Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

প্রতিহিংসাপরায়ন এক শিক্ষকের কান্ড

| প্রকাশের সময় : ২৩ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নরসিংদী থেকে স্টাফ রিপোর্টার : দেখে নিবেন বলে হুমকি দিয়ে ৯ জন মেধাবী পরীক্ষার্থীকে ঠিকই দেখে নিলেন সৈয়দ এনামুল হক নামে এক প্রতিহিংসাপরায়ন শিক্ষক। হিংসার বশবর্তী হয়ে একা সাহা, চৈতি সাহা, নিলয় দেবনাথ, ফারহান হাসান, সমরত হাবিব আহমেদ ও মৌমিতা দাসসহ ৯ জন প্রথম সারির মেধাবী শিক্ষার্থীকে ব্যবহারিক পরীক্ষায় সর্বনিম্ন নম্বর দিয়ে ফল বিপর্যয় ঘটিয়ে দিয়েছেন। কলংকিত করে দিয়েছেন ৯ জন শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবনকে। কালিমা লেপন করে দিয়েছেন ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের মধ্যে।
পক্ষান্তরে মেধাহীন পরীক্ষার্থীকে সর্বোচ্চ নাম্বার দিয়ে শিক্ষা ক্ষেত্রে এক খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন শিক্ষক সৈয়দ এনামুল হক। এমন নজীরবিহীন কান্ডটি ঘটেছে নরসিংদী জেলা শহরে অবস্থিত আলীজান জেএম একাডেমীর ২০১৭ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফলাফলপত্রে। ভাগ্য বিড়ম্বিত এসব শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা লিখিত অভিযোগে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি নরসিংদী জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও জেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করেছেন। এই দুর্নীতিমূলক ঘটনার দায় থেকে মুক্তির জন্য ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পুলক বরণ শীল নিজেই পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে লিখেছেন যে, ‘ শিক্ষক এনামুল হক হিংসার বশবর্তী হয়ে এই কান্ড ঘটিয়েছেন। কিন্তু প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ হিসেবে শিক্ষক এনামুলের বিরুদ্ধে কোন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন না।
ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে জানা গেছে, আলীজান জেএম একাডেমীর ২০১৭ সালের এসএসসি পরীক্ষার ফরম ফিলআপ’র সময় স্কুল কর্র্তৃপক্ষ অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেন। এসব খবর পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হবার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারীকৃত এক পরিপত্রে নির্দেশ দেয়া হয় যে, ফরম ফিলআপ বাবদ প্রতি শিক্ষার্থীর নিকট থেকে ১ হাজার ৮শত টাকা রেখে বাকী টাকা ফেরত দিতে হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৯ মেধাবী শিক্ষার্থীর অভিভাবকগন স্কুলে গিয়ে ফরম ফিলআপের দায়িত্ব প্রাপ্ত শিক্ষক সৈয়দ এনামুল হকের নিকট অতিরিক্ত টাকা ফেরত দেয়ার দাবি জানান।
এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে অভিভাবকদেরকে দেখে নিবেন বলে হুমকি দিয়ে টাকা ফেরত দেন। এ অবস্থায় এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে ব্যবহারিক পরীক্ষা দেয়ার পর উল্লেখিত ৯ মেধাবী পরীক্ষার্থীকে তাদের ব্যবহারিক পরীক্ষার ৩টি বিষয়ে সর্ব নিম্ন নাম্বার প্রদান করেন। পক্ষান্তরে একই স্কুলের মেধাহীন শিক্ষার্থীদেরকে সর্বোচ্চ নম্বর প্রদান করেন। অথচ দেশের সকল স্কুলগুলোতেই ব্যবহারিক পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদেরকে সর্বোচ্চ নম্বর দেয়ার রীতি রয়েছে। স¤প্রতি এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর উল্লেখিত ৯ নং মেধাবী পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ না পাওয়ায় সকলেই বিষ্মিত হয়ে পড়েন। পরে কম্পিউটারের মাধ্যমে ফলাফলপত্র বের করে দেখতে পান যে, শিক্ষক এনামুল হক ৯ জন পরীক্ষার্থীকে তাদের ব্যবহারিক পরীক্ষায় সর্বনিম্ন নম্বর দিয়েছেন। অথচ সর্বোচ্চ নম্বর দিলে সকল পরীক্ষার্থীই গোল্ডেন জিপিএ-৫ পাওয়ার গৌরব অর্জন করতে পারতো। এই ন্যক্কারজনক ঘটনা জানাজানি হবার পর শিক্ষক এনামুল হকের বিরুদ্ধে ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবকসহ এলাকার জনগনের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ