Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সেশনজটের কবলে জাবি শিক্ষার্থীরা

| প্রকাশের সময় : ২২ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

জাবি সংবাদদাতা: শান্ত ক্যাম্পাস, নেই কোন আন্দোলন, ছাত্র সংগঠনগুলোও সুষ্ঠ পরিবেশ বজায় রেখেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব মতে বর্তমান ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম দায়িত্ব নেওয়ার পর কোন আন্দোলন অথবা সংঘর্ষের কারণে একদিনের জন্যও বন্ধ হয়নাই ক্যাম্পাস। তারপরও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বেশিরভাগ অনুষদের বিভাগগুলোতে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ সেশন জট। যখন বর্তমান সরকার সেশনজট মুক্ত শিক্ষাব্যাবস্থা প্রণয়নের লক্ষে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। এমনকি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সেশন জট মুক্ত শিক্ষাব্যাবস্থা প্রণয়ন করেছে। ঠিক তখন দেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয় থেকে এক বছরের সেশন জট লেগে আছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিয়ারিং বিভাগ, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ, ভূতাত্তি¡ক বিজ্ঞান বিভাগে, ফার্মেসী বিভাগ, একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ এবং আইন অনুষদের শিক্ষার্থীরা প্রায় এক বছরের সেশন জটে আটকে আছে।
অন্যদিকে ছয় মাসের সেশন জট আটকে আছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ, জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ, নাটক ও নাট্যতত্ত¡ বিভাগ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে, অর্থনীতি বিভাগ, রসায়ন বিভাগ, পরিসংখ্যান বিভাগ, গণিত বিভাগ, বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগ, ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগ, মার্কেটিং বিভাগ, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ। এছাড়াও বাকি প্রায় প্রতিটি বিভাগের শিক্ষার্থীরা দুই থেকে তিন মাসের সেশন জট ভোগ করছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ বিভাগে কোন ক্লাস রুটিন মান্য করা হয়না। যারফলে শিক্ষকরা তাদের ইচ্ছেমত সময় হলে ক্লাস নেন। অধিকাংশ শিক্ষক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস নেয়ার ফলে তারা নিয়মিত ক্লাসে আসেন না। এমনকি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নিতে হলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেয়ার বিধান থাকলেও অনেকেই তা মানছেনা। এছাড়াও এমন শিক্ষক আছেন যারা ইচ্ছে করেই বছরের বেশিরভাগ সময় বিভাগে ক্লাস নেয়া থেকে বিরত থাকেন। যথাসময় পরীক্ষার খাতাও মূল্যয়ন করেন না অনেকে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শিক্ষকরা এসব আর্থিক সুবিধার কাছে নিজের প্রধান দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা যথাযথভাবে নেওয়া তা যেন ভুলে গেছেন। শিক্ষকদের এমন কর্মকান্ডে বিভাগগুলোতে সেশন জট লেগেই আছে। তারা ক্লাস সিডিউল দিয়েও বিভিন্ন অজুহাতে ক্লাসে আসেননা। শিক্ষকদের এমন আচরণে নষ্ট হচ্ছে আমাদের মূল্যবান সময়। আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে অভিভাবকরা। অপচয় হচ্ছে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের। সরকারের মানবসম্পদ উন্নয়নে জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যাহত হচ্ছে।
এবিষয়ে বিশ্ববদ্যিালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিয়ারিং বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষকরা বেশি মনযোগী সন্ধাকালীন কোর্স এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যলয়ের ক্লাসগুলো নিয়ে। দেখা যায় সন্ধাকালীন কোর্সগুলো ঠিক সময়ে শেষ করা হচ্ছে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত কোর্সগুলো সঠিক সময়ে শেষ করতে পারছেনা। তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি নিয়মিত ক্লাস পরীক্ষার ব্যাবস্থা করে নির্ধারিত সময়ে কোর্সগুলো শেষ করার ব্যাবস্থা করুণ।’
ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সভাপতি ইমরান নাদিম বলেন, ‘বাণিজ্যিক কোর্সগুলো নিয়েই শিক্ষকরা ব্যাস্ত থাকেন যারফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্লাস থেকে দূরে থাকেন তারা। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যথাযথ পর্যবেক্ষণের অভাব রয়েছে। তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যথাযথ ব্যাবস্থা নিয়ে সেশন জট মুক্ত ক্যাম্পাস করার জোড় দাবি জানাচ্ছি।’
এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বলেন,‘আমরা জানি কিছু বিভাগে বছরখানেকের মত সেশন জট ছিল, এখন তা কাটিয়ে ছয় মাসে আসছে। আর কতগুলো বিভাগ কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে তাদের কোর্স শুরু করতেই দেড়ি হয়েছিল। এছাড়াও যথেষ্ট শিক্ষক না থাকার ফলেও কোন কোন বিভাগে এ জট দেখা দিয়েছে। আমরা এসব জট দূরকরণে যথাযথভাবে কাজ করে যাচ্ছি।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ