Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মনোহরদীর রামপুরে রহস্যজনক গুপ্তহত্যা স্ত্রীকে গলাকেটে ও স্বামীকে শ্বাসরোধে হত্যা

| প্রকাশের সময় : ২৮ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : সকালে ঘুম থেকে উঠে মক্তবে যাবার পথে মাকে ডাকাডাকি করতে গিয়ে দেখি বিছানায় মায়ের গলাকাটা রক্তাক্ত দেহ পড়ে রয়েছে। বাবা ঘরে নেই। কিছুক্ষণ পর খবর পাই বাড়ী থেকে ১ কিলোমিটার দূরে একটি জমিতে বাবার লাশ পড়ে রয়েছে। গুপ্ত ঘাতকদের হাতে নিহত পিতামাতার বীভৎস হত্যাকান্ডের লোমহর্ষক ঘটনার এভাবেই বর্ণনা দিয়েছে তাদের ৯ বছরের শিশু সন্তান খায়রুল ইসলাম। গত বৃহস্পতিবার রাতে গুপ্ত ঘাতকরা শিশু খায়রুলের মা আফিয়া বেগম (৪৫)কে গলা কেটে এবং পিতা ইব্রাহিম মিয়া (৫৫)-কে শাসরোধ করে হত্যা করেছে। এমন রহস্যজনক গুপ্তহত্যা এলাকার মানুষকে নির্বাক করে দিয়েছে।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে মনোহরদী উপজেলার পশ্চিম রামপুর গ্রামের ইব্রাহিম মিয়া ও তার স্ত্রী আফিয়া বেগমের ৩ সন্তান-সন্তুতি নিয়ে তাদের সংসার। বৃহস্পতিবার রাতে খাওয়া দাওয়া শেষে তাদের ছোট সন্তান খায়রুল ইসলামকে নিয়ে ঘরের ভিতর এক বিছানায় ঘুমিয়ে থাকে। রাতের যে কোন সময় গুপ্ত ঘাতকরা দরজা খোলে ঘরে ঢুকে খায়রুলের মা আফিয়া বেগমকে গলাকেটে হত্যা করে চাদর দিয়ে ঢেকে রেখে চলে যায়। সকাল বেলা শিশু খায়রুল ঘুম থেকে জেগে দেখে সে অন্য বিছানায় শুয়ে রয়েছে। সে সেখান থেকে উঠে দেখতে পায় ঘরের দরজা খোলা। এই অবস্থায় সে আম কুড়াতে চলে যায় এবং সেখান থেকে বাড়ী ফিরে অজু করে মক্তবে যাবার সময় তার মাকে ডাকতে থাকে। মায়ের কোনো সাড়া না পেয়ে ঘুমন্ত মায়ের পায়ে ধরে নাড়া দেয়। এতেও মায়ের কোন সাড়া না পেয়ে গায়ে থাকা চাদরটি সরিয়ে দেখতে পায় মায়ের গলাকাটা রক্তাক্ত দেহ পড়ে রয়েছে। এ অবস্থায় খায়রুল চিৎকার করতে থাকলে আশেপাশের লোকজন দৌড়ে গিয়ে আফিয়া বেগমের গলাকাটা লাশ দেখতে পায়। এর কিছুক্ষণ পরই লোকজন এসে খবর দেয় যে এক কিলোমিটার দূরে একটি জমিতে খায়রুলের পিতা ইব্রাহিম মিয়ার লাশ পড়ে রয়েছে।
খবর পেয়ে পুলিশ নিহত আফিয়া বেগম ও ইব্রাহিম দম্পতির লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এই গুপ্তহত্যার কোন কারণ জানা যায়নি। নিহত দম্পত্তির জামাতা মোঃ শাহাদাৎ হোসেন জানান, আমার শ্বশুর শ্বাশুড়ির মধ্যে খুবই সু-সম্পর্ক ছিল। তাদের মধ্যে কখনো ঝগড়া-ঝাটি হয়েছে বলে আমার জানা নেই। গত শুক্রবার সকালে তাদের মৃত্যুর খবর পেয়ে আমি দ্রæত শ্বশুর বাড়ী চলে আসি। নিহত ইব্রাহিমের বড় ভাই রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, আমার ভাই ও তার স্ত্রীকে ঘাতকরা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। হত্যাকারীদেরকে খুজে বের করে দৃষ্টন্তমূলক শান্তির দাবী জানিয়েছেন রফিকুল ইসলাম। মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম ফরাজী সাংবাদিকদেরকে জানান, বিষয়টি খুবই রহস্যজনক। স্ত্রীকে হত্যার পর ইব্রাহীম মিয়া আত্মহত্যা করেছে, না তাদের মেরে ফেলা হয়েছে, সে বিষয়টি পরিস্কার নয়। তদন্ত করা হচ্ছে। অচিরেরই জোড়া খুনের বিষয়টির রহস্য উন্মোচন করা হবে। নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এই ব্যাপারে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ