Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গরমে তালের শাসে প্রশান্তি

| প্রকাশের সময় : ২৯ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আরিচা সংবাদদাতা : কেউ বলে তালের শাস, কেউ বলে তালের কুই, কেউ বলে তালের আটি। গরমের মধ্যে তৈলাক্ত খাবারের চেয়ে তালের শাস অনেক উপকারী। এর রয়েছে অনেক গুনাগুন। তাই জৈষ্ঠের এ মধু মাসে বাজারে নানা ফল ওঠলেও মানিকগঞ্জে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে তালের শাস। গ্রীস্মের এই দিনে মানিকগঞ্জে তালের শাঁস খুবই জনপ্রিয় একটি খাবার। তাই সবার হাতে পোঁছে যায় কঁচি তালের শাস। বর্তমানে এর চাহিদা অনেক বেড়েছে। বিক্রেতা শাস কেটে সারতে পারছেনা, ক্রেতারা দড়িয়ে রয়েছে শাস নিতে।
জানা গেছে, মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলার গৃহস্তদের গাছের তালের শাস যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীসহ সকল বয়সী লোকের মাঝে এই তালের শাসের কদর দিন দিন বেড়েই চলছে।
উপজেলার শিবালয়, ঘিওর ও হরিরামপুর উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন পল্লি এলাকায় তাল গাছ রয়েছে। তাবে কৃষি বিভাগে এর কোন পরিসংখ্যান নেই। তালের শাস অতি সু স্বাদু হওয়ায় সকল শ্রেণীর মানুষের মাঝে তালের শাস একটি জনপ্রিয় ফল।
জেলার বিভিন্ন হাট-বাজার এবং মেলা ও বাসস্ট্যান্ডগুলোতে এবং অলিতে গলিতে তালের শাস বিক্রি করে অনেক হত দরিদ্র মানুষ জীবিকা নির্বাহ করছেন।
উপজেলার তেওতা ইউনিয়নের জমদুয়ারা গ্রামের মেহের আলী জানান, তিনি প্রতিবছরই এ দিনে তালের শাস বিক্রি করে সংসার চালান। গ্রাম অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে তাল ক্রয় করে গাছ থেকে পেরে এনে শাস বিক্রি করেন। তবে গাছ ওঠে, বাঁধা ধরে পাড়া সবচেয়ে কষ্ট কর। বৈশাখ মাস থেকে জৈষ্ঠের অর্ধেক পর্যন্ত এ দেড় মাস চলবে তালের শাস বিক্রির কাজ। প্রতিদিন প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ শাস বিক্রি করা যায়। একটি শাস আকার ভেদে ১০ থেকে ১৫টাকা দরে বিক্রি করছি। এতে তার প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা লাভ হয়। তালের শাস বিক্রি করে চার জনের সংসার ভালই চলছে।
ক্রেতা হাসান চৌধুরী জানান, তালের শাস একটি সুস্বাদু ফল। গরম থেকে এসে তালের শাস ক্ষেতে ভালই লাগে। ফলে এর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। তবে তাল গাছ এক পায়ে দাড়িয়ে, সব গাছ ছাড়িয়ে উকি মারে আকাশে, কবির সে কবিতার মতো সারি সারি তাল গাছ রাস্তার দুধারে এমন দৃশ্য আর চোখে পড়েনা। কালের বিবর্তনে মানিকগঞ্জের পল্লি অঞ্চলের তাল গাছ হারিয়ে যাচ্ছে।
কৃষক আমজাদ হোসেন জানান, এক সময় মানুষ সখ করে বাড়ির পাশে কিমবা রাস্তার ধারে তালের বীচ বোপন করতো। গাছ থেকে তাল পারা খুব কষ্টকর কাজ হওয়ায় মাঝে তালগাছ বোপন কমে গিয়েছিল। এলাকা ভেদে একটি তালে পাইকারি দাম তিন থেকে চার টাকা। খুরচা দশ টাকা থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। ফলে তালের চাহিদা বেড়েছে। আনেকে আবার তাল গাছ বোপনের দিকে ঝুকছে।
মানিকগঞ্জে পাইকারী তাল শাষ বিক্রেতা ইদ্রিস আলী জানান, আমরা একটি গাছের তাল ৩০০ থেকে ৪০০টাকায় কিনে থাকি। ঢাকায় নিয়ে এক হাজার তাল শাস ২ থেকে ৩হাজার টাকায় বিক্রি করে থাকি। তিনি জানান এক থেকে দেড় মাস পর্যন্ত তাল শাস বিক্রি করা যাবে।
তালের শাসের পুষ্টি গুনাগুণ সম্পর্কে ডা. আশরাফ বলেন, তালের শাস শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি ফল। গরমের দিনে তালের শাসে থাকা জলীয় অংশ পানি শূন্যতা দুর করে। এছাড়া ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি, এ, বিকমপ্লেক্সসহ নানা ধরনের ভিটামিন রয়েছে। তালে থাকা এন্টি অক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। কচি তালের শাস রক্তশূন্যতা দুর করে। চোখের দৃষ্টি শক্তি ও মুখের রুচি বাড়ায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ