Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বরিশালে পুকুর ও মেডিক্যালের আয়ার বাসা থেকে সরকারি ওষুধ উদ্ধার

| প্রকাশের সময় : ১৪ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম


বরিশাল ব্যুরো : বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণীর স্টাফ কোয়ার্টারের ৩ নম্বর পুকুর ও এক আয়ার বাসা থেকে বিপুল পরিমান সরকারি ওষুধ উদ্ধার করা হয়েছে। হাসপাতালের রোগীদের জন্য বিনামূল্যে বিতরনের জন্য এসব সরবারহ করার কথা। উদ্ধার হওয়া এসব ওষুধের মূল্য লক্ষাধিক টাকা হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে। হাসপাতালের ওষুধ চুরি করে বাসায় মজুদ রাখার অভিযোগে শেবাচিম হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী শেফালী বেগম ও তার মাদকাসক্ত ছেলে মামুনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
কেতোয়ালী মডেল থানার দায়িত্বশীন সূত্র জানিয়েছে তারা হাসপাতালের স্টাফ কোয়ার্টারের নিকটবর্তী স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে সেখানের একটি পুুকুরে বিপুল পরিমান ওষুধ ভাসছে বলে খবর পান। সকাল শুক্রবার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পুকুর থেকে ওষুধগুলো উদ্ধার করে। ওষুধের মোড়কের গায়ে লাল-সবুজ এবং সরকারি ছাপ থাকায় নিশ্চিত হওয়া গেছে যে সেগুলো সরকারি হাসপাতালে রোগীদের বিনামূল্যে সরবরাহের জন্য নির্ধারিত। সবগুলো ওষুধই মেয়াদসম্পন্ন। উদ্ধার করা ওষুধের মধ্যে রয়েছে সেফট্রিয়াক্সোন ইনজেকশন, জেএমআই সিরিঞ্জ, ডেস্কামেটথাসন সোডিয়াম, লার্ব ৫০+, লুমনা-১০, ডমপেরিডন, ভ্যাসোপিস্ক, থিওফাইনিল, জ্যাসোকাইন জেল, ডাইক্লোফেন ইনজেকশন, এনক্লোগ প্লাস, সালবুটামল, এজিথ্রোমাইসিন ৫০০ প্রভৃতি এন্টিবায়োটিক সহ জীবন রক্ষাকারী ওষুধ।
কোতয়ালী থানার এসআই আবু তাহের জানান, স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে তারা জানতে পারেন যে কোয়ার্টারের বাসিন্দা চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী শেফালী আক্তারের ছেলে মামুন বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই ওষুধগুলো পুকুরে ফেলেছে। তার আগে বাসার সামনে কিছু ওষুধ আগুনে পুড়িয়েছে মামুন। এ তথ্যের ভিত্তিতে শেফালী আক্তারের বাসায় অভিযান চালিয়ে তার বাসা থেকে আরও কিছু ওষুধ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে শেফালী আক্তার ও মামুনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।  
স্থানীয় সাধারন মানুষ জানিয়েছে, মামুন মাদকাসক্ত। গত দুইদিন ধরে মায়ের সঙ্গে তার ঝগড়া চলছে। মায়ের সঙ্গে রাগ করে মামুন বাসায় মজুদ করে রাখা ওষুধ পুকুরে ফেলে দেয় ও কিছু আগুনে পুড়িয়েছে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে শেবাচিম হাসপাতালের সিনিয়র স্টোর অফিসার-মেডিসিন ডাঃ মাহমুদ হাসান বলেন, উদ্ধার হওয়া ওষুধগুলো সরকারি। এর মূল্য লক্ষাধিক টাকা হতে পারে। ওষুধগুলো শেবাচিম হাসপাতালের কি না জানতে চাওয়া হলে ষ্টোর অফিসার বলেন, কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন, শেরে বাংলা মেডিকেলের কোন ওষুধ চুরি হয়নি। তবে ওষুধগুলো কোথা থেকে কিভাবে এসেছে তা তদন্ত করে দেখা হবে।
কোয়ার্টারের বাসিন্দা হাসপাতালের একাধিক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, শেফালী আক্তার হাসপাতালের মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে আয়া পদে কর্মরত রয়েছেন। ষ্টোর থেকে ওয়ার্ডে পাঠানো ওষুধ রোগীদের মধ্যে বিতরণ না করে কর্মচারীরা বাসায় নিয়ে যায়। তা পরে বিক্রি করে দেয়। প্রতিটি ওয়ার্ডের ষ্টাফ নার্সরাও এ চক্রের সঙ্গে জড়িত। শেফালী আক্তার কয়েক বছর আগে ওষুধ পাচারের অভিযোগে র‌্যাবের হাতেও আটক হয়েছিল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ