বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
স্টাফ রিপোর্টার : সুপ্রিম কোর্টের ভাস্কর্য সরানোর বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেছেন, এই ভাস্কর্য অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি নিজে, সরকার কোন নির্দেশ দেয়নি। তিনি বলেন, আমি আপনাদের জানাতে চাই, আমাদের মাননীয় প্রধান বিচারপতি তিনি এই ভাস্কর্য অপসারণের সিদ্ধান্ত নিজে নিয়েছেন। তিনি সরকারের নির্দেশে এটা করেন নাই। তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি সিনিয়র আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে ভাস্কর্য সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার সিদ্ধান্তেই ভাস্কর্যটি সরানো হয়েছে। এখানে সরকারের কোনো কৃতিত্ব নেই।
গতকাল শুক্রবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ‘বরকতউল্লাহ বুলু মুক্তি পরিষদ’ নামক সংগঠনের উদ্যোগে বিএনপির কারাবন্দি ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলুর মুক্তির দাবিতে এই সমাবেশ হয়।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, এই যে ভাস্কর্য, মৃনাল হকের ভাস্কর্য। তিনি বলেছেন এটা কোনো দেবীর ভাস্কর্য নয়, বাংলাদেশে একজন শাড়ি পরা নারীর ভাস্কর্য। সেটার ওপর কত রকমের কথা-বার্তা হয়েছে, কত রকমের বির্তক তোলার চেষ্টা করা হয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রীসহ সকলেই এমন একটা ভাব যেন এই জিনিসটা, এই ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহন করার তারা উদ্যোগ নেবেন। কিন্তু সরকার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। প্রধান বিচারপতি নিজে এই ভাস্কর্য অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন।
দেশের অন্যতম সিনিয়র এই আইনজীবী বলেন, এই সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে গতকাল দেড়টার সময়ে মাননীয় প্রধান বিচারপতি সভা ডেকেছিলেন। সেখানে ড. কামাল হোসেন ছিলেন, আমীরুল ইসলাম ছিলেন, এটর্নি জেনারেল ছিলেন, আমাদের বার এ্যাসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ও সেক্রেটারি ছিলেন। আমাদের সেক্রেটারি খোকন (ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন) এখন বললো, সব সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, এজে মোহাম্মদ আলী যারা ছিলেন, সকলের সঙ্গে তিনি (প্রধান বিচারপতি) পরামর্শ করেছিলেন। কী করা যায়?
তিনি বলেন, তারা পরামর্শ দিয়েছিলেন যে, আপনি এই ভাস্কর্যটি সরিয়ে নিলে ভালো হয়, এ নিয়ে কোনো বির্তক থাকুক, প্রধান বিচারপতিকে বির্তকিত করা হোক- এটা আমরা কেউ চাই না।
মওদুদ বলেন, প্রধান বিচারপতি সিনিয়র আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে ভাস্কর্য সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার সিদ্ধান্তেই ভাস্কর্যটি সরানো হয়েছে। এখানে সরকারের কোনো কৃতিত্ব নেই।
ইসি ঘোষিত রোডম্যাপ একদলীয়
নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত ‘রোডম্যাপ’ প্রসঙ্গে মওদুদ বলেন, এই নির্বাচন কমিশন অগ্রহনযোগ্য একটি কমিশন, এটি নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন কমিশন নয়, এটি সরকারের একটি তল্পিবাহক একটি কমিশন। এই রোডম্যাপ দিয়েছেন তারা কীভাবে একদলীয়ভাবে একটা আগামীতে নির্বাচন করা যায়, সেটার রূপরেখা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা বলতে চাই, বাংলাদেশের মাটিতে আর একদলীয় নির্বাচন করতে দেয়া হবে না। এজন্য বিএনপিসহ সকল গণতান্ত্রিক শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের নিশ্চিত করার জন্য আন্দোলন করবে। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই।
নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের একটি রূপরেখা বিএনপির পক্ষ থেকে শিগগিরই দেয়া হবে বলেও জানান মওদুদ। তিনি বলেন, এই সরকার সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে চায় এবং করেছে। প্রশাসন, র্যাব-পুলিশ, নির্বাচন কমিশন, পাবলিক সার্ভিস কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ যত কমিশন আছে, সবই তারা নিয়ন্ত্রনে এনেছে। এখন বাকী আছে শুধু বিচার বিভাগ।
তিনি বলেন, সেজন্য ১৬তম সংশোধনী পাস করেছে। বিচারপতিদের অপসারণের বিষয়টি সংসদ ব্যবস্থা করবে, সিদ্ধান্ত নেবে। যেই সংসদ নির্বাচিত সংসদ নয়, সত্যিকার প্রতিনিধিত্ব সংসদ নয়। এই সংসদ যতগুলো সংশোধনী এনেছে বিশেষ করে ১৫তম ও ১৬তম সংশোধনী, বিএনপি যতদিন কোনোদিন ক্ষমতায় যায়, এসব সংশোধনী পরিবর্তন করার উদ্যোগ নেবে।
সংগঠনের উপদেষ্টা আকবর হোসেন ভুঁইয়া নান্টুর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, কেন্দ্রীয় আবুল খায়ের ভুঁইয়া, মাহবুবউদ্দিন খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।