Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বেসামাল চালের বাজার

| প্রকাশের সময় : ১৬ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম


সরকারি ক্রয় মূল্যের চেয়ে কেজি প্রতি ৭/৮ টাকা বেশি : বøাস্ট রোগ আর পাতা মরা রোগে কাঁদছে কৃষক : অকাল বন্যায় বোরো ফলনে বিপর্যয় : সরকারি চাল ক্রয় অভিযান ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কা
মাহফুজুল হক আনার, দিনাজপুর থেকে  : অকাল বন্যায় হাওড়বাসী কাঁদছে। বøাস্ট রোগ আর পাতা মরা রোগে কাঁদছে উত্তরের কৃষক। ফলে এবার বোরো ধান ফলনে বিপর্যয় নিশ্চিত। ফলন বিপর্যয়ের পর এবার সরকারি চাল ক্রয়ও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কেননা নতুন বোরো চাল বাজারে ওঠলেও দাম কমার কোন লক্ষন নেই। ফলে ৩৪ টাকা কেজি দরে সরকারের কাছে অটো রাইস মিলগুলি কতটুকু চাল দিতে পারবে তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এদিকে সরকার সংগ্রহ নীতিতে কিছু পরিবর্তন এনে অটো রাইস মিলগুলির কাছে গতবারের তুলনায় দ্বিগুন হারে চাল ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু ধানের তীব্র সংকটের কারনে অটো মিল মালিকেরা সরকারের কাছে চাল বিক্রি পরের কথা এখন মিলগুলি কতদিন চালু রাখতে পারবে এই দুশ্চিন্তায় পড়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, সরকারিভাবে এবার সারাদেশ থেকে ৮ লাখ মেট্রিক টন চাল ও ৭ লাখ মেট্রিক ধান ক্রয়ের সিদ্ধান্ত ঘোষনা করা হয়েছে। মোটা সিদ্ধ চাল ৩৪ টাকা, চিকন আতপ চাল ৩৩ টাকা ও সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ১৯২০ টাকা বস্তা দরে ধান ক্রয়ের কথা। কিন্তু এখন পর্যন্ত ধান ক্রয়ের কোন সিদ্ধান্ত আসেনি। দিনাজপুর জেলা থেকে ৮৬ হাজার মেটিক টন মোটা চাল আর ৮ হাজার মেট্রিক টন চিকন আতপ চাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। এদিকে নুতন বোরো ধান ও চাল বাজারে ওঠতে শুরু করেছে। এই চাল বিক্রি হচ্ছে সরকার ঘোষিত মূল্য থেকে প্রতি কেজিতে ৬ থেকে ৮ টাকা বেশী দরে। প্রতিবেশী দেশ থেকে কিছু কিছু চাল আমদানী হলেও তার মূল্য পড়ছে সরকারি ক্রয় মূল্যের চেয়ে বেশী। ফলে সরকার নির্ধারিত ক্রয় মূল্যে চাল কতটুকু ক্রয় করতে পারবে তা নিয়ে যেমন সংশয় রয়েছে। তেমনিভাবে বাজার নিয়ন্ত্রন অর্থাৎ চালের খুচরা মূল্য কমা দূরের কতটুকু বাড়বে তা নিয়েই খুচরা চাল বিক্রেতা আশংকা প্রকাশ করেছে। অবশ্য খাদ্য বিভাগ আশা করছে পুরোপূরী ধান ওঠলে বাজার নিয়ন্ত্রিত হবে এবং সরকারি ক্রয় অভিযানও সফল হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, দিনাজপুরের ১৩ উপজেলায় এবার বোরো ধান আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৭৭ হাজার হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ৬ লাখ মেট্রিক টনের বেশী। ধানের আবাদও ভাল হয়েছে। তবে কিছু কিছু এলাকায় ব্যাপকহারে বøাস্ট রোগ পাতা মরা রোগসহ বিভিন্ন কারনে বোরো ধান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কৃষি বিভাগের মতে বøাস্ট রোগে আক্রান্ত জমির পরিমান মাত্র ৬ হেক্টরের মত। কিন্তু মাঠ পর্যায়ের বাস্তব চিত্র অন্য। সচেতন মানুষেরা কৃষি বিভাগের এই হিসাব শুনে বলছে জেলা পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা সরকারের উচ্চ মহলে ভাল থাকার জন্য ভুল তথ্য দিচ্ছে। তাদের এই ভুল তথ্যের কারনে ভবিষ্যতে বেকায়দায় পড়তে হবে। তাই সময় থাকতে মাঠ ও বাজারের প্রকৃত চিত্র অনুসন্ধান করে সরকারের আগাম প্রস্তুতি জরুরি হয়ে পড়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চাল

১১ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ