Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিবির নাছির হত্যার উদ্দেশে আমাকে বন্দুক তাক করেছিল-আদালতে গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন

| প্রকাশের সময় : ২৬ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : ফটিকছড়িতে ১৯৯২ সালে মুক্তিযোদ্ধা হারুন বশরকে হত্যার সময় গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফকে হত্যার উদ্দেশ্যে বন্দুক তাক করেছিল শিবির ক্যাডার নাছির। গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের সপ্তম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ফেরদৌস আরার আদালতে দেয়া সাক্ষ্যে তিনি এ তথ্য জানান। ইসলামী ছাত্রশিবিরের ক্যাডার মোঃ নাছির উদ্দিন ওরফে শিবির নাছিরের নেতৃত্বে ১৯৯২ সালের ৮ মে ফটিকছড়ির মোহাম্মদ তকিরহাট এলাকায় ওই হামলা চালানো হয় বলেও আদালতে জানান মোশাররফ হোসেন। হত্যা মামলাটির বাদি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফের গাড়ির চালক ইদ্রিস মিয়াও গতকাল আদালতে সাক্ষ্য দেন।
আদালতে দেয়া সাক্ষ্যে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, সন্ধ্যার দিকে নিশান পেট্রোল মডেলের জিপে চড়ে শহরে ফেরার সময় তকিরহাট এলাকায় পৌঁছালো ৪০-৫০ জনের সশস্ত্র একটি দল গাড়িতে হামলা করে। গাড়ির সামনের আসনে ছিলেন হারুন বশর। মাঝখানে আমি ও আবু আহমেদ। পিছনের আসনে ইউনুস গণি চৌধুরী এবং জসিম উদ্দিন শাহ ও সাজ্জাদ। সশস্ত্র হামলাকারীরা হারুন বশরের বুকে অস্ত্র তাক করলে তিনি বাধা দেয়ার চেষ্টা করেন বলেও জানান ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ। তিনি বলেন, হারুন বশরকে গাড়ি থেকে নামিয়ে ফেললে আমি তাকে ছেড়ে দিতে বলি। এসময় আমার চোখের সামনে ব্রাশফায়ার করে বশরকে হত্যা করে। রাজনৈতিক সহকর্মী ভুজপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সেসময়ের সাধারণ সম্পাদক হারুন বশরের হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি।
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ বলেন, তারপর নাছির আমার বুকে অস্ত্র তাক করে। তখন গাড়ির পেছনের আসনে বসা তিনজন গাড়ি থেকে নামে। সন্ত্রাসীরা তাদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। আমি পাশের বেতের ঝোপে ঝাপ দিয়ে শুয়ে পড়ি। সন্ত্রাসীরা ঝোপ লক্ষ্য করে গুলি করতে থাকে। গুলি আরেকটু নিচে দিয়ে গেলে আমি মারা পড়তাম। তিনি বলেন, শিবির নাছিরের নেতৃত্বে হামলা হয়। সেখানে মানুষ খুনের পর তারা মিছিল করে থানায় সামনে দিয়ে যায়। অথচ পুলিশ শুধু চেয়ে চেয়ে দেখল কিছুই করেনি।
বাদির আইনজীবী ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ স্ক্রল করে খালের পাশের মাঠ পেরিয়ে পার্শ্ববর্তী বাজারে এবং পরে হলুদিয়া গ্রামে এক ছাত্রলীগ কর্মীর বাড়িতে চলে যান। আদালতে মন্ত্রী মোশাররফ সাক্ষী দেয়ার সময় আসামির কাঠগড়ায় ছিলেন শিবির নাছির।
১৯৯২ সালের ৮ মে ফটিকছড়ি আজাদী বাজার এলাকায় উপজেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়েছিলেন সেসময়ের উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোশাররফ হোসেন। সম্মেলনের মধ্যাহ্ন বিরতিতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুই আওয়ামী লীগ নেতার জানাজা পড়তে মোশাররফ গিয়েছিলেন কলেজ মাঠে। জানাজা চলাকালে বিকেল তিনটায় শুরু হয় গোলাগুলি। গুলির ঘটনার পর সেখান থেকে গিয়ে ফটিকছড়ি থানায় অবস্থান নেন বলে আদালতে জবানবন্দিতে জানান মোশাররফ।
তিনি বলেন, তখন শুনি আমাদের কর্মী জমির উদ্দিন বাবুকে গুলি করে (আজাদী বাজার এলাকায়) খুন করা হয়েছে। পরে সন্ধ্যার দিকে গাড়িতে করে শহরে ফিরছিলাম। তখনই হামলা হয়। এ ঘটনায় ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফের গাড়ির চালক ইদ্রিস মিয়া বাদি হয়ে হত্যা মামলা করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ