Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ফসলহানিতে দিশেহারা সুন্দরগঞ্জের কৃষক

প্রবল বর্ষণে নিম্নাঞ্চল পানিতে টইটম্বুর

| প্রকাশের সময় : ১৭ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) উপজেলা সংবাদদাতা : ঘন ঘন প্রবল বর্ষণে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চলসমূহ পানিতে টইটুম্বুর হয়েছে। কিছু কিছু চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চলের ফসল নিমজ্জিত হওয়ায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ফসলের। তিস্তা নদীর চরাঞ্চল তারাপুর ইউনিয়নের লাটশালা, খোর্দ্দার চর, চর তারাপুর, বেলকা ইউনিয়নের বেলকার চর, পঞ্চানন্দ, জিগাবাড়ী, বেলকা নবাবগঞ্জ, হরিপুর ইউনিয়নের লখিয়ারপাড়া, চরহরিপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের লালচামার, কাজিয়ার চর, বাদামের চরের ফসল কোথাও আংশিক, কোথাও পুরোপুরি ডুবে গেছে। চরাঞ্চল ছাড়াও উচু এলাকার অনেক জায়গায় ধান, পাট, সবজি ক্ষেত পানিতে ভর্তি। এসব ক্ষেতের ধান কালবৈশাখী ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। যখন ধান কেটে ঘরে তোলার কথা তখন পাকা আধাপাকা ধান ক্ষেত দুমড়ে-মুচড়ে ভেঙ্গে পানির উপর শুয়ে পড়েছে। তার উপর রয়েছে বøাস্ট রোগ। তবুও কৃষকরা ধান কেটে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছে। এতে কৃষকের দ্বিগুন খরচ হচ্ছে। অনেক সময় পাওয়া যাচ্ছে না শ্রমিক। অতিবৃষ্টি আর বাতাসে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে উঠতি ভুট্টা ক্ষেতের। অনেক ভুট্টা ক্ষেত ঝড়ো হাওয়া দুমড়ে-মুচড়ে নুুয়ে পড়েছে মাটিতে। মরে গেছে মরিচ, মিষ্টি কুমড়া, করলাসহ বিভিন্ন সবজি ক্ষেত। চরাঞ্চলের কৃষকরা নির্ভরশীল ফসলের উপর। হঠাৎ করেই ঘন ঘন বর্ষণ ও ঝড়ো হাওয়ায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় কৃষকের স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে। এখন পরিবারের ভরণ-পোষণ চালানোর চিন্তায় চরের কৃষকরা দিশেহারা। প্রতি বছর বন্যা হয় সময় মতো। বন্যার আগেই কৃষকরা ধান, ভুট্টা, পিয়াজ, রসূনসহ বিভিন্ন ফসল ঘরে তুলতো। খোর্দ্দা চর গ্রামের কৃষক আবুল কাশেম জানান, প্রতি বছর পিয়াজ ঘরে তুলে রাখি। দাম বেশি হলে বাজারে বিক্রি করে সংসারের পুরো খরচ চালাই। কিন্তু এবার আগাম বর্ষণে পিয়াজ ক্ষেতে পানি জমায় পিয়াজে পচন ধরেছে। তাই অল্প দামেই বিক্রি করেছি। কৃষক রফিক জানান, ঘন বর্ষণের কারণে পাট ক্ষেত নিড়ানি দিতে পারিনি। তার উপর ক্ষেতে জমেছে পানি। এ অবস্থায় সোনালী আশ এবছর গলার ফাঁস হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওই গ্রামের কৃষক মিজান জানান, পাট আমাদের চরাঞ্চলের কৃষকদের একমাত্র অর্থকারী ফসল। সেখানে পাট ক্ষেতে কোমড় ও হাটু পানি জমায় সে আশা ভঙ্গ হয়েছে। জিগাবাড়ী চরের কৃষক আহসান হাবিব জানান, এ বছর দুই বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছিলাম। আবাদের লক্ষণও ছিল মোটামুটি ভাল। কিন্তু কাল বৈশাখী ঝড়ে সে ভুট্টা ক্ষেত দুমড়ে-মুচড়ে ভেঙ্গে পড়েছে। এখন পানি জমে ভুট্টার গাছ পঁচে যাচ্ছে। যার কারণে ফসল ঘরে তুলতে পারিনি। নিজামখা গ্রামের কৃষক আফসার জানান, আমার বোরো ধান ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ায় ধানের শীষে অর্ধেকটা ঠোসা হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতির পরিমাণ নিরুপন করা খুবই কষ্টকর। তবে ফসলের ক্ষতি হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ