পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : ব্যাংকের উচ্চ সুদহার, নতুন জমি সংকট, নির্মাণসামগ্রীর উচ্চমূল্য, নতুন গ্যাস সংযোগ সমস্যাসহ নানাবিধ প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন দেশের সম্ভাবনাময় আবাসন শিল্প। একই সঙ্গে অর্থনৈতিক মন্দা, জমির দাম বৃদ্ধি ও জমির অপ্রতুলতা গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগপ্রাপ্তিতে স্থগিতাদেশে এ খাত স্থবির হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে শেয়ারবাজার ধসের কারণে এ খাতে মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। আর এসব কারণে আবাসন খাতে বিক্রি কমেছে ৮০ শতাংশ। উদ্যোক্তাদের নতুন প্রকল্প গ্রহণের হার ৯০ শতাংশ কমেছে। আর তাই বিনাশর্তে আবাসন খাতে ১০ বছর অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের দাবি জানিয়েছে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)।
গতকাল রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়। আগামী ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে বিভিন্ন দাবি ও প্রস্তাব তুলে ধরতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে আবাসন ব্যবসায়ীদের এই সংগঠন। সংবাদ সম্মেলনে দাবিগুলো তুলে ধরেন রিহ্যাবের সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন। সংগঠনের নেতারা বলেন, সরকারের নীতি-সহায়তার অভাবে উদীয়মান এ খাত মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে।
ওয়াশিংটন ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটির (জিএফআই) এক প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে রিহ্যাব সভাপতি বলেন, আমদানি-রফতানির সময় পণ্যের প্রকৃত মূল্য গোপন করার মাধ্যমেই সব থেকে বেশি অর্থ পাচার করা হয়। বাংলাদেশ থেকে ২০১৩ সালে ৯৬৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার পাচার হয়েছে। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ ৭৬ হাজার ৩৬১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। পাচার হওয়া এই অর্থ আগের বছরের তুলনায় ৩৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেশি। এই অর্থ পাচার রোধে কোনো শর্তছাড়াই আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া প্রয়োজন। এ সুযোগ আগামী ১০ বছরের জন্য দিতে হবে। এই সুযোগ দিলে দেশের বিশাল উন্নয়ন সম্ভব, বলেন রিহ্যাব সভাপতি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে খাতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠবে সেখানে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগ হবে না। বাংলাদেশে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ না দেওয়া হলে অর্থ পাচার হয়ে মালোশিয়ার মতো দেশে চলে যাবে।
ডেভলপারদের আয়কর কমানোর দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে গুলশান, বনানী, বারিধারা ও মতিঝিল অঞ্চলে আবাসিকে প্রতিবর্গমিটারে আয়কার দিতে হয় ১ হাজার ৬শ’ টাকা। যা অনাবাসিকে ৬ হাজার ৫শ’ টাকা। আর ধানমন্ডি, লালমাটিয়া, উত্তরা, ডিওএইচএস, কাওরান বাজার, খুলশী, পাঁচলাইশ আগ্রাবাদ, নাসিরাবাদ অঞ্চলে আবাসিকে আয়কর দিতে হয় দেড় হাজার টাকা এবং অনাবাসিকে ৫ হাজার টাকা। এছাড়া বাকি অঞ্চলে আবাসিকে ৬শ’ টাকা এবং অনাবাসিকে ১ হাজার ৬শ’ টাকা আয়কর দিতে হয়। আগে এই ব্যয় ছিল মাত্র ৩শ’ টাকা করে। এভাবে ব্যয় বাড়ার কারণে আবাসন খাত নতুন করে সংকটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তাই রিহ্যাব মনে করে গুলশান, বনানী, বারিধারা ও মতিঝিল অঞ্চলে আবাসিকে প্রতিবর্গমিটারে আয়কার ৫শ’ টাকা এবং অনাবাসিকে ১ হাজার টাকা করা উচিত। আর ধানমন্ডি, লালমাটিয়া, উত্তরা, ডিওএইচএস, কাওরান বাজার, খুলশী, পাঁচলাইশ আগ্রাবাদ, নাসিরাবাদ অঞ্চলে আবাসিকে আয়কর সাড়ে চারশ’ টাকা এবং অনাবাসিকে ৮ টাকা করা উচিত। এছাড়া বাকি অঞ্চলে আবাসিকে ৩শ’ টাকা এবং অনাবাসিকে ৫শ’ টাকা নির্ধারণ করা উচিত, বলেন রিহ্যাব সভাপতি।
স্বল্প ও মধ্যবিত্ত আয়ের জনসাধারণের জন্য হাউজিং লোন নামে ২০ হাজার কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল গঠনের দাবিও জানান আলমগীর সামসুল আলামিন। রেজিস্ট্রেশন ব্যয় বেশি হওয়ার কারণে অপ্রদর্শিত টাকার পরিমাণ বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত ব্যয় ১৪ শতাংশ। অন্যান্য সার্কভূক্ত দেশগুলোতে রেজিস্ট্রেশন ব্যয় ৪ থেকে ৭ শতাংশের মধ্যে। তাই দেশে অপ্রদর্শিত টাকার পরিমাণ কমাতে রেজিস্ট্রেশন ব্যয় কমিয়ে ৪ শতাংশ করা জরুরি। একই সঙ্গে দ্বিতীয়বার ফ্ল্যাট বা প্লট ক্রয়-বিক্রয় ব্যবস্থা চালু করা, অর্থাৎ সেকেন্ডারি বাজার চালু করারও দাবি জানিয়েছে রিহ্যাব।
আগামী অর্থবছরের বাজেটের জন্য রিহ্যাবের অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে- গেইন ট্যাক্স ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪ শতাংশ করা, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ৩০-৩৫ বছর মেয়াদে দীর্ঘমেয়াদী রি-ফাইন্যান্সিং চালুকরা, মূল্য সংযোজন কর কমানো, শহর এলাকায় ৫ বছর এবং শহরের বাহিরে ১০ বছর কর অবকাশ দেওয়া এবং আবাসন শিল্পে অন্যান্য দেশের মত শিল্প ঋণসহ শিল্প সুবিধা চালু করা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, রিহ্যাব’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রবিউল হক, প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট লিয়াকত আলী ভূইয়া, দ্বিতীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. আনোয়ারুজ্জামান, ভাইস প্রেসিডেন্ট (এডমিন) মো. ওয়াহিদুজ্জামান, ভাইস প্রেসিডেন্ট (ফিনান্স) প্রকৌশলী সরদার মো. আমিন, ডিরেক্টর ড. এন জোহা প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।