Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হারিয়ে যাচ্ছে চিরচেনা কদমফুল

| প্রকাশের সময় : ২৬ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আল আমিন মন্ডল, গাবতলী (বগুড়া) থেকে : জ্যৈষ্ঠ মাসে বর্ষার আগমনে যেন কদম ফুলের হাসি ফুটেছে। প্রকৃতি সাজে ভিন্ন রুপে। তবুও চিরচেনা অপরুপ সুন্দরের অধিকারী বনফুল কদম। এ বর্ষায় কদমফুল ফুটেছে বগুড়া জেলাসহ উপজেলার গ্রাম্যঞ্চল এলাকায়। আর সেই চিরচেনা কদমফুল এখন হারিয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি ধোয়া আষাঢের বাতাসে কদম ফুলের ঘ্রাণ যেন স্বপ্নের রাজ্যে দোলা খাচ্ছে। গ্রামবাংলার প্রকৃতি আর বৃষ্টির প্রতিটি রিমঝিম ফোঁটা যেন সবাইকে সম্মোহিত করছে। গ্রাম্যঞ্চলের বর্ষার আগমনী বার্তা কদমফুল বগুড়া ও জয়পুরহাট শহর কিংবা গ্রাম থেকে মফস্বল এলাকায় যেন আপন মহিমায় আগমন ঘটেছে। গাছে গাছে ফুটেছে কদমফুল। একটি দুর্লভ ফুলের নাম কদম। তবুও কদমগাছ এখন কম চোখে পড়ছে। এক সময় ছিল বর্ষায় কদমফুলকে নিয়ে গ্রামবাংলায় চর্চা হতো কবিতা ও ছড়া-গান সাহিত্যে ও উপন্যাস। শিল্প সাহিত্যের ঐতিহ্যকে টিকে রাখতে কদমফুলের অগ্রণী ভ‚মিকা রয়েছে। কদমফুল আমাদের বর্ষা ও আষাঢ় মাসের দূত। প্রাকৃতির বুকে জেন সৌরভ বাতাসে দুলছে কদমফুল। জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষে আষাঢের শুরুতে ব্যাপক ভাবে কদমফুল ফুটে। এখন বগুড়া জেলাসহ গাবতলীতে উপজেলায় যেন কদমফুল হাসছে। গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে। কদমফুলের মৌ মৌ গন্ধে যেন দৃষ্টি কাড়ছে সবার। বর্ষার অনুভূতি ও অপরুপ সৌন্দর্য্যরে দাবিদার কদমফুল। তবুও আমরা যেন বাড়ীর উঠানে একটি করে কদমগাছের সৌরভ পেতে চায়। কিন্তু বাড়ীর আঙ্গিনায় রাস্তায় দু’পার্শ্বে ও পুকুরপাড়ে কদমগাছ ছিল চোখে পড়ার মত। আষাঢ়ের কদমগাছ ফুলে ফুলে ভরে থাকতো, সৌন্দর্য্য পিপাসুদের তৃপ্তি দিত। তরুন-তরুনীরা কদমফুল তাদের প্রিয়জনকে উপহার দিত। মেয়েরা পড়তো খোঁপায়। খেলায় মেতে উঠতো শিশুরাও। ফলে কদমফুলের গাছ ঘরবাড়ী ও আসবাপত্রে কাজে ব্যবহার হতো। ম্যাচ ফ্যাক্টারিতে কদম গাছের চাহিদা সবচেয়ে বেশী। কদমগাছ কমে যাওয়ায় এখন মানুষ ঐতিহ্যে ভুলতে বসেছে। সবাই এখন বাড়ীর আঙ্গিনায় ফলমূল ও ফুলের গাছ লাগাচ্ছে। ফলে হারিয়ে যেতে বসেছে কদম ফুলের গাছ। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট (জয়পুরহাট) মুহাঃ আহসান হাবিব জানান, বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যপূর্ণ একটি দেশ। এজন্য প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় প্রচুর পরিমানে গাছ লাগানো প্রয়োজন। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ও সংস্কৃতি ঐতিহ্যে রক্ষায় কদমফুলের অবদান রয়েছে। কদমফুল সৌন্দর্য্যে বৃদ্ধি করে ফলে সবার মন খুশি থাকে। গাবতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আঃ জাঃ মুঃ আহসান শহীদ সরকার জানান, আমরা সবকিছু ভুলে গিয়ে বাড়ীর আঙ্গিনায় ফুল ও বনজ বৃক্ষের চারা লাগানোর পাশাপাশি সৌন্দর্য্যে বৃদ্ধির জন্য কদমগাছ লাগানো দরকার। এমনকি বিভিন্ন প্রজাতির পাখি কদমফুল খায়। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ সোহরাব হোসেন জানান, ব্যক্তি পযার্য়ে ছাড়াও শিক্ষা প্রতিষ্টান, হাট-বাজার ও সরকারী বেসরকারী জায়গায় কদমগাছ লাগানো প্রয়োজন। তাহলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে বৃদ্ধি পাবে। উপজেলা উপ-সহকরী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা জুলফিকার আলী হায়দার জানান, সৌন্দর্য্যে ও মন ভাল রাখতে হলে কদম ফুলের বিকল্প নাই। এ বর্ষা’য় আমাদের সবাইকে একপক্ষে ১টি করে কদমফুলের গাছ লাগানো প্রয়োজন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ