বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
আশরাফুল ইসলাম নূর, খুলনা থেকে : খুলনা মহানগরীর নতুন বাজার স্ট্যান্ড রোড ব্যাংক গলির সেলিম গাজীর বাড়ীতে নওমুসলিম গৃহবধু ধর্ষণ মামলার আসামীদের খুঁজে পাচ্ছেন না তদন্ত কর্মকর্তা। সর্বশেষ, গত ১৬ মে দুপুর ২টার দিকে রূপসা স্ট্যান্ড রোডের সিএসএস আভা সেন্টারের সামনে থেকে মূল আসামী সেলিম গাজী পালিয়ে যায় তদন্ত কর্মকর্তার কাছ থেকে। গত ১ মে’র ঘটনার একটি দিন পর ২ মে খুলনা সদর থানায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন (যার নং-০৬, ০২-৫-১৭ইং)। মামলার দাখিলের ১৮ দিন অতিবাহিত হলেও আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বাদী ও ভুক্তভোগী।
মামলায় মূল অভিযুক্ত নতুন বাজার স্ট্যান্ড রোড ব্যাংক গলির মো: সেলিম গাজী (২৫), অন্য আসামীরা হল- নতুন বাজার মসজিদ গলির মৃত হারুন অর রশিদের ছেলে আবুল বাশার বাদশা ওরফে রাঙ্গা বাদশা (৫০), গগনবাবু রোডের মো: নুরুল্লাহ’র ছেলে মো: রানা (২৫), টুটপাড়া দিলখোলা রোডের মো: বাবু ওরফে কালা বাবু (৩১), নতুন বাজার লঞ্চঘাটের মো: সোহরাব মোল্লার ছেলে মোঃ দুলু (২৩)সহ অজ্ঞাত আরো ২/৩জন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খুলনা সদর থানার এস আই আশরাফ হোসেন বলেন, “গত ১৬ মে দুপুরে অল্পের জন্যে পালিয়ে যেতে পেরেছে মামলার মূল আসামী সেলিম গাজী। অভিযান প্রতিদিন-ই চলছে; তবে খুঁজে পাচ্ছি না ওদের। রাঙ্গা বাদশার ছবি ম্যানেজ করেছি; আর সকলকে মোটামুটি চিনি। আশা করছি খুব শিগগরিই তাদের গ্রেফতার করতে পারবো।”
একাধিক সূত্র জানান, ওই মামলার আসামীরা প্রত্যেকেই অত্যন্ত দুর্ধর্ষ প্রকৃতির। এছাড়া এজাহারনামী আসামীর বাইরে দু/তিনজন রয়েছেন যারা ওই ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত। তারাই বিভিন্ন মাধ্যমে বাদীপক্ষের সাথে আপোষ-মীমাংসার চেষ্টা করছে। তারমধ্যে সেলিম গাজীর ভাই মিজান অন্যতম।
পুলিশের সূত্র জানান, মামলার মূল অভিযুক্ত সেলিম গাজী এলাকায় পিচ্চি সেলিম নামে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে মাদকের অন্তত ৬টি মামলা রয়েছে। ২০০১ সালে খুলনা সদর থানার এএসআই নাদিম তাকে মাদকসহ গ্রেফতার করলে হ্যান্ডকাপ নিয়ে পালিয়েছিল সে। গেল বছর দু’দফায় মাদকসহ গ্রেফতার করেছি মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর খুলনা। তৎকালীন উপ-পরিদর্শক বর্তমানে যশোরের কর্মরত নূর মোহাম্মদ বলেন, “২০১৬ সালে আমাদের টিম সেলিম গাজী ওরফে পিচ্চি সেলিমকে তার বাসা থেকে ইয়াবাসহ রূপসার রামনগরের সাগর মোল্যার স্ত্রী রুবি বেগমের সাথে হাতেনাতে গ্রেফতার করেছিলাম।
মামলার আসামী রাঙ্গা বাদশার বিরুদ্ধে রয়েছে চারটি হত্যা মামলা। মনু, আলতাফ, ন্যাটা সেলিম ও ছোট আনু হত্যা মামলার অন্যতম আসামী সে। এরমধ্যে ছোট আনু হত্যা মামলায় নি¤œ আদালতে ৫ বছরের জেল হয়েছিল তার; পরে অবশ্যই উচ্চ আদালতে আপিল করে সে জামিনে রয়েছে। ফলে এলাকার ত্রাসের অপর নাম রাঙ্গা বাদশা। আসামী দুলু মোল্যাসহ তার পরিবারের একাধিক সদস্য মাদক বিক্রির সাথে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের যুবসংগঠনের নেতা পরিচয়ে পুলিশের সাথে সখ্যতা রয়েছে তার। অপর আসামী রানার বিরুদ্ধে ছিনতাই ও মাদকের একাধিক মামলা রয়েছে। একইভাবে এ মামলাটির প্রত্যেক আসামীই দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
মামলার বাদী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন উল্লেখ করে বলেন, “আমার শারিরিক অবস্থা খুব খারাপ। পেটে বাচ্চা ছিল আমার, ডাক্তার বলছেন সেটা নষ্ট হয়ে গেছে। আবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে; কিন্তু নিরাপত্তার কারনে ঘর বের হতে পারছি না। এতোদিনেও আসামীরা গ্রেফতার হল, এটা কি দুশ্চিন্তার কারণ নয়?”
প্রসঙ্গত্ব, গত ১ মে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর নতুন বাজার স্ট্যান্ড রোডের ব্যাংক গলির ভাড়াটিয়া মো: সেলিম গাজীর (২৫) বাসায় দাওয়াত পেয়ে বেড়াতে এসেছিলেন স্বামীর সাথে ওই নওমুসলিম গৃহবধু। কয়রা উপজেলার জায়গীরমহল এলাকার মো: আব্দুল মালেক গাজীর ছেলে সেলিম গাজী ভুক্তভোগীর স্বামীর খালাতো ভগ্নিপতি। সেলিম গাজী অন্য আসামীদের সহায়তায় জোরপূর্বক তাদের স্বামী-স্ত্রীকে নেশাজাতীয় ওষুধ সেবন করিয়ে দেয়। কিছু সময়ের মধ্যে স্বামী ঘুমিয়ে পড়েন। পরে গৃহবধুকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। গত ২ থেকে ১৩ মে পর্যন্ত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে চিকিৎসা নিয়েছেন ভুক্তভোগী। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা আবারো অবনতির দিকে বলে জানা গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।