Inqilab Logo

শনিবার ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ২৯ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

| প্রকাশের সময় : ১৭ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মোঃ খলিল সিকদার, রূপগঞ্জ থেকে : রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল আউয়ালের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, আব্দুল আউয়ালের বাড়ি উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের মর্তুজাবাদ দক্ষিণপাড়া এলাকায়। ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র ছিলেন তিনি। বাড়ি বাড়ি প্রাইভেট পড়িয়ে লেখা-পড়া করেন আব্দুল আউয়াল। প্রায় ২০ বছর আগে বিভিন্ন কলাকৌশলে ও প্রভাব খাটিয়ে ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষক পদে চাকুরি নেন তিনি। এরপর থেকেই প্রতিষ্ঠানের ম্যানিজিং কমিটির সদস্যদের ম্যানেজ করে কোচিং বানিজ্যে থেকে শুরু করে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তিনি। কয়েক বছরের মধ্যে তিনি আলিশান বাড়ি, পাঁচাইখা এলাকায় কোটি টাকার জমি, একটি হাসপাতালের শেয়ারসহ কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক বনে যান। তৎকালীন প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাই অসুস্থ্য থাকাকালীন অবস্থায় আব্দুল আউয়াল ম্যানেজিং কমিটির সদস্যসহ ক্ষমাতাশীন দলের প্রভাবশালী নেতাদের ম্যানেজ করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব নেন। এরপর থেকেই তিনি বেপরোয়া হয়ে উঠেন। ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজটি ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, শিক্ষক সমিতির সদস্যসহ স্থানীয় ক্ষমতাশীন দলের প্রভাবশালী নেতাদের ম্যানেজ করে বেপরোয়া অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। বর্তমানে তিনি কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক বনে গেছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রায় ৩ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। আর এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোচিং বাধ্যতামূলক করে দিয়েছেন আব্দুল আউয়াল। কেউ কোচিং না করলেও কোচিংয়ের ফি গুনতে হয় ঠিকই। প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে মাসিক ৪শ’ টাকা করে নিয়ে নিচ্ছেন তিনি। পাস করিয়ে দেয়া বাবদ নেয়া হয় মোটা অঙ্কের টাকা। সরকারি মূল্যে বাবদ এসএসসি পরীক্ষার রেজিষ্ট্রেশন ফি ১২শ’ টাকা। কিন্তু আব্দুল আউয়াল রেজিষ্ট্রেশন ফি বাবদ ৫ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন। নাম না প্রকাশ শর্তে কয়েক জন শিক্ষক অভিযোগ করে জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে থাকা শিক্ষকদের বিনা কারনে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে থাকে অধ্যক্ষ আব্দুল আউয়াল। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নারী ক্যালেঙ্কারীর ঘটনা ঘটিয়ে বেশ আলোচনায় এসেছেন আব্দুল আউয়াল। শিক্ষকরা প্রতিবাদ করতে গেলে চাকুরিচ্যুতসহ নানা ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে থাকে। কোন সিনিয়র শিক্ষকরা অধ্যক্ষের অনিয়ম, দুর্ণীতি ও অসামাজিক কাজের প্রতিবাদ করলে তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেয়া হয়। আব্দুল আউয়ালের দম্ভোক্তি ‘শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তাদের মাসোহারা দিয়ে স্কুল চালাই, তাই অনিয়ম দুর্নীতি থাকতেই পারে, যেহেতু সব কিছু ম্যানেজ করা সাংবাদিকরা লিখলে কিছু যায় আসে না’। অভিযুক্ত আব্দুল আউয়ালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি কোন অনিয়ম, দুর্নীতি ও অসামাজিক কাজের সঙ্গে জড়িত নই। নিয়ম মেনেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন বলে তিনি দাবি করেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ওমর ফারুক বলেন, আমি ট্রেনিংয়ে আছি। শিক্ষা অফিসের কোন কর্মকর্তাকে যদি মাসোহারা দেয়ার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়, হাহলে তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষনিক ভাবে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এছাড়া অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ গুলো খতিয়ে দেখা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানা ইসলাম বলেন, এ ধরনের অভিযোগ লিখিতভাবে পাইনি। যেহেতু এ ধরনের অভিযোগ উঠেছে, খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ