Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাড়তি মজুরিতেও মিলছে না শ্রমিক

| প্রকাশের সময় : ১৭ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা : মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার সর্বত্রই দিনমজুর সংকটের কারণে ধান ক্ষেতের পাকা ধান, ভুট্টা ও ঝড়ে ভেঙ্গে যাওয়া সবজি ক্ষেত নিয়ে বিপাকে পড়েছে কৃষক। একদিকে কালবৈশাখী ঝড়ো হাওয়া এবং প্রতিনিয়ত বৃষ্টি অপরদিকে ক্ষেতের ইরি-বোরো পাকা ধান যেন মাথায় বাজ ফেলে দিয়েছে উপজেলার কৃষকদের উপর। চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে ধান ক্ষেতের ধান সম্পূর্ণ রূপে পেকে গেছে। ধান কেটে ঘরে তোলা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কৃষক। ভুট্টা ক্ষেতে বৃষ্টির পানি জমে গাছে পচন ধরেছে। আর ঝড়ে সবজির মাচা ভেঙ্গে পরেছে। কিন্তু দিনমজুর সংকটের কারণে পাকা ধান, ভুট্টা ক্ষেত থেকে কেটে আনতে পারছে না। দিনমজুর সঙ্কটের কারণে দৈনিক ভিত্তিতে কাজ করা শ্রমিকরা (কামলা) তাদের পারিশ্রমিক বাড়িয়ে দিয়েছে। যেখানে দৈনিক ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা মুজুরিতে কাজ করতো শ্রমিকরা সেখানে বর্তমানে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা নিচ্ছে। আবার সাথে দু’বেলা খাবার দিতে হচ্ছে ও প্রতি জনকে এক প্যাকেট বিড়ি। শ্রমিক না পেয়ে উপজেলার অনেক এলাকার কৃষকরা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে ক্ষেত থেকে ফসল তুলতে কাজে লেগে পড়েছে। জানা গেছে, নিম্ন আয়ের এবং দরিদ্র সীমার নিচে সাটুরিয়ায় বসবাসরত শ্রমিকরা এখন উপজেলার গ্রামগঞ্জে দিন মজুরের কাজ করছে না। তারা এখন শহরমুখি হয়ে পড়েছে। মৌসুম ভিত্তিক কাজের চেয়ে শহরে গিয়ে রিক্সা ভ্যান চালিয়ে এবং রাজমিস্ত্রী সহ বিভিন্ন নির্মাণ কাজের লেবারী করে বেশী পয়সা রোজগার করছে তারা। এ কারণে গ্রাম-গঞ্জে তীব্র দিন মজুর সংকট দেখা দিয়েছে। আর এ সময় শ্রমিক সংকটে বিশেষ করে উচ্চ বিত্ত শ্রেণীর কৃষকরা মহাবিপাকে পড়েছে। গতকাল মঙ্গলাবার দুপুরে উপজেলার কয়েকটি এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, জমি থেকে ধান ও ভুট্টা কেটে ঘরে তোলা ও ঝড়ে ভেঙ্গে যাওয়া সবজির মাচা ঠিক করা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে কৃষকরা। অপরদিকে শ্রমিক সংকট ও শ্রমিকের উচ্চ মজুরির কারণে সাটুরিয়ার মধ্য ও নিম্নবিত্ত শ্রেণীর কৃষকরা স্ত্রী-পুত্র পরিজন নিয়ে ধান কাটা মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। শুধু দিন মুজুরির ভিত্তিতে বর্তমানে জন প্রতি মজুরী দিতে হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকা। উপজেলার বালিয়াটির মুন্সি চর গ্রামের কৃষক ফারুখ হোসেন জানায়, কালবৈশাখী ঝড়ে একদিকে ফসলের অনেক ক্ষতি হয়েছে। অপরদিকে দিন মজুর না পাওয়ার কারনে যথাসময়ে ধান কেটে ঘরে তোলা সম্ভব হচ্ছে না। যার কারণে ঝড়ে ধান জমিতে পরে ও বৃষ্টির পানি জমিতে জমে থাকায় ধান পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সাটুরিয়ার পাড়াগ্রামের আ: রশিদ ও মাসুদ দুই ভাই ছাত্র, শ্রমিক না পাওয়ায় তারাই ক্ষেত থেকে ভুট্টা কেটে ভ্যান গাড়ি দিয়ে নিজেরাই বাড়ি নিয়ে আসছে। আ: রশিদ জানায়, জমিতে ভুট্টা গাছ ঝড়ে ভেঙ্গে পরে পানিতে পচন ধরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। শ্রমিক পাচ্ছি না। তাই বাধ্য হয়েই নিজেরাই ভুট্টা কেটে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছি। সবজির জমিতে কাজ করা দিন মজুর মোহম্মদ আলী ও আ: রহমান জানায়, বর্তমানে তারা ৭৫০ টাকা করে দৈনিক মুজুরিতে কাজ করছে। সাথে দুবেলা খাবার ও এক প্যাকেট করে বিড়ি, দিতে হয় তাদের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ