Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

বিশ্ব নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস আজ

| প্রকাশের সময় : ২৮ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বিশ্ব নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস আজ। বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও নানা আয়োজনে দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘নিরাপদ প্রসব চাই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চল যাই।’ গতকাল রাজধানী মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ম্যাটারনাল হেলথ কর্মসূচীর উদ্যোগে নিরাপদ মাতৃত্ব-২০১৭ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সভায় বক্তারা মাতৃস্বাস্থ্য, নিরাপদ প্রসব, পুষ্টি ও স্বাস্থ্য সেবার গুণগত মান সম্পর্কে মা, পরিবার ও সমাজের সকল স্তরে সচেতনতা নিশ্চিতে জোর দেন। এ সময় বিশেষজ্ঞরা জানান, দেশে প্রতিদিন গড়ে ১৪ জন মা প্রসবজনিত কারনে অনাকাঙ্খিত মৃত্যুবরণ করছেন। এ হিসেবে বছরে ৫ হাজার ১১০ জন মা প্রসবজনিত জটিলতায় মারা যাচ্ছে। তবে শতকরা ৪২ শতাংশ প্রসব দক্ষদের দ্বারা হলেও অবশিষ্ট ৫৮ শতাংশ প্রসব বাড়ীতে অপ্রশিক্ষিত দাইদের হাতে হচ্ছে।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর আবুল কালাম আজাদ বলেন, দেশে প্রতি বছর ৩০ থেকে ৩২ লাখ শিশু জন্ম নেয়। এর মধ্যে বাড়িতে ৭২ শতাংশ ও হাসপাতালে ২৮ শতাংশ সন্তান জন্ম নিচ্ছে। এর মধ্যে ৩০ ভাগ প্রসূতি মাকে প্রাইভেট হাসপাতালে সিজার করাতে হচ্ছে। তবে চলমান চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচীতে (২০১৭-২০২২) মাতৃস্বাস্থ্যকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। সকল মেডিকেল কলেজ ও জেলা হাসপাতালের সঙ্গে ১৫৯ টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সমন্বিত জরুরী প্রসূতি সেবা কার্যক্রম বিদ্যামান আছে। পাশাপাশি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রগুলোতেও সীমিত আকারে এ সেবা দেয়া হচ্ছে।
এ সময় তিনি মায়ের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে প্রথম সন্তান প্রসবের পর ৩ তিন বছর বিরতি নেয়ার পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে গর্ভবতী মায়েদের ভারী জিনিস বহন না করা, নিয়মিত টীকা নেয়ার পাশাপাশি প্রসব পূর্ব বা প্রসব পরবর্তী সেবা এবং বাড়ীতে প্রসবকালীন জটিলতা দেখা দিলে দ্রæত ক্লিনিক ও হাসপাতালে নেয়ার জন্য স্বজনদের প্রতি আহŸান জানান।
স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক বলেন, মা ও শিশুর মৃত্যুরোধ এবং তাদের স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী অসুস্থ্যতার বিষয়ে সচেতনতা করাই এ দিবসের মূল উদ্দ্যেশ্য। তিনি বাংলাদেশের মাতৃস্বস্থ্য উন্নয়ন তথা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) ২০৩০ সালের মধ্যে অর্জনের জন্য সাংবাদিক জনপ্রতিনিধি, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারী ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার অংশ গ্রহনের আহŸান জানান। একই সঙ্গে বাল্যবিবাহ রোধে গুরুত্ব দিয়ে পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণ ও শিশুদের নিয়মিত টীকা দেয়ার কথা বলেন। তিনি বলেন, বর্তমানে মাতৃস্বাস্থ্য উন্নয়নে ১ হাজার ৫০০ টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে নিরাপদ প্রসব সেবা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে জরুরী প্রসূতি সেবার মান উন্নয়নে অধিদপ্তরের আওতাধীন চিকিৎসকদের প্রসূতি সেবার প্রশিক্ষন চলছে। এমনকি হতদরিদ্র মায়েদের প্রসূতি সেবা নিশ্চিত কল্পে ৪১ টি জেলার ৫৩ উপজেলায় মাতৃস্বাস্থ্য ভাউচার স্কীম চালু করা হয়েছে। আর চলমান সেক্টর কর্মসূচীর আওতায় প্রতি বছর ১০ টি করে উপজেলায় এটি সম্প্রসারন করা হবে। ফলে ২০২২ সালের মধ্যে ১০৩ টি উপজেলায় এ কার্যক্রম ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব হবে। উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সাল থেকে দেশে দিবসটি পালন করা হচ্ছে। শিশুর জন্মদান ও মাতৃত্ব সম্পর্কিত সমস্যগুলো চিহ্নিত করা ও এ গুলোর সুষ্ঠ সমাধানের পথ খোঁজ এই দিবসটির অন্যতম উদ্দেশ্য। সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর ম্যাটারন্যাল, নিওনেটাল, চাইল্ড এন্ড এডোলোসেন্ট হেলথ (এমএনসিএন্ডএএইচ) ডা. জাহাঙ্গীর আলম সরকার, প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা.পবিত্র কুমার শিকদার, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনেসেফ ও ইউএনএফপি’র প্রতিনিধিরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ