Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শর্তহীনভাবে অপ্রর্দশিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ ঋণ তহবিল গঠন ও নিবন্ধন ব্যয় কমানোর দাবি

রিহ্যাবের বাজেট প্রস্তাব

| প্রকাশের সময় : ১৪ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : আসন্ন ২০১৭-২০১৮ জাতীয় বাজেটে আবাসন খাতের জন্য ২০ হাজার কোটির রি-ফাইন্যান্সিং ব্যবস্থা চালু ও অর্থ পাচাররোধে শর্তহীনভাবে অপ্রর্দশিত অর্থ ফ্ল্যাট ও প্লট ক্রয়ে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। একই সঙ্গে ফ্ল্যাট ও প্লটের নিবন্ধন ব্যয় কমানোর দাবি জানানো হয়। গতকাল রাজধানীর সিরডাপ মিলায়নতনে এক সংবাদ সম্মেলনে রিহ্যাবের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট লিয়াকত আলী ভ‚ইয়া এই আবেদন জানান। এ সময় রিহ্যাবের প্রেস এ্যান্ড মিডিয়া স্ট্যান্ডিং কমিটির কো-চেয়ারম্যান কামাল মাহমুদ, রিহ্যাব পরিচালক মো. জহির আহমেদ, প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন সিকদার, নাইমুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।
রিহ্যাব ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট বলেন, জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ১৫ শতাংশ অবদান রাখছে গৃহায়ন শিল্প খাত। প্রকৌশলী ও স্থপতিসহ দেশের প্রায় ৩৫ হাজার উচ্চশিক্ষিত লোকসহ ৩৫ লাখ শ্রমিক-কর্মচারীর কর্মসংস্থান হয়েছে গৃহায়ন শিল্পে। কিন্তু ২০১০ সাল থেকে আবাসন শিল্প নানামুখী প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন। বিগত সময়ে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা, জমির উচ্চমূল্য, জমির অপ্রতুলতা, শেয়ারবাজার ধস, নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধির কারণে এই খাতে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। উদীয়মান এই খাতে নানা করারোপ, ও সরকারের নীতি সহায়তার অভাবে ক্রমেই দেশের আবাসনখাত মারাত্মক ঝুঁকির মূখে পতিত হয়েছে। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এই খাতের সংকট উত্তরণ সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, ২০০৮-২০০৯ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের আওতায় সীমিত আয়ের মানুষের ফ্ল্যাট কেনার জন্য সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ঋণ প্রদান কার্যক্রম চালু ছিল। হঠাৎ করে এই ঋণ প্রদান বন্ধ করায় আবাসন খাত সংকটে পড়ে। সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ৩০-৩৫ বছরের কিস্তিতে ঋণ প্রদান কার্যক্রম চালু করা খুবই জরুরি। তাই আসন্ন ২০১৭-১৮ অর্থ বাজেটে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ২০ হাজার কোটি টাকার রি-ফাইন্যান্সিং ব্যবস্থা চালু করা প্রয়োজন। যাতে ত্রেতারা সল্প সুদে দীর্ঘ মেয়াদী কিস্তিতে ফ্ল্যাট ও প্লট কিরতে পারেন।
রিহ্যাব ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট বলেন, জিএফআইয়ের তথ্যানুযায়ী- বাংলাদেশ থেকে ২০১৩ সালে ৯৬৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭৬ হাজার ৩৬১ কোটি ৪০ লাখ) টাকা এবং ২০১৪ সালে ৯১১ কোটি ডলার (৭২ হাজার ৮৭২ কোটি টাকা) পাচার হয়েছে। অর্থ পাচাররোধে শর্তহীনভাবে অপ্রর্দশিত অর্থ আবাসন খাতে বিনিয়োগের সুযাগ দেওয়া প্রয়োজন। অপ্রদর্শিত অর্থে ফ্ল্যাট ও জমি কিনলে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা অর্থের উৎস সম্পর্কে প্রশ্ন করতে পারে। আমরা চাই, ঢালাওভাবে প্রশ্ন না করে যাদের সন্দেহ হবে, তাদেরই যেন প্রশ্ন করা হয়।
তিনি আরও বলেন, সার্কভুক্ত দেশগুলোতে নিবন্ধন ব্যয় ৪ থেকে ৭ শতাংশ। বাংলাদেশে নিবন্ধন ব্যয় ১৪ শতাংশ। উচ্চ নিবন্ধন ব্যয়ের কারণে অপ্রর্দশিত টাকার পরিমাণ বাড়ছে। আমরা নিবন্ধন ব্যয় ৭ শতাংশ নির্ধারণের দাবি জানাচ্ছি। এছাড়া নতুন ভ্যাট আইনে এই শিল্পের প্রধান কাঁচামাল এমএম রডের উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট কার্যকর করতে যাচ্ছে সরকার। এতে নির্মাণ খরচ বেড়ে যাবে।  আবাসন শিল্পের বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখে মূল্য সংযোজন কর দেড় শতাংশ নির্ধারণ ও নতুনভাবে মূল্য সংযোজন কর আরোপ না করার আবেদন জানাচ্ছি।
লিয়াকত আলী ভ‚ইয়া বলেন, বর্তমানে ডেভেলপারদের আয়কর আবসিক ভবন হলে প্রতি বর্গমিটারে প্রথম শ্রেণির জন্য ১৬০০ টাকা, দ্বিতীয় শ্রেণির জন্য ১৫০০ টাকা ও তৃতীয় শ্রেণির জন্য ৬০০ টাকা এবং অনাবাসিকের ক্ষেত্রে প্রতি বর্গমিটারে প্রথম শ্রেণির জন্য ৬৫০০ টাকা, দ্বিতীয় শ্রেণির জন্য ৫০০০ টাকা ও তৃতীয় শ্রেণির জন্য ১৬০০ টাকা হারে পরিশোধের পরও তাদের প্রতিষ্ঠানের স্ব-স্ব ব্যালেন্স সিটের মুনাফার জন্য চ‚ড়ান্ত কর দায়মুক্তি না থাকায় হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। এ অবস্থায় প্রতি বর্গমিটার আবাসিক ভবনের ক্ষেত্রে প্রথম শ্রেণির জন্য ৫০০ টাকা, দ্বিতীয় শ্রেণির জন্য ৪৫০ টাকা, তৃতীয় শ্রেণির জন্য ৩০০ টাকা এবং অনাবাসিক ভবনের ক্ষেত্রে প্রথম শ্রেণির জন্য ১০০০ টাকা, দ্বিতীয় শ্রেণির জন্য ৮০০ টাকা, তৃতীয় শ্রেণির জন্য ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা দরকার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ