Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভাস্কর্য সরানোর নির্দেশ প্রধান বিচারপতির সরকারের নয় -মওদুদ আহমদ

| প্রকাশের সময় : ২৭ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : সুপ্রিম কোর্টের ভাস্কর্য সরানোর বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেছেন, এই ভাস্কর্য অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি নিজে, সরকার কোন নির্দেশ দেয়নি। তিনি বলেন, আমি আপনাদের জানাতে চাই, আমাদের মাননীয় প্রধান বিচারপতি তিনি এই ভাস্কর্য অপসারণের সিদ্ধান্ত নিজে নিয়েছেন। তিনি সরকারের নির্দেশে এটা করেন নাই। তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি সিনিয়র আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে ভাস্কর্য সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার সিদ্ধান্তেই ভাস্কর্যটি সরানো হয়েছে। এখানে সরকারের কোনো কৃতিত্ব নেই।
গতকাল শুক্রবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ‘বরকতউল্লাহ বুলু মুক্তি পরিষদ’ নামক সংগঠনের উদ্যোগে বিএনপির কারাবন্দি ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলুর মুক্তির দাবিতে এই সমাবেশ হয়।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, এই যে ভাস্কর্য, মৃনাল হকের ভাস্কর্য। তিনি বলেছেন এটা কোনো দেবীর ভাস্কর্য নয়, বাংলাদেশে একজন শাড়ি পরা নারীর ভাস্কর্য। সেটার ওপর কত রকমের কথা-বার্তা হয়েছে, কত রকমের বির্তক তোলার চেষ্টা করা হয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রীসহ সকলেই এমন একটা ভাব যেন এই জিনিসটা, এই ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহন করার তারা উদ্যোগ নেবেন। কিন্তু সরকার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। প্রধান বিচারপতি নিজে এই ভাস্কর্য অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন।
দেশের অন্যতম সিনিয়র এই আইনজীবী বলেন, এই সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে গতকাল দেড়টার সময়ে মাননীয় প্রধান বিচারপতি সভা ডেকেছিলেন। সেখানে ড. কামাল হোসেন ছিলেন, আমীরুল ইসলাম ছিলেন, এটর্নি জেনারেল ছিলেন, আমাদের বার এ্যাসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ও সেক্রেটারি ছিলেন। আমাদের সেক্রেটারি খোকন (ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন) এখন বললো, সব সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, এজে মোহাম্মদ আলী যারা ছিলেন, সকলের সঙ্গে তিনি (প্রধান বিচারপতি) পরামর্শ করেছিলেন। কী করা যায়?
তিনি বলেন, তারা পরামর্শ দিয়েছিলেন যে, আপনি এই ভাস্কর্যটি সরিয়ে নিলে ভালো হয়, এ নিয়ে কোনো বির্তক থাকুক, প্রধান বিচারপতিকে বির্তকিত করা হোক- এটা আমরা কেউ চাই না।
মওদুদ বলেন, প্রধান বিচারপতি সিনিয়র আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে ভাস্কর্য সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার সিদ্ধান্তেই ভাস্কর্যটি সরানো হয়েছে। এখানে সরকারের কোনো কৃতিত্ব নেই।
ইসি ঘোষিত রোডম্যাপ একদলীয়
নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত ‘রোডম্যাপ’ প্রসঙ্গে মওদুদ বলেন, এই নির্বাচন কমিশন অগ্রহনযোগ্য একটি কমিশন, এটি নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন কমিশন নয়, এটি সরকারের একটি তল্পিবাহক একটি কমিশন। এই রোডম্যাপ দিয়েছেন তারা কীভাবে একদলীয়ভাবে একটা আগামীতে নির্বাচন করা যায়, সেটার রূপরেখা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা বলতে চাই, বাংলাদেশের মাটিতে আর একদলীয় নির্বাচন করতে দেয়া হবে না। এজন্য বিএনপিসহ সকল গণতান্ত্রিক শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের নিশ্চিত করার জন্য আন্দোলন করবে। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই।
নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের একটি রূপরেখা বিএনপির পক্ষ থেকে শিগগিরই দেয়া হবে বলেও জানান মওদুদ। তিনি বলেন, এই সরকার সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে চায় এবং করেছে। প্রশাসন, র‌্যাব-পুলিশ, নির্বাচন কমিশন, পাবলিক সার্ভিস কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ যত কমিশন আছে, সবই তারা নিয়ন্ত্রনে এনেছে। এখন বাকী আছে শুধু বিচার বিভাগ।
তিনি বলেন, সেজন্য ১৬তম সংশোধনী পাস করেছে। বিচারপতিদের অপসারণের বিষয়টি সংসদ ব্যবস্থা করবে, সিদ্ধান্ত নেবে। যেই সংসদ নির্বাচিত সংসদ নয়, সত্যিকার প্রতিনিধিত্ব সংসদ নয়। এই সংসদ যতগুলো সংশোধনী এনেছে বিশেষ করে ১৫তম ও ১৬তম সংশোধনী, বিএনপি যতদিন কোনোদিন ক্ষমতায় যায়, এসব সংশোধনী পরিবর্তন করার উদ্যোগ নেবে।
সংগঠনের উপদেষ্টা আকবর হোসেন ভুঁইয়া নান্টুর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, কেন্দ্রীয় আবুল খায়ের ভুঁইয়া, মাহবুবউদ্দিন খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি প্রমুখ।



 

Show all comments
  • Mohammed Shah Alam Khan ২৭ মে, ২০১৭, ৮:১৭ এএম says : 0
    সুপ্রিম কোর্টের ভাস্কর্য লাগানো ও সরানোর বিষয়ে একতিয়ার সুপ্রিম কোর্টের এটাই সত্য। প্রধান বিচারপতির নির্দেশে ভাস্কর লাগানো হয়েছিল আবার তারই নির্দেশে সরানো হয়েছে এটাও সত্য। আমি জানি প্রধান বিচারপতি ভাস্কর লাগানোর সময় কাওর পরামর্শ নেননি কিন্তু সড়ানোর সময় পরামর্শ নিয়েছেন এটাই সত্য। হেফেজতে ইসলাম এই ভাস্কর অপসারণের দাবী জনিয়ে আসছিল কিন্তু কোন ফল না হওয়াতে প্রধানমন্ত্রীর শরণাপন্ন হয় এবং প্রধানমন্ত্রী তাদের সাথে সহমত প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতিকে অনুরোধ করেন। প্রধান বিচারপতি দেশের প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধ রাখেননি এটাই আমাদের বিজ্ঞ রাজনীতিবিদ আমাদেরকে জানান দিলেন। এটাই ওনার কথায় প্রতিয়মান হয়েছে বলে আমি মনে করি। বিজ্ঞ রাজনীতিবিদ মওদুদ এখানে একটা বিষয় আমার মনে হয় ভুল করেছেন। সেটা হচ্ছে প্রতিপক্ষকে নিচা দেখানোর জন্যএকটা রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতির মধ্যে যে দন্দ এটাকে এভাবে ফুটেয়ে তোলাটাকি ঠিক হয়েছে। আল্লাহ্‌ আমাকে সহ সবাইকে সর্বদিক বিবেচনা করে কথা বলার ক্ষমতা দান করেন। আমীন
    Total Reply(0) Reply
  • Nur- Muhammad ২৭ মে, ২০১৭, ১১:৫৫ এএম says : 0
    এই ব্যাপারে আপনাদের ত হাঁ বা না কোন মন্তব্য ছিল না। তা হলে আজ একটি শান্তিপূর্ন সমাধান নিয়ে কথা বলে কি সুখ পেলেন। আপনি বলছেন এই সমাধানে সরকারের কোন ভূমিকা নাই। কিন্তু জন গণ জানে সরকারের ইচ্ছায়ই মূর্তি অপসারিত হয়েছে। সরকার প্রধান যখন বললো, এই মূর্তি তার ও পছন্দ নয়। তখন ই যারা মূর্তি বসায়েছিল, তাদের ততপরতা শুরু হয়। অবশেষে মূর্তি অপসারিত হলো। মাননীয় প্রধানমন্রী না চাইলে মূর্তি অপসারিত হতো না। এটাই বাস্তব। এটাই সত্য। তাই রাজনৈতিক কূট কথা না বলে, সত্য কথা বলুন। জনগণকে ভাল এবং সত্য উপহার দিন। ধন্যবাদ। সবায়কে ধন্যবাদ।
    Total Reply(0) Reply
  • ফরিদ উদ্দীন ২৭ মে, ২০১৭, ৬:১৮ পিএম says : 0
    ব্যারিস্টার মওদুদ ও মুহাম্মাদ শাহ্ আলম মহোদয়গণকে বলি, কাঁদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ করুন। কারণ মূর্তি সরানোর পিছনে সরকারের কোন অবদান নেই, কেননা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক ও. কাদের স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন সরকারের সিদ্ধান্তে মূর্তি সরানো হয়নি। আর বিচারপতিরও কোন অবদান নেই, কারণ ওই তিনিই মূর্তি স্থাপনের সিদ্ধান্ত ঝামেলা সৃষ্টি করেছেন। প্রশ্ন থেকে যায় অবদানটা কার? বলছি! চরমোনাই পীর সাহেবের ঐতিহাসিক আল্টিমেটাম, হেফাজতে ইসলামের হুংকার, আহমাদ শফি সাহেবের হিকমত ও ৯০%মুসলমানের জাগরণে বাধ্য হয়ে মূর্তি সরানো হয়েছে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ