Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাজশাহীতে টিসিবির পণ্য মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে

| প্রকাশের সময় : ২৪ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রাজশাহী ব্যুরো : সবেবরাতের দু’দিন আগে থেকেই রমজানকে টার্গেট করে ব্যবসায়ীরা নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মজুদ ও দাম বৃদ্ধি করেই চলেছে। পাইকারদের মুখের কথাই একেক দিন একেক রকম দাম হাকা হচ্ছে। চাল, চিনি, ছোলা, লবন সবকিছুর দামই বাড়তি। ইতোমধ্যেই এসব পন্যের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি চার থেকে ছয় টাকা। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন রমজানের এক সপ্তাহ পর্যন্ত এমন দামই বাড়বে। এরপর কিছুটা কমলেও ফের ঈদের এক সপ্তাহ আগে আবার বাড়বে। বাজারের এমন অবস্থা দেখে গত ১৫ মে থেকে টিসিবি কিছু পন্য নিয়ে বাজারে নামে। নগরীর লক্ষিপুর মোড়, রেলগেট, সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট, নওদাপাড়া, বিনোদপুরসহ ৫টি পয়েন্টে ট্রাকে করে পণ্য বিক্রি শুরু করে। ক্রেতারাও আশ্বান্বিত হয় মুনাফাখোর ব্যবসায়ীদের হাত থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা মিলবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। বিশেষ করে নি¤œবিত্তদের কাছে টিসিবির মাল অধরাই রইল। কারন প্যাকেজ করে এসব মাল কেনার ক্ষমতা তাদের নেই। রাজশাহী মহানগরীতে ডাল ছাড়া মিলছে না টিসিবির পণ্য। ট্রাক থেকে পণ্য কেনার সময় ২ কেজি মসুর ডাল কেনা বাধ্যতামূলক করেছে ডিলাররা। ডাল না কিনলে অন্য পণ্য দিচ্ছে না বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। টিসিবির এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ নগরবাসী। নগরীর বেশ কয়েকটি পয়েন্টে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা ট্রাকের লাইনে দাঁড়ানো ক্রেতাদের সাথে আলাপকালে তারা অভিযোগ করে বলেন, টিসিবির পণ্য তালিকার ব্যানারে কোন প্যাকেজ সিস্টেম লেখা নাই। অথচ পণ্য কেনার সময় ক্রেতাদের দুই কেজি ডাল কিনতে বাধ্য করছেন ডিলাররা। দুই কেজি ডাল না কিনলে অন্য পণ্য দিচ্ছেন না তারা। তপন নামে এক ক্রেতা অভিযোগ করে বলেন, আমার তেল এবং ছোলার দরকার। ডালের দরকার নাই। কিন্তু এখানে মসুর ডাল না কিনলে তেল আর ছোলা দিচ্ছে না। তাই কি আর করা- পণ্য না কিনে ফেরত যাচ্ছি। রমজানে পণ্য মূল্য নিয়ন্ত্রনে রাখতে সরকার টিসিবির মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করছে। কিন্তু যেটা দরকার নাই সেটা কিনতে বাধ্য করাটা ঠিক না। তাছাড়া ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতার ব্যাপারটিও তো দেখতে হবে। এভাবে একটি নির্দিষ্ট পণ্য কেনার শর্ত দেয়ায় অনেকেই পণ্য কিনতে পারছেন না।
ট্রাকে পণ্য বিক্রি করা একজন জানান, ডালের চাহিদা কম। বেশিরভাগ ক্রেতাই ছোলা, তেল আর চিনি নিতে চায়। তিনি বলেন, ডাল নেয়া বাধ্যতামূলক না করলে তা অবিক্রিত থেকে যাবে। তাই অন্যান্য পণ্যের সাথে ডাল নেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী টিসিবির উপ-উর্ধ্বতন কার্যনির্বাহী প্রতাপ কুমার বলেন, কেউ ডাল কিনছে না তাই ব্যবসায়িক স্বার্থে ডিলাররা অন্যান্য পণ্যের সাথে ডাল যোগ করে দিচ্ছে। প্রয়োজন না থাকলে জনগণ ডাল নিবে কেন-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জনগণ শুধু নিজের সুবিধা দেখলে তো হবে না। ডিলারের সুবিধাও দেখতে হবে। এটা সরকারী সিদ্ধান্তকিনা জানতে চাইলে প্রতাপ কুমার বলেন, মানুষ শুধু ছোলা নিবে, চিনি নিবে আর ডাল নিবে না, তাহলে ডাল কে খাবে? আমরা কি কোন নিষিদ্ধ পণ্য দিচ্ছি যে নিবে না। এছাড়াও ৮১টি ডিলার দোকানে পণ্য করছে। এবছর খোলা বাজারে চিনি ৫৫টাকা, প্রতি লিটার সয়াবিন ৮৫টাকা, ছোলা কেজি প্রতি ৭০টাকা এবং মসুর ডাল প্রতি কেজি ৮০টাকা দরে বিক্রি করছে। একজন ভোক্তা সর্বোচ্চ ৩ কেজি করে চিনি ও ডাল, ছোলা ও সয়াবিন তেল ৫ কেজি করে কিনতে পারবে। টিসিবির কর্মকর্তারা প্যাকেজ সিস্টেম না থাকার কথা জানিয়ে বলেছিলেন, যে কেউ যেকোন পণ্য নিতে পারবেন। কিন্তু এখন তারা ডিলারের পক্ষ নিয়ে ডাল কেনা বাধ্যতামূলক করায় ক্ষুব্ধ নগরীর ভোক্তারা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ