধকরণের জন্য যা দরকার তার সবই করেছিলেন শহীদ জিয়া। স্বাধীনতার পর একটি ভঙ্গুর দেশকে তলাবিহীন ঝুড়ির খেতাব ঘুচিয়েছিলেন। শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নারীর কর্মসংস্থান করেছিলেন। বেকারদের কর্মসংস্থানের জন্য বিদেশে কর্মসংস্থান তৈরি করেছিলেন। ১৯৭৬ সালে সাড়ে ৮ হাজার লোক মধ্যপ্রাচ্যে পাঠিয়ে শ্রমবাজার প্রতিষ্ঠা করেন। কৃষকের কাছে গিয়ে মাঠে কাজ করেছেন, খোঁজ নিয়েছেন। এটা দূরদর্শী মনোভাব না হলে হয়না। আজকে ক্ষমতাসীন সরকার আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে। আসুন আরেকটিবার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আন্দোলন গড়ে তুলি।
আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরি বলেন, জিয়া কখনোই মুক্তিযুদ্ধকে পুঁজি করে রাজনীতি করেননি। এখান থেকে বহু দুরে ছিলেন তিনি। অথচ বর্তমান সরকার তা করছে। এখানেই জিয়া সারাবিশ্বে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তিনি বলেন, দেশ স্বাধীনের পর জাতি যখন পরিচয় সঙ্কটে ভুগছিলেন তখনই শহীদ জিয়া জাতির পরিচয় দিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে আমাদের পরিচয়টা দিয়েছিলেন। আজকে রেইনবো জাতির ভিত্তি হলো সেই বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ। এরমাধ্যমে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাবো। বাংলাদেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি গার্মেন্টস শিল্প প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বৈদেশিক কর্মসংস্থানের মাধ্যমে রেমিনট্যান্সের মূল নায়ক হলেন জিয়াউর রহমান। কৃষির জন্য সেচ ব্যবস্থা চালু করেছিলেন। এসময় জিয়াউর রহমান জীবনের ওপর অনেককিছু তুলে ধরেন আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরি এ্যানী ও সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সঞ্চালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, শ্রমিকদল সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, যুবদলের সাইফুল আলম নীরব, স্বেচ্ছা সেবকদলের শফিউল বারী বাবু, ছাত্রদল সভাপতি রাজীব আহসান, মহানগর উত্তরের বজলুল বাসিত আনজু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার প্রমুখ।
এছাড়াও সভায় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, আব্দুস সালাম আজাদ, রফিক সিকদার, আমিনুল হক, আব্দুল কাদের ভুইয়া জুয়েল, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, আব্দুল মালেক, শাহ নেছারুল হকসহ বিএনপির নেতাকর্মীরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।