পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : ক্ষমতাসীন দলের নেতারা ‘ভিশন- ২০৩০’ নিয়ে কুতর্ক করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমরা পরিষ্কার বলেছি, যে ভিশন-২০৩০ দেয়া হয়েছে, এটি একটি স্বপ্ন, প্রস্তাব। যদি আমরা জনগণের ভোটে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পাই, তখন কাজগুলো কীভাবে করব, কত দূর পর্যন্ত কাজ হতে পারে, তার একটি পরিকল্পনা দেয়া হয়েছে। এর ওপর আলোচনা হতে পারে। কিছু সংযোজন হতে পারে, কিছু কিছু বাতিলও হতে পারে। কিন্তু এ নিয়ে আওয়ামী লীগ কোনো আলোচনায় না গিয়ে সরাসরি একে বাতিল করে দিচ্ছে এবং কু-তর্ক করছে।
গতকাল বুধবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে লেবার পার্টির প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আবদুল মতিনের ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ লেবার পার্টি আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কু-তর্ক বলছি এজন্য যে, আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ যেটা বলছেন, সেটা কুতর্ক। তারা কনটেন্টস এ যাচ্ছেন না। তারা সত্য বিষয়টাতে যাচ্ছেন না এবং আমাদের প্রশ্নগুলোর কোনো জবাব দিচ্ছেন না। সোজাসুজি তারা এটাকে তারা বাতিল করে দিচ্ছেন। এটা অনুকরণ করা হয়েছে এই ধরণের কথা বলেছেন। তারা গোটা জাতিকে বিভ্রান্ত করার একটা অপচেষ্টা করছেন।
ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ নেতারা আজকে মানুষকে ভুল বুঝাচ্ছেন। বলেছেন যে, এখানে উন্নয়নের নহরী বয়ে গেছে। কী উন্নয়নের নহরী বয়ে গেছে? ভুল প্রচারনা করছেন, চলতি অর্থবছরে যেটা শেষ হবে জুন মাসে, তার প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে আওয়ামী লীগ বলছে ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ। এখানকার অর্থনীতিবিদরা, বিশ্বব্যাংকের অর্থনীতিবিদরা সবাই বলছেন কিছুতেই এটা ৬ দশমিক ৮ এর উপরে যেতে পারে না। এই যে মানুষকে প্রতারিত করা, মিথ্যা বুঝিয়ে একটা জায়গায় নিয়ে আসার চেষ্টা করা - এটা আওয়ামী লীগই পারে, তা অন্য কারোর পক্ষে সম্ভব না।
মুল্যস্ফীতি সম্পর্কে পরিকল্পনার মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের বক্তব্যের সঙ্গে দ্বি-মত পোষন করে অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষক মির্জা ফখরুল বলেন, মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলছেন, প্রতিমাসের যে গড় হিসাব করা হয়, এটা নাকী সঠিক না। তিনি বলছেন, প্রচলতি যে প্রথা আছে মূল্যস্ফীতি হিসাব করবার, সেটাকে বাতিল করে তিন মাসের গড় হিসাব দিয়ে করার জন্য। যেটা পুরো পরিকল্পনার ক্ষেত্রে একটা বড় রকমের সমস্যার সৃষ্টি করবে। তারা (সরকার) যেটা চায়, তাদের মিথ্যা সমস্ত ডাটা তথ্য জনগনের সামনে উপস্থাপন করবেন, জনগনকে বিভ্রান্ত করবেন। গত কয়েকবছরে বিনিয়োগে পরিমান কি হয়েছে, পারসেন্টেইজ কী, এটা হিসাব করলেই পাওয়া যাবে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নের অবস্থাটা কি হয়েছে। এই বিনিয়োগের দিনে দিনে হার কমেছে, বিদেশী বিনিয়োগের হার কমেছে- এটা বাস্তবতা। রেমিটেন্সের হার কমেছে। গার্মেন্টেসের যে উঠতি ব্যাপার ছিলো, প্রবৃদ্ধি যেটা বাড়ছিলো, এক্সপোর্টের যে প্রবৃদ্ধি ছিলো সেটা কমে এসেছে। প্রতিদিন দাম বাড়ছে, সেদিকে কোনো খেয়াল নেই, তারা মানুষকে বোকা বানিয়ে-বুঝিয়ে এখানকার মানুষ খুব সুখে আছে, স্বাচ্ছন্দে আছে, খুব সহজে তারা মধ্য আয়ের দেশে পরিণত করবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ৫৪টা অভিন্ন নদী ভারত থেকে বাংলাদেশে এসেছে। এসব অভিন্ন নদীর ন্যায্য হিৎসা আমরা পাইনি। এই পানির কথা বলতে গেলে আমাদের বলা হয়, আমরা ভারত বিরোধী। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা কখনোই ভারত বিরোধী নই। প্রশ্নই উঠতে পারে না ভারত বিরোধী হওয়ার। ভারত অনেক বড় দেশ, কিন্তু আমরা ছোট হলেও স্বাধীন দেশ, আমরা ছোট হলেও আমরা সার্বভৌম একটি রাষ্ট্র, আমাদের জাতিসত্ত¡া আলাদা, আমাদের পরিচয় আলাদা। আমরা এদেশের বেঁচে থাকতে চাই আমাদের ন্যায্য হিৎসা নিয়ে। আমরা তো কোনো ফেভার চাচ্ছি না। আমরা চাই, আন্তজাতিক আইনে যতটুকু হিৎসা আছে, সেটুকু আমাদের দিন। সরকারের ‘নতজানু’ নীতির কারণে দেশের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে ‘ন্যায্য পাওনা’ আনতে ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশে এতো দুঃসময় আর কখনো আসে নাই। আজকে দেশের গণতন্ত্রকে হরণ করা হয়েছে, মানুষের স্বাধীনতাকে কেড়ে নেয়া হয়েছে। যে যুদ্ধ করেছে দেশ স্বাধীন করা হয়েছে সেই স্বাধীনতা বিপন্ন হচ্ছে। ঠিক তখন মাওলানা মতিনের মতো মানুষদের স্মরণ করা বেশি প্রয়োজন।
ফখরুল আরো বলেন, ১৯৯৬ সালে নিরপেক্ষ সরকারের কথা তো আপনারাই (আওয়ামী লীগ) বলেছিলেন। কিন্ত কেন আপনারা এখন এমনটা (দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন) বলছেন। দেশে এখনও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার জন্য দলীয় সরকারের মানসিকতা তৈরি হয়নি। এজন্য নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন অবশ্যই দিতে হবে। এই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হতে হবে।
বিএনপি ভারত বিরোধী নয়
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ৫৪টা অভিন্ন নদী ভারত থেকে বাংলাদেশে এসেছে। এসব অভিন্ন নদীর ন্যায্য হিৎসা আমরা পাইনি। এই পানির কথা বলতে গেলে আমাদের বলা হয়, আমরা ভারত বিরোধী। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা কখনোই ভারত বিরোধী নই। প্রশ্নই উঠতে পারে না ভারত বিরোধী হওয়ার। তিনি বলেন, ভারত অনেক বড় দেশ, আমাদের চাইতে অনেক এগিয়ে যাওয়া দেশ। কিন্তু আমরা ছোট হলেও স্বাধীন দেশ, আমরা ছোট হলেও আমরা সার্বভৌম একটি রাষ্ট্র, আমাদের জাতিসত্ত¡া আলাদা, আমাদের পরিচয় আলদা। আমরা এদেশের বেঁচে থাকতে চাই আমাদের ন্য্য্যা হিৎসা নিয়ে। আমরা তো কোনো ফেভার চাচ্ছি না। আমরা চাই, আন্তর্জাতিক আইনে যতটুকু হিস্যা আছে, সেটুকু ভারত আমাদের দিক।
সরকারের ‘নতজানু’ নীতির কারণে দেশের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে ‘ন্যায্য পাওনা’ আনতে ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষ সা¤প্রদায়িক নয়, তারা ধর্মান্ধ নয়। শুধুমাত্র একটি ধর্মের জন্য বাস করবে, অন্য কেউ বাস করবে না- এধরণের মানসিকতা এদেশের মানুষের মধ্যে নেই।
তিনি বলেন, এদেশের মানুষ ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাস করে, ধর্মীয় স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে, সকলে তার যার যার ধর্ম পালন করবেন। দেশনেত্রী যেদিন বলেছেন, ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। এই কথা আমাদের বিশ্বাস করতে হবে। আমরা সেভাবে যেন আমরা জাতীয়তাবাদী দর্শন নিয়ে এগিয়ে যাই।
লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেদেহী, কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল মান্নান, ফরিদউদ্দিন, ফারুক রহমান, এমদাদুল হক চৌধুরী, শামসুদ্দিন পারভেজ, মাসুদ খান, আহসান হাবিব ইমরোজ প্রমূখ নেতারা এতে বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।