Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রায়পুরা বাঁশগাড়ীরচরে এক দিকে আলোচনা আরেক দিকে বোমা চাঁদাবাজি ও লুটতরাজ

| প্রকাশের সময় : ২৫ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : রায়পুরার বাঁশগাড়ীরচরের দুই লাঠিয়াল বাহিনীর বিরোধ মিমাংসার জন্য এক দিকে চলছে আলোচনা আরেক দিকে চলছে চাঁদাবাজী, লুটতরাজ ও বোমাবাজী। গত মঙ্গলবার দুই লাঠিয়াল বাহিনীর দুই নেতা ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম এবং আওয়ামী লীগ নেতা সাহেদ সরকারকে নিয়ে রায়পুরা জেলা পরিষদ ডাকবাংলোতে শালিস বৈঠক করেছেন রায়পুরার এমপি ও সাবেক মন্ত্রী রাজি উদ্দিন আহমেদ রাজু। ঢাকা প্রবাসী বাঁশগাড়ী সমিতি বিরোধ মিমাংসার এই উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানা গেছে। বৈঠকে দুপক্ষ উপস্থিত থাকলেও তারা কোন মিমাংসায় পৌছতে পারেনি। আজ বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফা শালিশ বৈঠকের কথা রয়েছে। আজকের শালিস বৈঠকে দুপক্ষ থেকে ২৫ জন করে নেতা বৈঠকে উপস্থিত থাকবে জানা গেছে। গত ইউপি নির্বাচনের পর থেকে ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ও সাহেদ সরকারের দুই লাঠিয়াল বাহিনীর মধ্যে সংঘটিত বন্দুক ও টেটাযুদ্ধ এবং দুই পক্ষের ৭টি হত্যামামলা সহ ৪১টি মামলা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে। গত মঙ্গলবারের বৈঠকে ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ও আওয়ামী লীগ নেতা সাহেদ সরকার ২ জনই মিমাংসার পক্ষে তাদের মতামত ব্যক্ত করেছেন। তবে কেউই তাদের রণ প্রস্তুতি থেকে পিছু হটছেন না। উভয় পক্ষই যার যার অবস্থানে শক্তিশালী লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে উৎপেতে বসে রয়েছেন। বর্তমানে এলাকা দখলে রয়েছে সাহেদ সরকারের লাঠিয়াল বাহিনীর হাতে। গত ১৯ এপ্রিল সংঘটিত বন্দুক ও টেটাযুদ্ধে এলাকা দখলে নেয়ার পর সেখানে তার লাঠিয়াল বাহিনী হামলা ভাংচুর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামের সমর্থকদেরকে পর্যদুস্ত করে দিয়েছে। এরপর থেকে তার লাঠিয়ালরা দলে দলে বিভক্ত হয়ে নদী পথে প্রতিদিন পাহাড়া দিচ্ছে। আর মেঘনা নদী দিয়ে চলাচলকারী নৌকাগুলোকে আটক করে চাঁদাবাজী করছে। ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামের লাঠিয়াল বাহিনী সম্ভাব্য হামলার আশংকায় সাহেদ সরকারের লাঠিয়ালরা প্রতিদিন এলাকায় বোমাবাজী করছে। তারা দলে দলে বিভক্ত হয়ে প্রায় প্রতিদিন ১০/১৫টি করে বোমা বিস্ফোরন ঘটাচ্ছে। গত ১৯ এপ্রিল ও ৮ মে দুই দিনের দুটি বড় সংঘর্ষসহ বিগত মাসাধিককালে দুই পক্ষের লাঠিয়ালরা এলাকায় কমবেশী সহশ্রাধিক বোমা বিস্ফোরন ঘটিয়েছে। পাশাপাশি ফাঁকা গুলিবর্ষণ করেছে কমবেশী ৫শত রাউন্ড। তবে সবচেয়ে বেশী বোমা ফাটিয়েছে সাহেদ সরকারের লাঠিয়ালা। আলোচনার পরও বোমা ফাটাফাটি, চাঁদাবাজী বন্ধ হচ্ছে না। গত কয়েকদিন পূর্বে চাঁদা না দেয়ায় দিঘলিয়াকান্দীর নুরুল আমিনের ৩টি গরু নিয়ে যায় সাহেদ সরকারের লাঠিয়ালরা। পরে ৮ হাজার টাকা চাঁদা দেয়ার পর ৩ গরু ফেরত দিয়ে দেয়। এছাড়া একই গ্রামের জনৈক ব্যক্তির ১১টি গরু নিয়ে গেছে সাহেদ সরকারের লাঠিয়ালরা। এখন তারা এলাকায় ঘুরে ঘুরে তালিকা প্রনয়ন করছে, কারা চাঁদা দিয়েছে, কারা দেয়নি। যারা চাঁদা দেয়নি তাদের বাড়ীতে নতুন করে প্রায় প্রতিদিন হামলা চালিয়ে চাঁদা আদায় করে নিচ্ছে। গত মাসাধিককালে কমবেশী ২ হাজার বাড়ীতে চাঁদাবাজী হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে সাহেদ সরকারের লাঠিয়াল বাহিনীর ভয়ে কেউ এসব ঘটনা পুলিশ বা সাংবাদিকদের কাছে জাহির করতে সাহস পাচ্ছে না। আজ বৃহস্পতিবারের শালিশ দরবারে এমপি রাজু ছাড়াও উপস্থিত থাকবেন রায়পুরা উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দসহ দুই গ্রæপের লাঠিয়াল নেতারা। ৭টি হত্যামামলাসহ ৪১টি মামলা কিভাবে মিমাংসা করা হবে এ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। তবে নিলক্ষার মত বাঁশগাড়ীর ঘটনায়ও যে মোটা অংকের টাকা লেনদেন হব্ েএটা অনেকেই বলেছেন। তবে কি পরিমাণ টাকা জরিমানা হিসেবে ধার্য করা হবে তা কেউ নির্শ্চিত করে বলতে পারেনি। তবে নিলক্ষার বিরোধ মিমাংসার ঘটনায় ২২ লক্ষ টাকা লেনদেন হয়েছে বলে জানা গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ