Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লিচুর বাম্পার ফলনে চাষিদের মুখে হাসি

বিক্রির আশা ২০ কোটি টাকা

| প্রকাশের সময় : ২৪ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সাইদুর রহমান, মাগুরা থেকে : মাগুরায় লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। চাষিরা ২০ কোটি টাকার লিচু বিক্রি করবে বলে চাষিরা জানিয়েছে। জেলার লিচু পল্লী হিসেবে খ্যাত সদর উপজেলার হাজরাপুর, মিঠাপুর, ইছাখাদা, খালিমপুর, হাজিপুরসহ ৩০ গ্রামে এবার লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। পরিবেশ পক্ষে থাকায় লিচুর ব্যাপক মুকুল দেখা দেয় এবং প্রচুর ফল ধরে। কৃষকরা পরিচর্যার মাধ্যমে লিচু পরিপক্ক করে এখন বিক্রির মত করে তুলেছে। কোন দুর্যোগের মধ্যে না পড়ায় লিচুর বাম্পার ফলন হবে বলে চাষিরা জানায়। গত বছরের ক্ষতি এবার পুশিয়ে যাবে এমটাই আশা তাদের। প্রতি বছরই এখানকার চাষীরা লিচু বিক্রি করে লাভবান হয়ে থাকে। গত বছর বিরূপ আবহাওয়া আর কৃষি বিভাগের উদাসিনতায় এলাকার চাষীরা ফলন বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়। মাগুরা শহর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরত্বে মাগুরা ঝিনাইদহ সড়কের ইছাখাদা পৌছলেই চোখে পড়ে রাস্তার দু’পাশে সারি সারি লিচু বাগানে থরে থরে ধরে থাকা লিচুর এ মনোরম দৃশ্য। মাগুরা জেলায় আড়াই হাজার লিচুর বাগান রয়েছে। এর মধ্যে মাগুরা সদর উপজেলার লিচু পল্লীতেই রয়েছে ২ হাজার লিচু বাগান। জেলার ৪ উপজেলায় এবার ৫৭০ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে। লিচু চাষে অনেক চাষীর ভাগ্য বদলে দিন দিন অন্যেরা উৎসাহিত হয়ে লিচু চাষে এগিয়ে আসায় এলাকা লিচুর চাষে বিপ্লব ঘটে। ১৯৯৩ সাল থেকে লিচু আবাদ শুরু হয়। এ লিচুকে নিয়ে এলাকায় অনুষ্ঠিত হয় লিচুমেলা। মেলায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসে ব্যাপারিরা। সমাগম হয় বিপুল সংখ্যক মানুষের। মাগুরা সদর উপজেলার হাজরাপুর, রাঘবদাইড়, হাজিপুর ইউনিয়নের মিঠাপুর ,ইছাখাদা, খালিমপুর, রাউতাড়া,মির্জাপুর,বামনপুর, আলমখালী,বীরপুর, বেরইল, লক্ষীপুর, আলাইপুর নড়িহাটিসহ ৩০ গ্রামের চাষীরা গত ২৪ বছর ধরে বানিজ্যিক ভিত্তিতে লিচুর আবাদ করে আসছে। মাগুরার চাষীরা বেদানা, মোজাফ্ফর, চায়না থ্রী ও বোম্বাই জাতের লিচুর চাষ করে। যা ক্রেতাদের কাছে খুবই প্রিয়। আর এ কারণে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যাপারীরা এখানকার লিচু আগে ভাগে কিনে পরিচর্যা করে অন্যত্র বিক্রি করে লাভবান হয়। এ কারণে এলাকার লিচু জনপ্রিয়তা লাভ করে। প্রতি বছর ব্যাপারীরা লিচু কিনতে ভীড় জমায়। এলাকা হয়ে ওঠে জমজমাট। ট্রাক ট্রাক লিচু এখান থেকে অন্যত্র নিয়ে যায় ব্যাপারিরা। তবে ইতিপূর্বে প্রতি বছর লিচু মেলা অনুষ্ঠিত হলে ও গত দু বছর রাজনৈতিক কারণে লিচু মেলা করা সম্ভব হয় নাই বলে জানান লিচু মেলার আয়োজোকরা। তাছাড়া এলাকার লিচু চাষের মূল হোতা ওলিযার রহমান সম্প্রতি মারা গিয়েছে। এর ফলে আগের মত লিচু মেলা হবে কিনা তা নিয়ে কৃষকদের সংশয় রয়েছে। জনৈক লিচু চাষী জানান, তার বাগানে ৫০টি লিচু গাছের প্রতি গাছে ৪ হাজার করে লিচু উৎপাদন হয় যা ৫লাখ টাকা বিক্রি হয়ে থাকে। লিচু চাষীরা জানান, বিগত বছরগুলোর মত এবারও ব্যাপক ভাবে লিচুর ফুল ও ফল ধরে। আবহাওয়া ভাল থাকায় কৃষি বিভাগের তেমন সহযোগীতা না পেলেও উৎপাদন ভাল হয়। তারা জানান, লিচুর পরিচর্যা এখন নিজেরাই করা শিখে ফেলেছে। ইছাখাদা গ্রামের লিচু চাষী রবিউল ইসলাম জানান, তার ৩ টি বাগান থেকে এবার ৮০ হাজার টাকার লিচ বিক্রি করেছে। হাজরাপুর গ্রামের লিচু চাষি আবু জাফর তার বাগান থেকে ইতিমধ্যে ১ লাখ টাকার লিচু বিক্রি করেছে। লিচু বিক্রির জন্য সদর উপজেলার ইছাখাদা বাজার এখন জমজমাট লিচুর হাটে পরিনত হয়েছে। চাষিদের লিচু আর ব্যাপারীদের ভীড়ে ইছাখাদা বাজার বর্তমানে জমজমাট হয়ে পড়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ