Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

মোসাদ্দেক আলী ফালুর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

| প্রকাশের সময় : ১৬ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির চেয়ারপারস বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা মোসাদ্দেক আলী ফালুর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা দায়ের করেছে। সম্পদের মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগে এনে এ মামলা করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার রাজধানীর রমনা থানায় দুদকের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম এ মামলা করেন বলে সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন। প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য বলেন, সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলী ফালু গত বছর দুদকে যে সম্পদবিবরণী জমা দিয়েছেন, তাতে ১৪৭ কোটি ১১ লাখ ৯৪ হাজার ৮৩৮ টাকার সম্পদ রয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে।
এই সম্পদের মধ্যে ১৭ কোটি ৮৬ লাখ ৬৮ হাজার ৩৯৮ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ রয়েছে। এছাড়াও সম্পদ বিবরণীতে তিনি ভিত্তিহীন ও মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। এর ফলে তিনি দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে প্রণব উল্লেখ করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, সম্পদ বিবরণী জমা দিতে ২০১৬ সালের ৩১ আগস্ট মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নির্দেশ দিয়ে নোটিস দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন। ওই বছর ৬ অক্টোবর তিনি ৩৫ কোটি ৭৮ লাখ ১৩ হাজার ৫৩৮ টাকার স্থাবর সম্পদ ও ১১১ কোটি ৩৩ লাখ ৮১ হাজার ৩০০ টাকার অস্থাবর সম্পদের হিসাব কমিশনে দাখিল করেন। এর মধ্যে ঋণ প্রদান ১১ কোটি ৪২ লাখ ৯১ হাজার টাকা ও দায়-দেনার পরিমাণ ৬৫ কোটি ৩৮ লাখ ৭০ হাজার ৭৮০ টাকা বলে বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়েছে।
দুদক জানায়, ওই সম্পদ বিবরণী নিয়ে দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০০৭-০৮ করবর্ষ থেকে ২০১৬-১৭ করবর্ষ পর্যন্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে মোসাদ্দেক আলী ফালু সম্মানী, গৃহ সম্পত্তি থেকে আয়, ব্যাংক সুদ, লভ্যাংশ, শেয়ার ব্যবসা থেকে লাভ, ফ্ল্যাট বিক্রি থেকে আয়, ইন্সুরেন্স ক্লেইম, জমি ভাড়া থেকে আয়, ঋণগ্রহণ, মংস্য চাষ ও গরুর খামার থেকে মোট আয় ১০২ কোটি ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৬৪৩ টাকা এবং দায় ও ঋণগ্রহণ ৬৫ কোটি ৩৮ লাখ ৭০ হাজার ৭৮০ টাকা ও মোট প্রদর্শিত আয় ১৬৭ কোটি ৪২ লাখ ৫৮ হাজার ৪২৩ টাকা বলে উল্লেখ করেন।
এজাহারে বলা হয়, সম্পদ বিবরণীতে প্রদর্শিত ১৬৭ কোটি ৪২ লাখ ৫৮ হাজার ৪২৩ টাকার মোট আয়ের উৎসের মধ্যে মৎস্য চাষ ও গরুর খামার খাতে তিন কোটি ৫৭ লাখ ২০ হাজার ১০ টাকার ক্ষেত্রে অনুসন্ধানে মৎস্য ও পশুপালন অধিদপ্তরের কোনো নিবন্ধন বা পরিদর্শন প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি।
এছাড়া বিভিন্ন খাতে করবর্ষ ভিত্তিক বিনিয়োগ, ক্রয় ও বিক্রয়সংক্রান্ত কোনো তথ্য ও হিসাব পাওয়া যায়নি মর্মে এজাহারে উল্লেখ করে বলা হয়, প্রকৃতপক্ষে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ‘সম্পদকে বৈধ’ করার লক্ষ্যে মৎস্য চাষ ও গরুর খামারের’ আয় প্রদর্শন করেছেন তিনি। বিবরণীতে অন্যান্য প্রাপ্তি হিসাবে যে তিন লাখ ৭ হাজার ৫৮৩ টাকা আয়ের কথা বলা হযেছে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য নেই বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া আয়কর আইনের ১৯/ই ধারায় অপ্রদর্শিত আয় ৭৬ লাখ ৪০ হাজার ৮০৫ টাকা, রোজা প্রোপার্টিজ লিমিটেড কোম্পানি থেকে ঋণের বিপরীতে প্রদর্শিত আয় ১৩ কোটি ৫০ লাখ টাকাসহ মোট ১৭ কোটি ৮৬ লাখ ৬৮ হাজার ৩৯৮ টাকার আয়ের উৎসের সমর্থনে মোসাদ্দেক আলী ফালু সঠিক হিসাব বা রেকর্ডপত্র দেখাতে পারেননি বলেও অভিযোগ করা হয়।
তার সম্পদ জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। এজাহারে মোসাদ্দেক আলী ফালুর বর্তমান ঠিকানা লেখা হয়েছে রাজধানীর বনানীর পুরাতন ডিওএইচএস এর ৫ নম্বর রোডের ৬৮ নম্বর বাড়ি; স্থায়ী ঠিকানা দক্ষিণ শাহজাহানপুরের ৭৯৭ নম্বর বাড়ি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ